প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে বিরোধীদের বিন্দুমাত্র নিরাপত্তা নেই বলেই অভিযোগ করে বিরোধীরা। যেখানেই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা আক্রান্ত হন, সেখানেই পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করে বিরোধী দল বিজেপি। কিন্তু কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা যেভাবে বিরোধীদলের নেতা থেকে শুরু করে এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওপরেও হামলা করতে ছাড়ে না, তাতে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ক্রমশ চিন্তা বাড়ছে গোটা দেশের। ইতিমধ্যেই বজবজে গিয়ে যেভাবে তার ওপরে হামলা হয়েছে, তা নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই এবার কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে লোকসভার সচিবালয়।
জানা গিয়েছে, বজবজে যেভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এবার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল লোকসভা। যেখানে সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লোকসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে একটি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে লোকসভার সচিবালয়কে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। অর্থাৎ এতদিন রাজ্য সরকার বা তৃণমূলের নেতারা ভেবেছিলেন যে, যা খুশি, তাই করা যায়। কিন্তু সুকান্ত মজুমদার যে ছেড়ে কথা বলার মানুষ নন, তিনি ঘটনাস্থলেই তৃণমূলের চূড়ান্ত অসভ্যতার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তৃণমূলের এই সমস্ত দুষ্কৃতিদের তিনি শেষ দেখে ছাড়বেন। আর সেই মতই এবার সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লোকসভার পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। যার ফলে চরম খেসারত দিতে হতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারকে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিরোধীদের দাবি, অবিলম্বে এই ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত লোকসভার। যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র হরণ হচ্ছে, যেভাবে বিরোধীরা কোথাও গেলেই তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে, তা আর দেশের কোথাও হয় না। তাই পশ্চিমবঙ্গকে ঠান্ডা করতে এবং নবান্ন থেকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করতে লোকসভার সচিবালয়ের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত সাধুবাদ যোগ্য। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে যেভাবে হামলার মুখে পড়তে হয়েছে, যেভাবে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা অত্যাচার চালিয়েছে, তাতে এবার এদের সময় শেষ হয়ে এসেছে। তাই এবার কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই রাজ্যের ফ্যাসিস্ট সরকারকে চরম শিক্ষা দিতে হবে বলে এই দাবি করছে গেরুয়া শিবির।
পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলের নেতারা ভেবেছিলেন, বিরোধীদের আটকালেই বুঝি গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখা যায়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এতদিন মানুষ মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করলেও, যত ২০২৬ এর নির্বাচনে এগিয়ে আসছে, ততই সকলে প্রতিবাদী হয়ে উঠছে। এর আগে যখনই বিরোধীরা কোথাও প্রতিবাদ করতে যেত, তখনই পুলিশ দিয়ে তাদের আটকে দেওয়া হত। শেষ পর্যন্ত আদালতে গিয়ে অনুমতি নিয়ে আসতেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। কিন্তু এবার আক্রান্তদের কাছে পৌঁছে যাওয়ার পরেই যেভাবে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের লেলিয়ে দেওয়া হলো এবং যেভাবে তারা একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওপর হামলা করলেন, তারপরে তৃণমূলের অনেকে ভেবেছিলেন যে, তাদের কেউ কিছু করতে পারবে না। তবে তৃণমূলের দুষ্কৃতিদের এই কুকীর্তির জন্য এবার যে নবান্নকে বড়সড় গাড্ডার মুখে পড়তে হলো, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন লোকসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে রিপোর্ট তলব করার পর কবে সেই রিপোর্ট জমা দেয় নবান্ন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।