প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলোর পরিষেবা নিয়ে মাঝেমধ্যেই বিরোধীরা প্রশ্ন করে। তবে তৃণমূলের নেতা থেকে শুরু করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত দাবি করেন, তার সরকারের আমলে সরকারি হাসপাতালে রোগী পরিষেবা যথেষ্ট উন্নত। কিন্তু এবার রোগীদের কিভাবে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে, তার একটি নিদর্শন তুলে ধরে প্রকাশ্যে যেভাবে সোচ্চার হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারেরই এক মন্ত্রী, তাতে প্রশ্ন উঠছে, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে রোগী পরিষেবা অত্যন্ত উন্নত বলে দাবি করতেন, এবার তার কি হবে? রাজ্যের মন্ত্রী যে তথ্য সামনে আনলেন, তাতে তো মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি অস্বস্তিতে পড়ে গেল গোটা স্বাস্থ্য দপ্তর বলেই মনে করছেন একাংশ। কি ঘটনা ঘটেছে?
জানা গিয়েছে, শুক্রবার নিজের হোয়াটসঅ্যাপে একটি স্ট্যাটাস দেন রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, একটি বড় বাটির মধ্যে ছোট কয়েকটি মাংস রয়েছে। আর সেই ছবি দিয়েই তিনি সেখানে লিখেছেন যে, “এটা ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে রাতের খাবার। মাংসের পিসের অবস্থা দেখে মুরগীও লজ্জা পায়।” আর একেবারে রাজ্যের মন্ত্রী এইভাবে সরকারি হাসপাতালে রোগী পরিষেবার বিষয়টি তুলে ধরে যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিলেন এবং যেভাবে তা প্রকাশ্যে চলে এলো, তাতে হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। পাশাপাশি এই রাজ্যের সরকার তো বড় বড় গলায় যে দাবি করে যে, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নতমানের। তবে মন্ত্রী প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেওয়ার কারণে সরকারের সেই বক্তব্যও প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোগী পরিষেবা এত নিম্নমানের কেন? এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, “আমি যখন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ছিলাম, তখন কিছুটা সমস্যার সমাধান হয়েছিল। এখন প্রিন্সিপালরাই এই পদে রয়েছেন। কেন খাবারের মান এত খারাপ হলো, বলতে পারব না। তবে অভ্যাসবশত হঠাৎ ভিজিট করেছিলাম। না এলে তো জানতেই পারতাম না।” তবে এই ব্যাপারে পাল্টা মন্ত্রী এবং তৃণমূল সরকারকে খোঁচা দিচ্ছে বিরোধীরা।
গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। মন্ত্রী তো একদিন ভিজিট করে এই দৈনদশা দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু প্রত্যেকদিন রোগীদের নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা অত্যন্ত খারাপ। ঝা চকচকে বিল্ডিং করে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায় না। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বড়াই করে অনেক বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু রাজ্যের মন্ত্রী যেভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দৈনদশার চিত্র সামনে নিয়ে চলে এলেন, তাতেই বোঝা যাচ্ছে যে, তৃণমূল সরকারের আমলে হাসপাতালেও মানুষের সুস্থ থাকার উপায় নেই বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।