প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যখন যুদ্ধের আবহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, ঠিক তখনই বেশ কিছু দেশ, যারা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল, সংখ্যায় কম হলেও তখন থেকেই তাদের চিহ্নিত শুরু করতে শুরু করেছিল ভারত। আর এবার তাদেরকে জবাব দিতেই কি কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? যেভাবে ইসলামাবাদ এবং জঙ্গিবাদকে হাতে গোনা কয়েকটি দেশ সমর্থন করেছিল, এবার তাদের মধ্যেই একটি দেশকে পাল্টা জবাব দেওয়ার কৌশল কি বেছে নিলেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী? ইতিমধ্যেই নরেন্দ্র মোদীর একটি বড় পদক্ষেপ ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা। কিন্তু কি সেই পদক্ষেপ?
জানা গিয়েছে, কানাডার আলবার্টায় জি৭ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সেখানেই যোগ দিতে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে কানাডায় যাওয়ার সময় সেই প্রধানমন্ত্রীর বিমান থামতে চলেছে সাইপ্রাসে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, অন্য কোথাও না থেমে কেন তা সাইপ্রাসে থামছে? অনেকেই এর পেছনে অতীতের ইতিহাস খুঁজে বের করছেন। তারা বলছেন, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র হচ্ছে এই সাইপ্রাস। বিগত ১৯৭৪ সালে গ্রিসের সমর্থনে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের পর তুরস্কের সেনাবাহিনী এই সাইপ্রাসে আক্রমণ করে। তারা এই দ্বীপের ৩ শতাংশ অংশ নিজেদের মত করে দখল করে নেয়। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালের আগস্ট মাসে এই দ্বীপের আরও বেশ খানিকটা অংশ দখল করার অভিযোগ ওঠে তুর্কির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। আর তারপর থেকেই সাইপ্রাস দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সাইপ্রাসের সঙ্গে তুরস্কের একটা দূরত্ব রয়েছে। তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেই সাইপ্রাসে বিমান ছাড়ানোর পেছনে তুরস্কের সঙ্গে তাদের তিক্ততার কৌশলকে কাজে লাগিয়ে তুরস্ক যেভাবে পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল, তাতে তাদেরকে জবাব দিতেই সাইপ্রাসের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে তুরস্ককে চাপে রাখার কৌশল নিচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেই মনে করছেন একাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত- পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় তুরস্ক লাগাতার ভাবে পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি এর ফলে ভারতের মানুষের পক্ষ থেকে তুরস্কের প্রতি তীব্র তিক্ততা তৈরি হয়। এমনকি তুরস্কের সমস্ত জিনিস বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের জনসাধারণ। যদিও বা তখন সরকারের পক্ষ থেকে এরকম কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে, তুরস্ককে তারা সহ্য করতে পারছিল না। তাই এবার সুযোগ বুঝে কানাডায় সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার আগে সাইপ্রাসে নিজের বিমান থামিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বড় কোনো পদক্ষেপ নিতে চলেছেন? সাইপ্রাসকে পাশে নিয়ে কি তুরস্কের বিরুদ্ধে তিনি কড়া অ্যাকশনের পরিকল্পনা করছেন?
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কথায় আছে, শত্রু শত্রু আমার বন্ধু। তাই পাকিস্তানকে যারা সমর্থন করে, তারা ভারতের সাথে আবার সাইপ্রাস যেহেতু তুরস্কের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছে এবং তুরস্কের প্রতি তাদের ক্ষোভ রয়েছে, আর তুরস্ক যেহেতু পাকিস্তানকে সহযোগিতা করছে, তাই সেই তুরস্ককে জবাব দিতে সাইপ্রাসের প্রধানমন্ত্রীর এই বিমান থামছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে এর পেছনে শুধুই কূটনৈতিক রহস্য, নাকি স্বাভাবিক নিয়ম রয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে যেহেতু অন্য কোনো জায়গায় না থেমে সাইপ্রাসেই প্রধানমন্ত্রীর বিমান থামছে, তাতে একটা মহল অবশ্য স্পষ্ট মনে করছে যে, এবার শুধু পাকিস্তান নয় পাকিস্তানকে সমর্থন করা তুরস্কও বড় কোনো বিপদে পড়তে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর এই চালে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।