প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গ নাকি এগিয়ে বাংলা! এখানে যে সমস্ত কাজ হয়েছে তা নাকি কোনো রাজ্যে হয় না এবং সেই ক্ষেত্রেই এই “এগিয়ে বাংলা” স্লোগান দিতে দেখা যায় তৃণমূলের নেতাদের। তবে সত্যিই যে বাংলা এগিয়ে দুর্নীতি থেকে শুরু করে অনিয়মের ঘটনায়, সেই দাবি করে বারবার সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা। আর এবার রাজ্যের এক নামী সরকারি হাসপাতালে যে কীর্তি ঘটছে, যেভাবে তা ফাঁস হয়ে গেল, তাতে এগিয়ে বাংলার আরও একটি করুন নমুনা সামনে চলে এলো বলেই দাবি করছেন তারা। কিন্তু কি সেই কীর্তি?

 

জানা গিয়েছে, রাজ্যের নামী সরকারি হাসপাতাল হচ্ছে এন আর এস মেডিকেল কলেজ। আর সেই মেডিকেল কলেজের অডিটোরিয়ামেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে কোচিং ক্লাস। তবে ক্লাসের নাম করে যে ব্যবসা চালাচ্ছেন বেসরকারি সংস্থা, তা ইতিমধ্যেই সামনে চলে এসেছে। যেখানে এই এনআরএস মেডিকেল কলেজের অডিটোরিয়ামে কোচিং ক্লাস করানোর জন্য প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর এখানেই প্রশ্ন যে, একটি সরকারি মেডিকেল কলেজের ভেতরে কি করে একটি বেসরকারি সংস্থা এই কোচিং ক্লাস করাচ্ছে? এর জন্য কি সরকারি স্তরে কোনো অনুমোদন রয়েছে? প্রথম কথা, এরকম কিছু সরকারি মেডিকেল কলেজে হওয়ার কথা নয়। আর দ্বিতীয় কথা, যদিও বা হয়, তথাপি কেন পড়ুয়াদের কাছ থেকে এইভাবে টাকা নিয়ে সেই সরকারি মেডিকেল কলেজে কোনো এক বেসরকারি সংস্থা ক্লাস করাবে? কে তাদের এই অধিকার দিয়েছে?

 

কোথা থেকে তারা এই অনুমোদন পেয়েছেন? কে তাদের একটি সরকারি মেডিকেল কলেজের অডিটোরিয়ামে এইভাবে টাকার বিনিময়ে ক্লাস করানোর অধিকার দিলো? এদিন এই প্রসঙ্গে কোচিং সেন্টারের এক এজেন্ট বলেন, “আমরা থার্ড ইয়ার নিট পিজির জন্য অনুশীলন করাচ্ছি। সেটা আগের বছর আরজিকরে হচ্ছিল। এবার এনআরএসে হচ্ছে। কোনো সময় বাইরেও হয়। স্টুডেন্ট কাউন্সিলিংয়ের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ওরাই বিষয়টা দেখছে।” তবে সত্যিই কি একটি সরকারি মেডিকেল কলেজে এইভাবে কোনো বেসরকারি সংস্থা ক্লাস করাতে পারে? কি বলছে কর্তৃপক্ষ? এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিকর্তা ইন্দ্রজিৎ সাহাকে। তিনি বলেন, “এনআরএসের অধ্যক্ষের কাছে বিষয়টা জানতে চেয়েছি। অধ্যক্ষের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”

 

পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে কি চলে, তা আরজিকরের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপরেও যেভাবে এনআরএসের মত সরকারি মেডিকেল কলেজে বেসরকারি সংস্থার কোচিং ক্লাস চলছে এবং সেখানে যেভাবে পড়ুয়াদের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা নেওয়া হচ্ছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে, এই টাকা কাদের কাছে যাচ্ছে? যদি পুরো টাকাটাই বেসরকারি সংস্থা নিয়ে নেয়, তাহলে প্রথম কথা যে, তাদের অনুমতি কেন দেওয়া হচ্ছে এই সরকারি মেডিকেল কলেজে? আর দ্বিতীয় কথা, যদি এই টাকার ভাগ এই সরকারি মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষকেও দিতে হয়, তাহলে তো সর্ষের মধ্যে বড় ভূত রয়েছে! ফলে একটা বড় মাপের রহস্য কিন্তু ঘনীভূত হচ্ছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। আর তাই গোটা ঘটনায় সঠিক তদন্তের দাবি তুলছে বিরোধীরা।