প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বর্তমানে বিভিন্ন দিক দিয়ে চাপের মুখে রয়েছে এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিকে মহার্ঘ ভাতা মেটাতে হবে, অন্যদিকে চাকরি হারাদের সমস্যা, বিভিন্ন দিক থেকে জর্জরিত এই রাজ্যের সরকার। তারা আবার সুপ্রিম কোর্টেরষ রিভিউ পিটিশন করেছে। কিন্তু তারপরেও আবার যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের নতুন করে আদালতের নির্দেশ মেনে পরীক্ষায় বসতে হবে। তেমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে যারা যোগ্য, যারা চাকরি হারিয়েছেন কিছু দুর্নীতির কারণে, তারা কেন আবার পরীক্ষায় বসবেন, এই প্রশ্ন সেই সমস্ত যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে। আর এবার সেই প্রশ্ন নিয়েই তারা সাত সকালে চলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী বাস ভবনের সামনে। তবে পুলিশের নিরাপত্তার ঘেরাটকে শেষ পর্যন্ত আটক হতে হলো চাকরিহারা শিক্ষিকাদের।
জানা গিয়েছে, এদিন একেবারে সাত সকালে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগিয়ে যান চাকরি-হারা কিছু শিক্ষিকা। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের অধিকারের কথা বলতে চান তারা। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে তাদের তড়িঘড়ি পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়ে যাওয়া হয় কালীঘাট থানায়। যাকে কেন্দ্র করে রীতিমত হুলস্থুল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এলাকা জুড়ে।
একাংশের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী তো জনতার প্রতিনিধি। তিনি তো বলেন, তিনি সাধারণ মানুষের লোক, তিনি নাকি মানুষের জন্য জেগে থাকেন। তাহলে চাকরি-হারা শিক্ষিকারা যখন নাওয়া খাওয়া, ঘুম ছেড়ে রাস্তায় বসে রয়েছেন, তাদের চিন্তায় পরিবারগুলো প্রহর গুনছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী কেন তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না? চাকরিহারা শিক্ষিকারা যদি কিছু দাবি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাখতেন, সেটা মুখ্যমন্ত্রী শুনলে এবং সাত সকালে তিনি যদি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সেই চাকরি হারাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন, তাহলে তো তার ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হতো। উল্টে পুলিশের এই অতিসক্রিয়তা প্রমাণ করে দিচ্ছে যে, এই রাজ্যের প্রশাসনের যারা যোগ্য, যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র সহমর্মিতা নেই বলেই দাবি বিরোধীদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চাকরি হারাদের বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যতই মানবিক পদক্ষেপ দেখানোর চেষ্টা করুন না কেন, তার সরকারের ভাবমূর্তি ইতিমধ্যেই ক্ষুন্ন হয়ে গিয়েছে। গোটা রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের নেতাদের চুরি এবং দুর্নীতির কারণেই যোগ্য চাকরিহারা ব্যক্তিদের এখন পথে বসতে হয়েছে বলে সকলের কাছেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বিষয়টি। তাই সেই সমস্ত চাকরিহারা শিক্ষিকারা তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলেও, তাদের সামনে মুখ দেখানোর মত ক্ষমতা এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের নেই। কারণ তিনি নিজেও জানেন যে, বিরোধীদের ঘাড়ে দায় চাপানো ছাড়া তার কাছে আর কোনো সদুত্তর চাকরিহারা শিক্ষিকাদের দেওয়ার মত নেই। আর সেই কারণেই সাত সকালে চাকরি হারা শিক্ষিকারা যে পদক্ষেপ নিলেন, তাতে বাড়িতে বসেই রীতিমত চমকে উঠলেন এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।