প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে এমন সমস্ত ঘটনা ঘটছে, যার ফলে প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে যে, বাংলার কোনো মহিলারাই নিরাপদ নন। আর শাসকের যে অত্যাচার লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতে বাংলার মহিলাদের নিরাপত্তা যদি থেকে থাকে, তাহলে তার জন্য তৃণমূল সরকারকে বিসর্জন দিতে হবে বলে ক্রমাগত একের পর এক কর্মসূচি থেকে দাবি করছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন করে অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছে ঘাসফুল শিবির। কিন্তু এবার সেই শুভেন্দু অধিকারী কেন তৃণমূলের হয়েই আওয়াজ তুললেন? হঠাৎ কি এমন ঘটে গেল রাজ্য রাজনীতিতে? যার সঙ্গে তৃণমূলের আদায় কাচকলায় সম্পর্ক, যিনি প্রতিনিয়ত তৃণমূলকে আক্রমণ করেন, সেই তিনিই হঠাৎ তৃণমূলের মহিলাদের হয়ে সোচ্চার হলেন কেন?
বলা বাহুল্য, বর্তমানে বাংলায় ক্রমাগত নারী নির্যাতনের ঘটনায় তার যে সমস্ত কর্মসূচি হবে, সেই সমস্ত কর্মসূচি কন্যা সুরক্ষা যাত্রার মধ্যে দিয়েই হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে শুধু বাংলার সাধারণ মহিলারা নন, যারা তৃণমূলের হয়ে গলা ফাটান, যারা তৃণমূলের মহিলা কর্মী থেকে শুরু করে নেতৃত্বরা রয়েছেন, এবার তাদের জন্যেও আওয়াজ তুলতে দেখা গেল বিরোধী দলনেতাকে। এক্ষেত্রে তিনি তৃণমূলের পক্ষ নিচ্ছেন, এমনটা কিন্তু নয়। বরঞ্চ তিনি তৃণমূলের ভেতরে যারা মহিলা আছেন, তারাও সুরক্ষিত নন বলে শাসক দলকেই নিজেদের মহিলা কর্মী সমর্থকদের সুরক্ষা নিয়েই রীতিমত প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন। যার ফলে আরও একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেল যে, শুভেন্দু অধিকারী কোনো রং দেখে পাশে না দাঁড়ানো করেন না। তার চোখে সকল মহিলারাই মাতৃসমা। তাই বাংলা সাধারণ মহিলা বা বিরোধীদলের মহিলা নেত্রীদের প্রতি অত্যাচারের ক্ষেত্রে তিনি শুধু সোচ্চার হবেন, এমনটা নয়। তৃণমূলের মধ্যেও যারা মহিলা নেতৃত্ব এবং কর্মীরা রয়েছেন, তারাও অত্যাচারের শিকার হন বলেই বুঝিয়ে দিতে চাইলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই তাদের জন্যও যে তার কণ্ঠস্বর প্রতিমুহূর্তে সোচ্চার হবেন, তা তার এই বক্তব্যের মধ্যে থেকেই স্পষ্ট। কিন্তু কি বললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা?
এদিন তমলুকের ময়নায় কন্যা সুরক্ষা যাত্রায় অংশ নেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই রাজ্যে লাগাতার নারী নির্যাতন নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “গোটা রাজ্যে কোনো বোন, দিদি, মা, কন্যা সুরক্ষিত নন। এমনকি তৃণমূলের মহিলারাও সুরক্ষিত নয়। জেহাদি, ধর্ষকদের হাত থেকে তাদেরও নিষ্কৃতি নেই। তাই আমরা আওয়াজ তুলেছি, তুলব। কন্যা বাঁচাও, মমতা হটাও।” তবে এখানেই থেমে থাকেননি শুভেন্দুবাবু। তিনি আরও বলেন, “পুলিশ মানেই এখন তৃণমূল। আসলে বাংলার লজ্জার নাম মমতা। তিনি কখনই গর্ব নন। তাই তাকে সরালেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী আবারও প্রমাণ করলেন যে, তিনি শুধুমাত্র বিজেপির বিরোধী দলনেতা নন। যেখানেই মা, বোন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ শাসকের দ্বারা আক্রান্ত হবেন, সেখানেই তিনি ছুটে যাবেন, তাদের পাশে দাঁড়াবেন। এক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গে তার লড়াই চললেও, তৃণমূলের ভেতরেও যারা মহিলারা রয়েছেন, তাদেরকেও যদি নির্যাতনের শিকার হতে হয়, তাহলে তাদের জন্যও তিনি লড়াই করবেন বলেই বুঝিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ফলে তার এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তার যেমন বড় হৃদয়ের পরিচয় পাওয়া গেল, ঠিক তেমনই তৃণমূল কংগ্রেস এই রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে যেমন ব্যর্থ, ঠিক তেমনই নিজের দলের মহিলা কর্মীদেরও যে সুরক্ষা নেই, সেই বিষয়টি শুভেন্দু অধিকারী তুলে ধরায় রীতিমত লজ্জায় পড়ে গেল শাসক শিবির বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।