প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
পশ্চিমবঙ্গের বুকে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে তোষণ করার অভিযোগ ওঠে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। বারবার বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, হিন্দুদের অনুষ্ঠানে এবং কর্মসূচিতে পুলিশ একাধিক বিধিনিষেধ জারি করলেও মুসলিমদের কোনো কর্মসূচিতে সেভাবে কোনো বিধিনিষেধ জারি করা হয় না। বরঞ্চ মুসলিমদের অনুষ্ঠানের জন্য অনেক ক্ষেত্রে হিন্দুদের আচার-আচরণ বাদ দেওয়া এবং তাকে কাটছাট করার জন্য বাধ্য করে এই রাজ্যের প্রশাসন বলেই অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। তবে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে উত্তরপ্রদেশের এক প্রশাসনিক কর্তা যে দাপট দেখালেন এবং যেভাবে তিনি হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিমদের জন্যেও একাধিক বিধি নিষেধ জারি করে দিলেন, তাতে সেই প্রশাসনিক কর্তা একেবারে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন। এক্ষেত্রে মহরমের তাজিয়া বের করা নিয়েও তিনি যে নির্দেশিকা জারি করেছেন, তাকে কেন্দ্র করেও রীতিমত টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশ জুড়ে। কি ঘটনা ঘটেছে?
জানা গিয়েছে, সামনেই মহরম রয়েছে এবং কাচড় যাত্রা রয়েছে। সেই উপলক্ষেই উত্তরপ্রদেশের সম্বলের সিইও অনুজ চৌধুরী একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন। যেখানে তিনি জানিয়েছেন যে, এবার মহরম উপলক্ষে কোথাও কোনো গাছ কাটা যাবে না। শুধু তাই নয়, তাজিয়ার ক্ষেত্রেও একাধিক বিধি নিষেধ জারি করেছেন তিনি। যেখানে তাজিয়ার উচ্চতা ১০ ফুটের বেশি হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তার আরও একটি নির্দেশিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যা রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে। যেখানে গাইডলাইনে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এতদিন ধরে যে ব্যক্তি তাজিয়া বের করে আসছিল, এবার তাকেই তাজিয়া বের করতে হবে। যদি তিনি না পারেন, তাহলে অন্য কেউ কোনভাবেই সেই তাজিয়া বের করতে পারবে না। অর্থাৎ এক্ষেত্রে যে নির্দেশিকা দেওয়া হলো, তাতে কিন্তু মুসলিম সমাজ অনেকটাই বিপাকে পড়ে গেলেন এবং প্রশাসনিক কর্তার এই নির্দেশিকা ঘিরে নানা মহলে তৈরি হয়েছে গুঞ্জন।
তবে শুধু মুসলিমদের অনুষ্ঠানে নয়, একইভাবে কাচড় যাত্রায় যে ডিজে বাজবে, তা নির্দিষ্ট ডেসিবলের মাত্রাকে অতিক্রম করে কোনোভাবেই যাতে না বাজে, তার দিকেও নজরদারি চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একাংশ বলছেন, এই সিও অনুজ চৌধুরী এর আগেও বিভিন্ন বার্তা দিয়ে বিভিন্ন নির্দেশিকা জারি করে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন। তবে এবার তিনি মুসলিমদের মহরমের ক্ষেত্রে যে সমস্ত নির্দেশিকা জারি করলেন, তাও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকে বলছেন, এই সমস্ত নির্দেশিকা জারি করার জন্য বুকের পাটা থাকা চাই। সিও অনুজ চৌধুরী নিজের সেই ক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছেন। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, আইনের বাইরে কেউই নয়, সবাই নিজস্ব ধর্ম এবং আচার-আচরণ পালন করবে। কিন্তু কোনোভাবেই প্রকৃতি বা সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে সেই সমস্ত আচার অনুষ্ঠান যে করা যাবে না, তা তার নির্দেশিকার মধ্যে দিয়েই পরিষ্কার। স্বাভাবিকভাবেই প্রশাসনিক কর্তার এই নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত জল কতদূর গড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।