প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এতদিন বিজেপিকে নিয়ে অনেক কথা বলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি ঐক্যবদ্ধ নয়, দলের মধ্যে শুভেন্দু বিজেপি, সুকান্ত বিজেপি, দিলীপ বিজেপির মত গোষ্ঠী রয়েছে, ইত্যাদি নানা কথা তৃণমূলের মুখ থেকে শোনা গিয়েছে। কিন্তু ২০২৬ এর নির্বাচন এই যতই এগিয়ে আসছে, ততই যেন পরিণত হতে দেখা যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপিকে। তৃণমূলের সঙ্গে এমনিতেই সর্বভারতীয় দল হিসেবে বিজেপির কোনো তুলনা চলে না। কারণ তৃণমূল শুধুমাত্র বাংলাতেই সীমাবদ্ধ। তবুও বঙ্গ বিজেপির বিভিন্ন নেতাদের মধ্যে বনিবনার অভাব হচ্ছে বলে তৃণমূল এতদিন বিজেপি ঐক্যবদ্ধ নয়, তা সামনে আনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এবার তাদের মুখে ঝামা ঘষে বঙ্গ বিজেপির নতুন সভাপতি নির্বাচন হওয়ার আগেই যে ঐক্যবদ্ধ ছবি সামনে এলো, তাতেই স্পষ্ট হয়ে গেল যে, সভাপতি নির্বাচনের পরে তৃণমূল কিভাবে ধাক্কা খাবে, সেটা তো পরের ব্যাপার। সেটা তো ভোটের অংক বলবে। কিন্তু প্রথম দিনেই ঐক্যবদ্ধ বিজেপির এই চেহারা তৃণমূলকে যথেষ্ট চিন্তায় রাখবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
বলা বাহুল্য, সাংগঠনিক রীতিনীতি মেনে আজ বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া ছিল। যেখানে মনোনয়নপত্র পেশের বিষয় ছিল আজ। আর সেখানেই বিজেপির যে ঐক্যবদ্ধ ছবি সামনে এলো, এই ছবি যদি ২০২৬ পর্যন্ত অটুট থাকে, তাহলে কিন্তু তৃণমূল বিজেপির ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। কি দেখা গেল এদিন? এদিন দেখা গেল যে, বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ, যার সঙ্গে এই নির্বাচনী প্রক্রিয়া আর কারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না বলেই এখনও পর্যন্ত মনে করা হচ্ছে। এক কথায়, শমীকবাবুর রাজ্য সভাপতি হওয়া প্রায় পাকা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবুও যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়, সেটা পরের ব্যাপার। কিন্তু আপাতত তিনিই যে রাজ্য সভাপতি হচ্ছেন, সেটা প্রায় স্থির হয়ে গিয়েছে। আর সেই শমীক ভট্টাচার্য যখন সাংগঠনিক রীতিনীতি মেনে মনোনয়নপত্র পেশ করছেন, তখন তার এক পাশে দেখা গেল বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং আর এক পাশে দেখা গেল শুভেন্দু অধিকারীকে।
আর এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পরেই সব থেকে বেশি যাদের গাত্রদাহ হতে শুরু করবে, সেটা হচ্ছে এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ তারা এতদিন ভেবেছিল যে, বিজেপির মধ্যে অনেক গোষ্ঠী রয়েছে, তারা কি করে ক্ষমতায় আসবে? কিন্তু শমীকবাবুকে সভাপতি নির্বাচনের পদ্ধতিতে এগিয়ে দিয়ে বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দুজনেই কিন্তু পাশাপাশি থেকে বুঝিয়ে দিলেন যে, বঙ্গ বিজেপি তৃণমূলকে সরাতে এতটাই ঐক্যবদ্ধ। অর্থাৎ এই রাজ্যের শাসক দল যতই বিজেপিকে নিয়ে, তাদের গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে খেলানোর চেষ্টা করুক না কেন, সেসব দিন এবার যে অতীত হতে চলেছে, তা এই একটা ছবির মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট।
পর্যবেক্ষকদের মতে, সুকান্তবাবু যে রাজ্য সভাপতি থাকবেন না, এটা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কারণ তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে নতুন রাজ্য সভাপতি কে হবেন, কবে হবেন, সেটার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন কর্মীরা। সেদিক থেকে শমীক ভট্টাচার্য যেমন সুবক্তা, ঠিক তেমনই তিনি দলের পুরনো দিনের নেতা। তাই তার মত ব্যক্তিকে রাজ্য সভাপতি করলে যে দলের সকলেই যোগ্য মর্যাদা পাবেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই তাকে রাজ্য সভাপতি করে এতদিন রাজ্য সভাপতি থাকার সুকান্তবাবুর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে প্রতিমুহূর্তে হেলিয়ে দেওয়া রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকেও সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। আর সেই কারণেই বঙ্গ বিজেপির এতটা ঐক্যবদ্ধ ছবি দেখা যাচ্ছে, আর তাতেই বড়সড় ঝটকা খেলো তৃনমূল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।