প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বাংলা রাজনৈতিক জগতের কাছে বেশ পরিচিত রাজ্য ও রাজ্যপালের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। সাম্প্রতিককালে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্যপালকে বিভিন্ন সময় বিরোধে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। আর এবার রাজ্যপাল মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্যে ব্যবহার করতে না দেওয়ার জন্য। বহুদিন ধরেই কেন্দ্রের বেশ কিছু প্রকল্প রাজ্যে ব্যবহার হয়না। রাজ্যের যুক্তি, কেন্দ্রের প্রকল্পের থেকে বহুগুণে ভালো প্রকল্প রাজ্যে ইতিমধ্যেই চালু আছে। আর তাই নিয়েই এবার রাজ্যপাল মুখ খুললেন রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা সুবিধা থেকে বাংলার কৃষকদের বঞ্চিত করার অভিযোগে রাজ্য প্রশাসনকে বিঁধলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এই নিয়ে রাজ্যপাল পরপর দুটি টুইট করেন বুধবার। টুইটের মাধ্যমে তিনি মন্তব্য করেছেন, “প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা প্রত্যাহার করে কৃষকদের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা এই সুবিধা পাচ্ছেন। এটা অর্থনীতির জন্য খুব খারাপ। অনর্থক রাজনীতি করা ছাড়া আর কিছুই না। কোনও মানুষকে কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করা অনুচিত। সময় এসেছে সিদ্ধান্ত বদলানোর।”

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এই রাজ্যের প্রশাসনের শাসন ব্যর্থতা, দুর্নীতি, আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়া এবং শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কড়া মনোভাব জাহির করেছেন কখনো পত্রবোমা আবার কখনো টুইট যুদ্ধের মাধ্যমে। লকডাউনের সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। যদিও রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে রাজ্যপালকেও কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে প্রতি ক্ষেত্রেই আর তাতেই বিতর্ক আরো দানা বেঁধেছে। শাসকদলের নেতা মন্ত্রীরা বরাবরই রাজ্যপাল ধনকরকে বিজেপির প্রতিনিধি বলে অভিহিত করেছেন। যদিও তাতে বিন্দুমাত্র কান না দিয়ে রাজ্যপাল তার কাজ তিনি করেই চলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে কিষান যোজনা প্রকল্প নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এর মন্তব্যের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত নবান্নের তরফ থেকে পাল্টা কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের প্রতি রাজ্যপালের বিভিন্ন অভিযোগ সামনে আসছে। তবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর যেভাবে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে কোণঠাসা করে চলেছেন তা যে যথেষ্ট অস্বস্তিকর তৃণমূলের প্রতি, সেকথা মেনে নিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এর সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের নতুন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হলে তা যে যথেষ্ট ছাপ ফেলবে আগামীদিনের রাজনীতিতে, সে কথা বলাইবাহুল্য।