প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- যাদের চাকরি চলে গিয়েছে, তারা জানে কষ্টটা। তাই এবার আর সহ্য করতে না পেরে দেওয়ালে যখন পিঠ ঠেকে গিয়েছে, যখন এই রাজ্যের সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তাদের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে বলে অভিযোগ উঠছে, ঠিক তখনই চরম সিদ্ধান্ত নিলেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাত পোহালেই তারা নিতে চলেছেন বড় পদক্ষেপ। যে পদক্ষেপ ইদানিংকালে তো অনেক দূরের কথা, অতীতেও কখনও হয়েছে কিনা, তা মনে করতে পারছেন না রাজ্যের সাধারন মানুষ। আর চাকরিহারাদের এই পদক্ষেপ সবথেকে বড় লজ্জায় এবং ধাক্কার কারণ হবে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং শাসক দলের জন্য বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কি সেই পদক্ষেপ?
জানা গিয়েছে, এদিন চাকরি হারাদের পক্ষ থেকে একটি সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। আর সেখানেই তারা জানিয়ে দেন, আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার তারা শিয়ালদহ থেকে একটি অর্ধনগ্ন মহা মিছিলের ডাক দিচ্ছেন। যা সাম্প্রতিককালে অত্যন্ত বেনজির পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন সকলে। শুধু তাই নয়, যতক্ষণ না তাদের বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রী শুনছেন এবং নবান্নে দেখা করছেন, ততক্ষণ তারা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন চাকরিহারা ব্যক্তিরা। এমনকি রাজ্যের পক্ষ থেকে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করার কথা বলা হলেও তারা আর কোনো মতেই পরীক্ষায় বসবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।
একাংশের বক্তব্য, চাকরি হারাদের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত মারাত্মক পদক্ষেপ। এর ফলে গোটা রাজ্যবাসী লজ্জিত যে, যারা যোগ্য, তাদের এইরকম পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে শুধুমাত্র সরকারের খামখেয়ালী মনোভাবের জন্য। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে আসার পর চাকরিহারাদের অনেক আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর বিকল্প কোনো উপায় না দেখে তিনি নতুন করে নোটিফিকেশন জারি করে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতে হবে বলে নানা কথা বলছেন। কিন্তু যারা একবার পরিশ্রম করে চাকরির পরীক্ষায় বসে উত্তীর্ণ হয়েছেন, তারা আবার কিভাবে পরীক্ষা দেবেন? তাদের কি আর সেই মানসিকতা আছে, এই প্রশ্নটা সব মহলেই উঠছে। তাই এবার নিজেদের জীবন, জীবিকার স্বার্থেই এক ভয়ঙ্কর আন্দোলনের শামিল হচ্ছেন চাকরিহারারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরেও কি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর বিন্দুমাত্র সহানুভূতি তৈরি হবে এই চাকরিহারা ব্যক্তিদের জন্য? তারা চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে দেখা করতে। তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী এই ভয়ংকর আন্দোলনের থেকে তাদের বিরতি নেওয়ার কথা জানিয়ে তড়িঘড়ি তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন, নাকি সমাজের সবথেকে উঁচু জায়গায় বসে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকা, যাদের চাকরি চলে গিয়েছে, তাদের অর্ধনগ্ন মহামিছিল দেখতে হবে রাজ্যবাসীকে! যদি এরপরেও মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী এবং এই সরকার চুপচাপ বসে থাকেন, তাহলে আগামী দিন এই সরকারের থেকে লজ্জার রাজ্যবাসীর কাছে আর কিছু হতে পারে না বলেই মনে করছেন বিরোধীরা।