কর্মীদের চেনেন না সঙ্গে দিনভর শিক্ষকতা! বিজেপি জেলা সভাপতিকে নিয়ে একরাশ প্রশ্ন দলের অন্দরেই উত্তরবঙ্গ রাজ্য December 8, 2019 গত লোকসভা নির্বাচন থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির কাছে অত্যন্ত শক্তিশালী সাংগঠনিক জেলা হিসেবে পরিচিত হয়েছে। কেননা অতীতে এই জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস তাদের শক্ত-সামর্থ্য ভিত গড়ে তুললেও গত লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর তারপর থেকেই এই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় উত্থান ঘটতে শুরু করেছে পদ্মফুল শিবিরের। সম্প্রতি সারা রাজ্য জুড়ে বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। জল্পনা ছড়িয়েছিল, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি পদ থেকে শুভেন্দু সরকারকে সরিয়ে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। অবশেষে সেই জল্পনায় শীলমোহর পড়ল। শুক্রবার শুভেন্দু সরকারকে সরিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি সভাপতি করা হলেও বলে পরিচিত সুকান্ত মজুমদারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বিনয় বর্মনকে। কিন্তু যে বিনয় বর্মনকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি করল বিজেপি নেতৃত্ব, সেই বিনয়বাবু বিরোধী দলের কাছে তো দূর অস্ত, নিজের দলের অনেকের সাথেও ঠিকমত পরিচিত নন বলে দাবি একাংশের। ফলে সেদিক থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির কাছে সেফসিট হলেও বিনয়বাবুর নেতৃত্বে এখানে বিজেপি কতটা সুচারুভাবে পথ চলতে পারবে! তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। জানা গেছে, বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের অনুগামী বলে পরিচিত বিনয় বর্মনের বাড়ি বালুরঘাট শহরের খাদিমপুর এলাকায়। তিনি কবিতীর্থ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তবে জেলা সভাপতি পাওয়ার পরও শিক্ষকতা ছাড়তে চাইছে না বিনয় বর্মন। বরঞ্চ দু বছর চাকরি থাকায় শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সংগঠনের কাজ চালাবেন বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার নবনিযুক্ত বিজেপি সভাপতি। যা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে জল্পনা। একাংশ বলছেন, যখন বিজেপি 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করছে, তখন তাকে গুরুত্বপূর্ণ জেলার দায়িত্ব দেওয়া সত্ত্বেও, তিনি একাধারে শিক্ষক অন্যদিকে সংগঠনের দায়িত্ব কীভাবে সামলাবেন! কেননা যদি তাকে শিক্ষকতা সামলাতে হয়, তাহলে যখন তখন তিনি সংগঠনের কাজে দৌড়োতে পারবেন না। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তাই রাজ্যের ক্ষমতার দখলের টার্গেট না বিজেপি বিনয়বাবুকে নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ছয়টি আসন দখল করতে পারবে কিনা! তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিনয় বর্মন এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি সেইভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা রাজনীতিতে পরিচিত মুখ নন। ফলে বিজেপি তার নেতৃত্বে তৃণমূলকে চাপে ফেলতে কতটা সক্ষম হয়, সেদিকেও নজর রয়েছে সকলের। যদিও বা এদিন এই প্রসঙ্গে নবনিযুক্ত বিজেপির জেলা সভাপতি বিনয় বর্মন নিজেই মুখ খুলেছেন। এদিন তিনি বলেন, “আমি শিক্ষকতা চালু রেখে সভাপতিত্ব করতে চাইছি। অনেক ছুটি রয়েছে। সেগুলো তো পাবো। নেতৃত্ব দিতে কোনো অসুবিধা হবে না। আর দুই বছর চাকরি আছে। তাই চাকরি আর ছাড়ব না। জেলায় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করাই এখন মূল লক্ষ্য। দ্রুত সংগঠনের কাজ শুরু করে দেব।” তবে এই ব্যাপারে কি বলছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির বিদায়ী সভাপতি শুভেন্দু সরকার! এইভাবে কি সংগঠনকে শক্তিশালী করা যাবে? এদিন এই প্রসঙ্গে শুভেন্দুবাবু বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়া হলেও রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে বিনয়বাবুকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি সাংগঠনিক ব্যক্তি। আমরা অবশ্যই তাকে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব। তার যাতে নেতৃত্ব দিতে কোনো অসুবিধে না হয়, সেজন্য সব সময় পাশে থাকব।” তবে বিদায়ী জেলা সভাপতি যে কথাই বলুন না কেন, বর্তমান সভাপতি যদি সংগঠনের কাজে ঠিক মত সময় না দেন, তাহলে যে দল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কার্যত অস্তিত্ব সঙ্কটের দিকে এগিয়ে যাবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় প্রত্যেকেই। এখন বিজেপির সংগঠনকে কতটা সুচারুভাবে চালাতে পারেন বিনয় বর্মন! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। এমনিতেই বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে তীব্র ডামাডোল চলছে রাজ্যজুড়ে! বেশিরভাগ জায়গাতেই চলছে ‘টাকার খেলা’ বলে অভিযোগ করছেন বিজেপি কর্মীরা! তবে, বিনয়বাবুর স্বচ্ছতা নিয়ে কারোর মনেই কোনো প্রশ্ন নেই। তবে প্রশ্নটা অন্য জায়গায় – লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর, বিধানসভা নির্বাচনে সামান্য ঢিলেমিও দেবে না তৃণমূল। এত কিছু প্রতিবন্ধকতা সামলে সেই লড়াই কি জিততে পারবেন তিনি? আপনার মতামত জানান -