প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- তারা নতুন করে আর চাকরি পরীক্ষায় বসবেন না। কারণ তারা যোগ্য। সেই কারণে গতকালই যোগ্য চাকরিহারা ব্যক্তিরা জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, আজ তারা শিয়ালদহ থেকে অর্ধনগ্ন মিছিল করবেন। কিন্তু সকাল থেকেই পুলিশের গা জোয়ারি ছিল চোখে পড়ার মত। যেখানেই তারা চাকরিহারা ব্যক্তিদের জমায়েত করতে দেখছেন, সেখানেই তাদের গ্রেপ্তার করে তারা যাতে মিছিল আয়োজন করতে না পারে, তার জন্য সব রকম চেষ্টা করেছে পুলিশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশের সেই চেষ্টা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী যে, সেন্ট্রাল পার্কের কাছে তারা অবস্থানে বসেছিলেন, সেখানেই অর্ধনগ্ন অবস্থায় প্রতিবাদ শুরু করেন চাকরিহারারা। আর সেই প্রতিবাদকে আটকাতে গিয়ে চরম ভুল সিদ্ধান্ত নিলো এই রাজ্যের পুলিশ।
জানা গিয়েছে, এদিন সকাল থেকেই পুলিশের সক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মত। ধর্মতলা থেকে শুরু করে শিয়ালদহ চত্বর, যেখানেই তারা চাকরিহারা ব্যক্তিদের জমায়েত করতে দেখছেন, সেখানেই তাদের গ্রেফতার করে প্রিজন ভ্যানে তুলছেন। যার ফলে এই রাজ্যে কি সামান্য আন্দোলনটুকু করার ক্ষমতা এই চাকরিহারা ব্যক্তিদের নেই? যে সরকারের দুর্নীতির কারণে তাদের চাকরি চলে গিয়েছে, তারা তো নিজেরা যন্ত্রণা বুঝছেন। তাদের সামান্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন করার ক্ষমতা কেন থাকবে না? কেন এই রাজ্যের পুলিশ এতটা নিচে নামবে, সেই প্রশ্ন রয়েছে জনসাধারণের মধ্যে। তবে এবার পুলিশকে পাল্টা জব্দ করে নিজেদের অবস্থান যেখানে চলছে, সেখানেই অর্ধনগ্ন অবস্থায় নিজেদের প্রতিবাদ জানালেন চাকরিহারা ব্যক্তিরা। কিন্তু সেখানেও শুরু হয়ে গেল পুলিশের জুলুম।
এদিন সব জায়গাতে বাধা পেয়ে সেন্ট্রাল পার্কে নিজেদের অবস্থান আন্দোলনের সামনেই প্রতিবাদ শুরু করেন চাকরি-হারা শিক্ষকরা। যেখানে অর্ধনগ্ন অবস্থায় তারা প্রতিবাদ শুরু করলেই পুলিশ এসে নিজেদের জোর খাটাতে শুরু করে। একের পর এক চাকরিহারা ব্যক্তিকে নিজেদের গাড়িতে তুলতে শুরু করে পুলিশ। তবে আদালতের নির্দেশই তো তারা এখানে আন্দোলন করছেন, সেখানেই যখন তারা তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন, তখন সব জায়গাতেই পুলিশ ন্যূনতম আন্দোলন করার অধিকারটুকু কেড়ে নিচ্ছে কেন? এটা কি তাদের বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পড়ছে না?
যদিও বা এই ব্যাপারে এক অন্য যুক্তি দিয়েছেন বিধান নগর পুলিশের ডিসি অনীশ সরকার। তিনি বলেন, “আদালতের নির্দেশে তারা অবস্থান করতেই পারেন। কিন্তু সর্বসমক্ষে, পাবলিক প্লেসে এভাবে অর্ধনগ্ন অবস্থায় আন্দোলন মেনে নেবে না পুলিশ।” আর এখানেই সেই পুলিশকর্তার উদ্দেশ্যে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন যে, সেই পুলিশকর্তার চাকরি যদি আজকে সরকারের কোনো দুর্নীতির কারণে চলে যায়, তাহলে তিনি কি করবেন? তিনি তার পরিবারের কথা ভেবে চুপচাপ বসে থাকতে পারবেন তো?যে শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে একসময় পুলিশের চাকরি পেয়েছেন এই আধিকারিক, এখন তিনি “এই আন্দোলন মেনে নেওয়া যাবে না, সেই আন্দোলন মেনে নেওয়া যাবে না” বলে বড় বড় কথা বলছেন, তার একটাই কারণ, কারণ দিনের শেষে তার বেতনটা ঠিকঠাক ঢুকছে।
আর আজকে যারা যোগ্য হয়েও চাকরিটা হারিয়েছেন, তারা বুঝছেন জীবন যন্ত্রণাটা কি। সেই কারণে নিজেদের সব হারিয়ে আথ কোনো উপায় এবং পথ না দেখেই আজকে এইভাবে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন এই সমস্ত চাকরিহারা ব্যক্তিরা। যদি ক্ষমতা থাকে, তাহলে সেই পুলিশকর্তার উচিত, নবান্নের ১৪ তলায় গিয়ে এটুকু বলা যে, শিক্ষকদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে, অন্তত তাদের সঙ্গে আর যাই হোক, এভাবে বলপূর্বক বাধা দিয়ে আর বেশি অন্যায় তিনি করতে পারবেন না। কিন্তু সেই কথা বলার মত মেরুদন্ড এই সমস্ত পুলিশকর্তাদের নেই বলেই তারা আন্দোলনরত চাকরি হারাদের ওপর এই ধরনের নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন বলেই দাবি বিরোধীদের।