প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বারবার করে বলছেন, সমস্ত হিন্দুরা একত্রিত হলেই বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ ক্ষমতায় আসতে পারবে। আর সেই কারণেই যেখানেই হিন্দুরা আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানেই পৌঁছে গিয়ে হিন্দুদের হৃদয় সম্রাট হিসেবে নিজের পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। কালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও বিজেপি যে জিতবে না, তা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। কিন্তু এখানকার হিন্দু ভোট কতটা বিজেপির পক্ষে যায়, তার দিকে নজর ছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতার। আর অবশেষে কালীগঞ্জের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর তৃণমূল জয়লাভ করলেও হিন্দু ভোট নিয়ে যে তথ্য সামনে চলে এলো, তাতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এই ফর্মুলা অনুযায়ী যদি মানুষ ভোট দিতে শুরু করেন, তাহলে তো এই রাজ্যে তৃণমূল দল বলে আর কিছুই থাকবে না। অন্তত তেমনটাই বলছেন একাংশ।
বলা বাহুল্য, কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে স্বাভাবিকভাবেই জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি নিশ্চিত ছিল যে, এই বিধানসভা কেন্দ্রে মুসলিম ভোটারদের সংখ্যা বেশি। কাজেই তৃণমূল যে খুব সহজেই জিতে যাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর দ্বিতীয়ত, এটা উপনির্বাচন। আর উপনির্বাচনে যে শাসকের পক্ষেই রায় যায়, তা সকলেই জানে। তবে এত কিছুর মধ্যে তৃণমূল জিতলেও, এই কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ১০৯ টি বুথ হিন্দু প্রভাবিত। আর সেই সমস্ত বুথেই লিড পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। যেখানে হিন্দু প্রভাবিত মাত্র একটি বুথে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিন সেই তথ্য দিয়েই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এটা অবশ্যই অত্যন্ত ভালো দিক। এই বিধানসভা কেন্দ্রে ১০৯ টি হিন্দু বুথ রয়েছে। যার মধ্যে ১০৮ টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। একমাত্র একটি এলাকায় এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এটা অত্যন্ত গুড সাইন। শতাংশের দিক থেকে বিজেপি ৭২.০৬ শতাংশ হিন্দু ভোট পেয়েছে। অর্থাৎ ৭৩ শতাংশ।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভোট যদি বিজেপি ধরে রাখতে পারে, তাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কি সমীকরণ রাজ্যে হতে যাচ্ছে, তা দিনের আলোর মত স্পষ্ট। হয়ত মুসলিম এলাকায় এগিয়ে থাকবে তৃণমূল। কিন্তু হিন্দু ভোট যেখানে বিধানসভার উপনির্বাচনে একত্রিত হয়ে বিজেপির পক্ষে পড়েছে, সেখানে গোটা রাজ্যে সাধারণ বিধানসভা নির্বাচনে যে সেই হিন্দুরা আরও দল বেঁধে বিজেপির পক্ষে ভোট দেবে এবং সেই কাজ হিন্দুরা যদি একবার করে দিতে পারে, তাহলে যে তৃণমূলের খেলা শেষ হতে চলেছে, তা নিয়ে সংশয় নেই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। তাই উপনির্বাচনের ফলাফলে তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করলেও, এখানে হিন্দুদের জোটবদ্ধ হয়ে বিজেপিতে সমর্থনের যে চিত্র উঠে এসেছে, তা দেখে কিন্তু চক্ষুচরক গাছ হয়ে যাচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।