প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে হাইকোর্ট, বিভিন্ন সময় আদালতের দরজায় বিভিন্ন বিষয়ে ধাক্কা খাচ্ছে রাজ্য। ২৬ হাজার চাকরি থেকে শুরু করে মহার্ঘ ভাতা, রাজ্যের বিরুদ্ধে একের পর এক সিদ্ধান্ত রীতিমত নবান্ন এবং তৃণমূল দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই তার আগে আদালতের কাছে যাতে আর মুখ না পোড়ে, যাতে আদালত যে সমস্ত নির্দেশ দিয়েছে, তা যাতে মেনে চলা হয়, তার জন্য এবার বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই যে খবর সামনে এসেছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। যেখানে এতদিন আদালতের নির্দেশে যে সমস্ত সরকারি স্তরে কমিটি গঠিত হয়েছে, সেই কমিটি ঠিকমত কাজ করছে কিনা, তা নিয়েই এবার তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে নবান্নের পক্ষ থেকে।
বলা বাহুল্য, ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রত্যেকটি দপ্তরের সচিবের কাছে নবান্নের কর্মী এবং প্রশাসনিক সংস্কার দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে। যেখানে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে যে, এতদিন সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তাই সেই কমিটি ঠিকমত কাজ করছে কিনা এবং সেই কমিটিতে কারা কারা রয়েছেন, কিভাবে কাজ হচ্ছে, সেই সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পাঠাতে হবে। কিন্তু হঠাৎ করে নবান্নের এই উদ্যোগ কেন? জানা গিয়েছে, কমিটিতে যারা রয়েছেন, তাদের পরিচয় সহ বিস্তারিত তালিকাও দিতে বলা হয়েছে প্রত্যেকটি দপ্তরকে। অনেকে বলছেন, আদালতের পক্ষ থেকে যে সমস্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে সেই সমস্ত কমিটি যদি আবার ঠিক মত কাজ না করতে পারে, তাহলে রাজ্যের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি রাজ্য এই সমস্ত ব্যাপারে আবার আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে, তাহলে তারা চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ে যাবে। তাই সেক্ষেত্রে যাতে কোথাও যাতে বেনিয়ম না হয় এবং সেই কমিটি নিয়ে যাতে কোনো অভিযোগ না ওঠে, তার জন্যেই রাজ্যের পক্ষ থেকে এই তৎপরতা বলেই মনে করছেন একাংশ।
ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে একটি প্রতিক্রিয়াও সামনে এসেছে। কেন হঠাৎ করে নবান্ন এই পদক্ষেপ নিচ্ছে? যারা আদালতের নির্দেশে কমিটিতে রয়েছেন, কেন তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হচ্ছে? এর পেছনে কি অন্য কোনো কারণ রয়েছে? এদিন এই প্রসঙ্গে নবান্নের এক সরকারি কর্তা বলেন, “প্রতিটি দপ্তরের একাধিক কমিটি রয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট কাজের জন্য এই সমস্ত কমিটি তৈরি হয়। পরে কাজ শেষ হলে অনেক সময় তা ভেঙ্গেও দেওয়া হয়। এসব তথ্য একত্র করে একটি পূর্ণাঙ্গ ভান্ডার গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষা দপ্তর থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যের কমিটি, নারী সুরক্ষা থেকে শুরু করে পরিবহন দপ্তরের জন্য একাধিক কমিটি গঠন হয়েছে। আর সেই সমস্ত কমিটিতে অনেকেই রয়েছেন। তবে আদালতের নির্দেশে যে সমস্ত কমিটি গঠন হয়েছে, পরবর্তীতে যদি কেউ প্রশ্ন করে, তাহলে আদালতের সামনে সেই কমিটি নিয়ে জবাব দিতে হবে রাজ্যকে। তাই যাতে সেক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখা যায় এবং সঠিক জবাব আদালতকে দিতে পারে রাজ্য, তার জন্যই সমস্ত কমিটির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখন থেকেই নিজেদের কাছে জমা করে রাখার মত পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে নবান্ন। যা অত্যন্ত সাহসী এবং কৌশলী পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।