প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
রাজ্যে মা,বোনেরা যে মোটেই সুরক্ষিত নয়, তা একের পর এক ঘটনার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরে তৃণমূল সরকারের লজ্জা বলতে কিছু নেই। অন্তত তেমনটাই দাবি করছে বিরোধীরা। যার ফলে কসবার গণধর্ষণ কাণ্ডের পর এই রাজ্যের মা, বোনেদের সুরক্ষার দাবিতে কন্যা সুরক্ষা অধিকার যাত্রা শুরু করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে তিনি এই কর্মসূচি করেন। আর তারপরেই তৃণমূল সরকারকে শিক্ষা দিতে হলে যে পতাকা ছাড়া নবান্ন অভিযানের প্রয়োজন, তা বারবার করে বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আজকেও এই কর্মসূচি থেকে তিনি এমন এক ঘোষণা করে দিলেন, যার ফলে এবার শুধু রাজ্যের প্রতিবাদী সাধারণ মানুষ অপেক্ষা করছেন যে, অভয়ার পরিবার কি করেন! তারা কি সিদ্ধান্ত নেন! তাদের সিদ্ধান্তের ওপরেই এই নবান্ন অভিযান এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উত্থান পতন নির্ভর করছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

বলা বাহুল্য, বারবার করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন যে, পতাকা থাকলে পতাকা নিয়ে এবং পতাকা ছাড়া যদি কেউ চান, তাহলে দল মতের ঊর্ধ্বে উঠে সকলে নবান্ন অভিযান করুন। তৃণমূল সরকারকে শিক্ষা দিতে নবান্নে একটা ধাক্কা দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অতীতে একবার নবান্ন অভিযান হলেও, তা সেই ভাবে সাফল্য লাভ করেনি। তারপর পরবর্তীতে শুভেন্দু অধিকারী আবার সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে বলেছেন, যারা এই তৃণমূল সরকারের দ্বারা বঞ্চিত, লাঞ্ছিত, তারা সকলে মিলে একত্রিত হয়ে একটা নবান্ন অভিযানের ডাক দিন। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন কন্যা সুরক্ষা অধিকার যাত্রায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে আরজিকরে যে তরুণীর খুন, ধর্ষণ হয়েছে, যাকে “অভয়া” বলে গোটা রাজ্য এবং দেশ জানে, সেই অভয়ার পরিবারের কাছে গিয়েই এবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়ার ব্যাপারে আহ্বান জানানোর কথা জানিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমি আগামী ৫ তারিখ উল্টো রথের দিন পানিহাটিতে যাব। সেখানে অভয়ার পরিবারের অনুমতি নিয়ে তাদের বাড়িতে যাব। অভয়ার বাবাকে বলব যে, ৯ আগস্ট তরুণী খুন এবং ধর্ষণের বর্ষপূর্তির দিনে আপনি নবান্ন অভিযানের ডাক দিন। পতাকা ছাড়া ৯ আগস্ট নবান্ন অভিযান করতে হবে।” অর্থাৎ যেভাবে রাজ্যে মহিলাদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে এবং যেভাবে এক বছর আগে আরজিকরে একজন তরুণীর খুন এবং ধর্ষণের মত নৃশংস ঘটনা ঘটে গিয়েছে এই রাজ্যে, যার পরিপ্রেক্ষিতে গোটা রাজ্যে টালমাটাল প্রতিবাদ শুরু হয়ে গিয়েছিল, কার্যত চাপে পড়ে গিয়েছিল নবান্ন, সেই ঘটনার রেশ বর্ষপূর্তিতে তুলে ধরে এই নবান্নকে একেবারে হেলিয়ে দিতে এবার অভয়ার পরিবারের কাছেই সেই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়ার অনুরোধ করবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনিতেই কসবার ঘটনা নিয়ে যথেষ্ট চাপে রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তার মধ্যে যদি আরজিকরে এক বছর আগে খুন হওয়া তরুনীর মৃত্যুতে যদি 9 আগস্ট শুভেন্দুবাবু তার বাড়িতে তার বাবাকে এবং পরিবারকে রাজি করিয়ে এই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়াতে পারেন, তাহলে কিন্তু রাজ্যের মানুষ কোনো কিছু না দেখে পতাকা ছাড়া প্রচুর পরিমাণে এই কর্মসূচিতে শামিল হবেন। কারণ সকলেই চায়, এই রাজ্য দুর্নীতিমুক্ত হোক। সকলেই চায়, এই রাজ্যে সুশাসন আসুক, মহিলারা সুবিচার পান। আরজিকরের পরেও এই রাজ্যের বুকে মহিলাদের যে বিন্দুমাত্র মান সম্মান নেই, প্রতিমুহূর্তে তৃণমূল নেতারা যে তাদের মান সম্মান নিয়ে খেলছেন, তা কসবার ঘটনার পর আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই এবার আসল শিক্ষাটা নবান্নকে দিতে হবে বলেই দাবি বিরোধীদের। ফলে শুভেন্দু অধিকারীর এই অনুরোধের পর অভয়ার পরিবারের সিদ্ধান্তের ওপর তৃণমূল সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।B