প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- তৃণমূলের গৃহযুদ্ধ ভয়ংকর পর্যায় ধারণ করেছে। পরিস্থিতি এমন যে, রাজ্যের মন্ত্রী নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি জন্য কর্মসূচি করতে গেলে সেখানেই দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাকে। এমনকি তার গাড়ি ভাঙ্গার মতও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। আর দলেরই মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের কর্মীদের এই ধরনের বিক্ষোভ রীতিমত একুশে জুলাইয়ের আগে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি করেছে শাসক দলের মধ্যে। আর এই পরিস্থিতিতে গোটা ঘটনায় যে অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে উঠেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবার পাওয়া গেল সেই খবর। শুধু তাই নয়, এই ব্যাপারে যারা মন্ত্রীর গাড়িতে হামলা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
বলা বাহুল্য, সম্প্রতি একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে নিজের বিধানসভা মন্তেশ্বরে একটি কর্মসূচি করতে যান রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। কিন্তু পথে বেশ কয়েক জায়গায় তাকে তৃণমূলের বেশ কিছু কর্মীরা আটকে দেন। এমনকি তার ওপরে হামলা চালানোর চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে যদি এই সমস্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে তিনি দল ছেড়ে দেবেন বলেও হুশিয়ারি দেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। আর একদিকে একজন সংখ্যালঘু ব্যক্তি, আর অন্যদিকে রাজ্যের মন্ত্রী, তিনি এইভাবে দল ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়ায় রীতিমত চাপে পড়ে যায় তৃণমূল নেতৃত্ব। যার ফলে এবার সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ওপর যারা আক্রমণ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম।
এদিন এই ব্যাপারে দলীয় অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন কলকাতা পৌরসভার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত বিরক্ত। আমরা খুব কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করব। জনপ্রতিনিধি আক্রান্ত হয়েছেন, কোনো লোক দলের মধ্যে থেকে এইরকম ব্যবহার করতে পারবেন না। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না, সহনশীলতা থাকতে হবে। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে। তবেই সে জনপ্রতিনিধি, তবেই সে দল করতে পারবে। যেটা ঘটেছে, সেটা গুন্ডামি। তৃণমূল এগুলো সহ্য করবে না।”
তবে ববি হাকিম সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর পক্ষে কথা বললেও, দলীয় কর্মীদের ক্ষোভকে কেন মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। অনেকে বলছেন, আসলে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সংখ্যালঘু ভোট পাইয়ে দিতে পারবেন, সেই কারণেই কি তার প্রতি এত দরদ তৃণমূলের? কিন্তু তিনি একজন বিধায়ক হওয়ার পরেও যেভাবে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, আর সেই কারণেই যে দলীয় কর্মীরা তার প্রতি বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, সেই ব্যাপারে তদন্ত না করে কেন শুধুমাত্র সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর প্রতিই সহানুভূতি প্রকাশ করছে তৃণমূল? যদি এবার শুধুমাত্র সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর পক্ষে কথা বলতে গিয়ে তৃণমূল বিক্ষোভ দেখানো কর্মী বা নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয় এবং তারা যদি আবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী শিবিরে গিয়ে যোগদান করে, তখন তৃণমূল সেই চাপ সামলাতে পারবে তো? প্রশ্নটা উঠছে রাজনৈতিক মহলে।