প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে তৃণমূল মানেই, জোর যার মুলুক তার। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যে সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে প্রতিবাদীরা এখন কোনো প্রতিবাদ করতে পারবে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেই তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের হুমকির মুখে পড়তে হবে সাধারন মানুষকে। আর পুলিশ মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করবে। কারণ এখানে তৃণমূলের কথাই যেন শেষ কথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তেমনটাই দাবি করে বিরোধীরা। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এবার বিরোধীদের সেই অভিযোগকে সত্যি করেই যেভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় একজন প্রবীণ বাম নেতাকে মারধর করলেন এক তৃণমূল নেত্রী, তার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, সেই তৃণমূল নেত্রী এই সাহস পেলেন কোথা থেকে? এবার কি তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন?
কি ঘটনা ঘটেছে? জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে খড়্গপুরের খরিদা মোড় দিয়ে স্কুটি করে যাচ্ছিলেন প্রাক্তন সিপিএম নেতা তথা বর্তমানে একটি বামপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ৬৬ বছরের বৃদ্ধ অনিল দাস। আর সেই সময় তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলে এবং তার সাঙ্গ পাঙ্গরা সেই বাম নেতাকে ধরে ব্যাপক মারধর করে। এমনকি তার কাছ থেকে হাজার তিনেক টাকা এবং তার মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে প্রাণে বাঁচতে সেই প্রবীণ বাম নেতা একটি রঙের দোকানে আশ্রয় নেন। আর এই ঘটনার পরেই রীতিমত তৃণমূল নেত্রীর দাদাগিরি নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। কেন তৃণমূল নেত্রী এইভাবে একজন বাম নেতার বাইরেও, তিনি তো ৬৬ বছরের বয়স্ক মানুষ, তাকে কেন এইভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় মারধর করলেন? কি দোষ অনিলবাবুর?
৬৬ বছরের বাম নেতা অনিল দাসের বক্তব্য, “বেবি কোলে এই এলাকায় একটার পর একটা অন্যায় করেই চলেছে। আমরা থানায় এসে সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করি। আজ আমি যখন ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন ওরা আগে থেকেই পরিকল্পিতভাবে বসেছিল। রাস্তায় ফেলে এলোপাথাড়ি ভাবে মারধর করলো। আমার পকেটে তিন হাজার টাকা ছিনিয়ে নিল। মোবাইল ছিল, সেটাও নিয়ে নিয়েছে। এরপরে ভোজালি আনতে বলে। আমি ভয়ে দোকানে গিয়ে ঢুকি। আমাকে টেনে বের করে। আজ আমাকে প্রাণে মেরে দিত। প্রতিবাদ করলে এমন অবস্থা হয়।” আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই কি এই রাজ্যে এখন তৃণমূল নেতা, নেত্রীদের রোষের মুখে পড়তে হবে? একজন নেত্রী, তিনি এইভাবে একজন বয়স্ক মানুষকে রাস্তায় ফেলে মারধর করবেন! আর এরপরেও পুলিশ চুপচাপ বসে থাকবে? কে অন্যায় করেছে, কে অন্যায় করেনি, সেটা তো পুলিশের তদন্তের বিষয়। কিন্তু যেভাবে একজন প্রবীণ মানুষকে শুধুমাত্র অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণে একজন তৃণমূল নেত্রী রাস্তায় মারধর করলেন, তাতে তার শাস্তি হবে না? নাকি এক্ষেত্রেও শুধুমাত্র তৃণমূল নেত্রী বলেই পুলিশ নীরবতা পালন করবে? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।