প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
কসবা গণধর্ষণ কান্ড সামনে আসার পরেই এই রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে যে মহিলাদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই, তা আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, যেভাবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক প্রাক্তন নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এবং সেই মনজিৎ মিশ্র গভর্নিং বডির সুপারিশে কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে চাকরি করতেন বলে খবর এসেছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে, সেই গভর্নিং বডির ভূমিকা নিয়ে। যে গভর্নিং বডির মাথায় রয়েছেন তৃণমূলের বর্ষিয়ান বিধায়ক অশোক দেব। ইতিমধ্যেই মনোজিত মিশ্র সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একজন নিরাপত্তারক্ষী কেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সব থেকে বড় প্রশ্ন যে, এই মনজিত মিশ্রের এত দাদাগিরি হলো কেন? কে তাকে এত প্রশ্রয় দিলো? আর এই প্রশ্ন যখন উঠছে, ঠিক তখনই বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

বলা বাহুল্য, বর্তমানে এই কসবা গণধর্ষণ কান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত ব্যাকফুটে রয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক প্রাক্তন নেতার যোগ থাকার কারণে আরও বেশি করে চাপে পড়ে গিয়েছে ঘাসফুল শিবির। সব থেকে বেশি প্রশ্ন উঠছে যে, এই মনোজিৎ মিশ্রকে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কলেজে নিযুক্ত করা গভর্নিং বডির ভূমিকা নিয়ে। আর যারা তাকে চাকরি দিয়েছেন, তারাও এই ষড়যন্ত্রে জড়িত। তাই তাদের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহ ভাজনদের হেফাজতে নেওয়ার দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।

এদিন এই প্রসঙ্গে সুকান্তবাবু বলেন, “ঘটনার তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। এখন জানা যাচ্ছে, মনোজিৎ আগেও এরকম ঘটনা ঘটিয়েছে। থানায় তার বিরুদ্ধে চারটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এমন একজনকে কারা কলেজের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে চাকরি দিয়েছেন? যারা চাকরি দিয়েছেন, তারাও এই ষড়যন্ত্রের জড়িত।” শুধু এখানেই থেমে থাকেননি সুকান্তবাবু। একধাপ এগিয়ে তিনি আরও বড় মন্তব্য করেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “কলেজের গভর্নিং বডিতে যারা রয়েছেন এবং যাদের সিদ্ধান্তে মনোজিৎকে কলেজের অস্থায়ী কর্মী করা হয়েছিল, তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহ ভাজনদের হেফাজতে নেওয়া উচিত।”

আর বিজেপির রাজ্য সভাপতির এমন বক্তব্যের পরেই অস্বস্তি যে দ্বিগুণ হবে তৃণমূলের মধ্যে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এই কলেজের গভর্নিং বডির মাথায় রয়েছেন তৃণমূলের অত্যন্ত বর্ষীয়ান বিধায়ক অশোক দেব। যিনি আবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মানুষ বলেই পরিচিত। ফলে সুকান্তবাবু এই কথার মধ্যে দিয়ে কি তৃণমূলকেই চরম সমস্যার মুখে ফেলে দিলেন না? কারন তিনি বললেন যে, যারা মনোজিৎকে চাকরি দিয়েছিল, তাদেরকে জেরা করে সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নেওয়া উচিত। তাহলে তো সেক্ষেত্রে গভর্নিং বডির ওপরেই প্রধান দায় বর্তায়। আর সেই অনুযায়ী যদি পুলিশ বা প্রশাসন পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে তো শুধু গভর্নিং বডিতে যারা আছেন, তারা নয়, সুতোটা অনেক দূর পর্যন্ত যাবে। আর তাতে সঠিক তদন্ত হলে ছটফটানি শুরু হয়ে যাবে নবান্নের বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।