প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এখন কোনো পরিবারের কোনো সভ্য, আদর্শবান লোক রাজনীতিতে যোগ দিলেই অনেকে তাকে বাঁকা চোখে দেখেন। অনেকেই বলেন, শুধুমাত্র কামাই করার জন্যই রাজনীতিতে যোগ দেওয়া। রাজনীতিতে এখন আদর্শ বলে কিছু নেই। কিন্তু সব দলেই তো ভালো, মন্দ আছে। তাই প্রত্যেকেই খারাপ, এমনটা অনেকেই মানতে রাজি নন। তবে এসবের মধ্যেই শাসক দলের সঙ্গে যারা যুক্ত হন, তারা পুরোপুরি শুধুমাত্র কামাইয়ের জন্যই রোজগারের জন্যই সেখানে নাম লেখান। আর বর্তমান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে তো অবশ্যই মানুষ যুক্ত হন, শুধুমাত্র দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে টাকা কামানোর জন্য বলেই অভিযোগ করে বিরোধীরা। আর এসবের মধ্যেই এবার কি সত্যিই রাজনীতি মানেই কামাই, রাজনীতি মানেই রুজি রোজগারের জায়গা? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বাড়িয়ে তৃণমূলেরই হেভিওয়েট বিধায়ক শওকত মোল্লা যে কথা বললেন, তাতে কিন্তু ২৬ এর নির্বাচনের আগে প্রচন্ড চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

বলা বাহুল্য, একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত সমালোচক বলে পরিচিত ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা কাশেম সিদ্দিকী সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাকে রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই ঘটনার পরেই সেই কাশেম সিদ্দিকীকে ঘুরিয়ে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের বিধায়ক শওকত মোল্লা। পাশাপাশি তিনি ভয়ঙ্কর কথা বলে বুঝিয়ে দিলেন, রাজনীতি মানেই রুজি রোজগারের জায়গা। অনেকে বলছেন, এই কাশেম সিদ্দিকী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ফলে হয়ত শওকত মোল্লাদের পাল্লা অনেকটা কমে যাবে। আর সেই কারণেই তিনি এই ধরনের মন্তব্য করে সেই কাশেম সিদ্দিকীকে কথা শুনিয়ে দিলেন। কিন্তু ঠিক কি বলেছেন শওকত মোল্লা?

প্রসঙ্গত, এদিন ভাঙ্গড় ২ নম্বর ব্লকের একটি কর্মীসভায় বক্তব্য রাখেন শওকত মোল্লা। আর সেখানেই তিনি বলেন, “এদের মনে হয় খুব বেশি রুজি রোজগার হচ্ছে না। কাশেম সিদ্দিকী যে কখন কি বলেন, আমি দিদিকে ধন্যবাদ জানাব, যে কাশেম সিদ্দিকী সবথেকে বেশি তৃণমূলের সমালোচক ছিলেন, যে কাশেম সিদ্দিকী সবথেকে বেশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গালিগালাজ করতেন, যে কাশেম সিদ্দিকী তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চোর বলত, আজ তৃণমূল দলে যোগদান করছে। এর একটাই অর্থ, আজ যে সরকার বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দল চালাচ্ছেন, তারা সঠিক দিকেই এগোচ্ছেন।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শওকত মোল্লার এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে দুটো জিনিস উঠে এলো‌। প্রথম কথা, কাসেম সিদ্দিকীর এই যোগদান তিনি ভালো মত মেনে নিতে পারেননি। দ্বিতীয় কথা, তিনি ঘুরিয়ে নিজের নেত্রীকেও এবং দলকেও কথা শুনিয়ে দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন যে, এই কাশেম সিদ্দিকীরা এত সমালোচনা করার পরেও তাদেরকে দলে নেওয়া হয়েছে। আর আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এলো শওকাত মোল্লার কথার মধ্যে দিয়ে যে, কাশেম সিদ্দিকীর রুজি রোজগার ভালো হচ্ছে না। তাই তিনি তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তার মানে তৃণমূল মানেই যে রুজি রোজগার করার জায়গা, তৃণমূল মানেই যে অসৎ পথে ইনকাম করার জায়গা, তা তো এই তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যের মধ্যে দিয়েই আরও জোরালো ভাবে স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠলো। আর ২৬ এর নির্বাচনের আগে এক কাশেম সিদ্দিকীকে দলে পদ দেওয়ার কারণে যেভাবে আর এক সংখ্যালঘু বিধায়ক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেস যথেষ্ট পাঁকে পড়ে গেল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।