প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এতদিন বঙ্গ বিজেপিকে রামের নাম করে বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে বলে কটাক্ষ করত তৃণমূল। পাল্টা হিন্দুদের মন পেতে দীঘাতে তৈরি হয়েছে জগন্নাথ মন্দির। যেখানে এই জগন্নাথ মন্দির করে তৃণমূল হিন্দুদের মন পাওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না বলে খোঁচা দিতো বিজেপি। আর এসবের মধ্যেই রাম এবং জগন্নাথের লড়াই নিয়ে যখন সরগরম রাজ্য রাজনীতি, ঠিক তখনই বিজেপির নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। আর যে মঞ্চ থেকে তার নাম ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে আশ্চর্যজনকভাবে কালীঘাটের মা কালীর ছবি ছিল। যা দেখে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন যে, বাংলার সংস্কৃতিকে মান্যতা দিয়ে যেহেতু শক্তিপীঠ হিসেবে বাংলার মানুষ মা কালীকে শ্রদ্ধা করেন, তাই তাকে সামনে রেখেই বিজেপি এবার নয়া স্টাইলে পথ চলতে চাইছে। আর এই সমস্ত বিষয় নিয়ে যখন চর্চা চলছে ঠিক তখনই প্রতিক্রিয়া দিলেন বিজেপির নয়া সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।

সকলের মধ্যেই এখন একটাই প্রশ্ন যে, হঠাৎ করে কালীঘাটের মা কালীর ছবি কেন বিজেপির কর্মসূচিতে দেখা গেল? তাহলে কি বিজেপি এখন কালীঘাটের কালীকে সামনে রেখে ময়দানে নামতে চাইছে? বাংলা ও বাঙালির প্রধান দেবী মা কালী, এটা বুঝেই বিজেপি কি বাঙালির মন পেতে এই কৌশল গ্রহণ করেছে? এদিন সেই ব্যাপারে সমস্ত জল্পনার অবকাশ করেছেন বিজেপির নয়া সভাপতি। তার স্পষ্ট বার্তা,, তৃণমূলের পাশে আর মা কালী নেই। মা কালীও তৃণমূলের এই পাপের ফাইল বহন করতে চাইছে না।

হঠাৎ করে বিজেপির কর্মসূচিতে মা কালী কেন? তাহলে কি রামের বদলে এখন বঙ্গ বিজেপির আরাধ্য দেবী হয়ে উঠছেন মা কালী? বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “কালীঘাট তো শক্তিপীঠ। বাঙালির সঙ্গে কালীর নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। কালী বাদ দিয়ে কোনো পরিচয় নেই। এমনকি বিবেকানন্দ বলেছেন, এখানে কালী পাঁঠা খাবে। সেখানে কালীর ছবি নিয়ে আপত্তি কেন?” শুধু তাই নয়, তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বঙ্গ বিজেপির নয়া সভাপতির দাবি, কালীঘাটের মা কালীও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। শমীকবাবু বলেন, “কালীঘাটের কালী বলে দিয়েছেন, তুমি আমার প্রতিবেশী হতে পারো। কিন্তু তুমি যা করেছ, তাতে আমি তোমার ফাইল নিতে পারব না।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে যে, বাংলায় চলতে গেলে বাংলার অস্মিতাকে কাজে লাগাতে হবে। আর সেই কারণেই নয়া বিজেপি সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকেই সামনে এসেছে এক অন্য চিত্র। কালীঘাটের মা কালীর ছবিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিজেপি নেতারা। যা নিয়ে তৃণমূল এখন প্রশ্ন তুলছে ঠিকই। কিন্তু বিজেপি যে সঠিক জায়গাটা ধরেছে এবং বাংলায় ক্ষমতায় আসতে গেলে বাংলার মানুষের পছন্দকেই যে পছন্দ হিসেবে মান্যতা দিতে হবে, তা বুঝেই যে বিজেপির এই মা কালীর প্রতি আরাধনা এবং নয়া বিজেপি সভাপতির এই নয়া স্টাইল, তা বুঝতে বাকি নেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তবে তৃণমূলকে চাপে রাখতে বঙ্গ বিজেপির মা কালীকে নিয়ে মাতামাতি আগামী দিনে তাদের কতটা সাফল্য এনে দেয়, সেদিকেই নজর থাকবে রাজ্যবাসীর।