প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্য সরকারের ওপর যে বিন্দুমাত্র ভরসা করা যায় না, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যোগ্য চাকরিহারা ব্যক্তিদের কাছে। প্রথমে সরকার বলেছিল, তাদের বিষয়টা ভাবনা চিন্তা করা হবে। আর এবার রিভিউ পিটিশন করার পাশাপাশি আবার তাদের আদালতের নির্দেশ মেনে পরীক্ষায় বসতে হবে বলে আজ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে। আর পরীক্ষায় বসবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন যোগ্য চাকরি হারা ব্যক্তিরা। আজ শিয়ালদহ থেকে নবান্ন পর্যন্ত একটি অর্ধনগ্ন মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন তারা। আর সেই মিছিলের আগেই শিয়ালদহ চত্বরে ২০১৬ সালের চাকরি-হারা কোনো ব্যক্তিকে দেখলেই রীতিমত নখ-দাঁত বের করে এই রাজ্যের পুলিশ গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিলো।

জানা গিয়েছে, এদিন সকাল থেকেই পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ হয়েছিল শিয়ালদহ স্টেশন সংলগ্ন এলাকা। যেখানে চাকরি হারাদের একটি মিছিল শুরু হওয়ার কথা। যে মিছিল নবান্ন পর্যন্ত যাবে বলে গতকালই জানিয়ে দিয়েছিলেন চাকরিহারা ব্যক্তিরা। এমনকি তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান বলেও দাবি জানিয়েছেন। আর নবান্ন পর্যন্ত যাতে মিছিল যেতে না পারে, তার জন্য শিয়ালদহ সেই চাকরিহারারা জমায়েত আগেই পুলিশের পক্ষ থেকে রীতিমত বলপূর্বক একের পর এক গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। যাকে তুলোধোনা করছে বিরোধীরা।

বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্যের পুলিশ ঠিক কতটা নির্লজ্জ, কতটা অপদার্থ হতে পারে, তা এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। রাজ্যের সরকারের তো কোনো ভয় নেই, তারা নাকি জবাবদিহি দেওয়ার জন্য তৈরি! তাহলে কেন মুখ্যমন্ত্রী এই সমস্ত যোগ্য চাকরিহারা ব্যক্তিরা, যারা আন্দোলন করছেন, যারা আজকে অর্ধনগ্ন মিছিলের ডাক দিয়েছেন, শুধুমাত্র তার সঙ্গে কথা বলার জন্য, সেখানে তিনি কথা বলছেন না কেন? কেন পুলিশ দিয়ে তাদের সেই আন্দোলনকেই বাধা দেওয়া হচ্ছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি আন্দোলন থেকে উঠে এসেছেন। তাহলে এইভাবে যোগ্য চাকরিহারা ব্যক্তিদের আন্দোলনের টুটি চিপে ধরে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে আর এই ফ্যাসিস্ট আচরণের কারণ কি, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার এই চাকরিহারাদের বিষয় নিয়ে অত্যন্ত বড় ফাদের মুখে পড়েছেন। তারা ভেবেছিল যে, সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন করলে হয়ত নির্দেশ বদলে যাবে। কিন্তু না, আদালত যে চুরিটা ধরে ফেলেছে, দুর্নীতিটা ধরে ফেলেছে, তা স্পষ্ট সকলের কাছেই। তাই এবার আবার নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করতে হচ্ছে রাজ্যকে। আর যারা যোগ্য, যারা চাকরি দিয়ে সঠিকভাবে মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছিলেন, তারা আবার কেন পরীক্ষা দেবেন, সেই প্রশ্ন প্রাসঙ্গিকভাবেই তারা তুলছেন। আর সেই প্রশ্নের মুখে পড়ে রীতিমত জেরবার হয়ে কোনো কিছু বলতে পারবেন না জেনেই সকাল থেকেই চাকরি হারাদের আন্দোলনকে বন্ধ করতে শুরু হয়ে গেল পুলিশের গা জোয়ারি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং নবান্নের ভয়ের বহিঃপ্রকাশেই পুলিশের এই অতি সক্রিয়তা বলে এই দাবি বিশেষজ্ঞদের।