রাজ্যে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে ফের একবার সুর চড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার কলকাতার কাছাকাছি, মহেশতলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর থানা এলাকায় ‘জেহাদি’ হামলার অভিযোগ তুলে সরাসরি কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে এক ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিলেন তিনি। তাঁর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি—“এই সময়ের মধ্যে যদি হামলা বন্ধ না হয়, তবে সমস্ত বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাব।” শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়।

বুধবার বিধানসভার সামনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, “মহেশতলায় প্রায় ২০০০ জন জেহাদি ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে, যারা হিন্দুদের বাড়ি, মন্দির ও তুলসি মঞ্চ ভাঙচুর করছে। তুলসি মঞ্চ ফেলে দেওয়া, হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালানো হচ্ছে।” নিজের দাবিকে জোরালো করতে মোবাইলে তোলা একটি ভিডিও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন তিনি। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, “পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়, কারণ এখানে চলছে ডায়মন্ড হারবার মডেল।”

তিনি আরও দাবি করেন, “কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে যে ৩১ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে কোথাও অশান্তি হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যেতে পারে। কিন্তু মহেশতলার এই জেহাদি শক্তির বিরুদ্ধে পুলিশ একটিও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত এলাকায় প্রবেশ করতে পারছে না।” একে শুভেন্দু ‘পচা গজা আর প্যাঁড়া খাইয়ে হিন্দু নিধন’ বলে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “এই কারণে এই সরকারকে মুসলিম লিগের সরকার বলা হয়।”

শুভেন্দুর বক্তব্যের পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে বলে সূত্রের খবর। মহেশতলায় বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল এবং স্থানীয় স্তরে কিছু অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যদিও রাজ্য সরকার বা পুলিশ প্রশাসনের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তবে বিজেপির পক্ষ থেকে বিষয়টিকে বড় করে তুলে ধরা হয়েছে এবং দাবি করা হয়েছে, “রাজ্যে হিন্দুরা আজ নিরাপদ নন, প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্টভাবে কাজ করছে।”

এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য প্রশাসন কি সত্যিই নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে? না কি শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি এবং চাপ প্রয়োগের কারণেই পুলিশের তৎপরতা বেড়েছে? বিষয়টি আগামী কয়েক দিনে আরও স্পষ্ট হবে, তবে এই ঘটনার মধ্য দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের প্রসঙ্গ ফের নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে।