প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- যেখানে তৃণমূল, সেখানেই অপরাধ। যেখানে দুষ্কৃতী, সেখানেই তৃণমূলের অবাধ বিচরণ। বারবার করে এই অভিযোগ করে বিরোধীরা। আর এবার বিরোধীদের অভিযোগ অনুযায়ী তৃণমূলের এক ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, সেই ব্যক্তির বাড়ি ভাঙা আটকাতে বিভিন্ন কৌশল হলেও, শেষ পর্যন্ত তা যেভাবে নাকচ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। যার ফলে আর শেষ রক্ষা হলো না সেই জয়ন্ত সিংহের। সকলেই জানেন যে, এই জয়ন্ত সিংহ কামারহাটির এবং আড়িয়াদহ এলাকার ত্রাস বলে পরিচিত। সম্প্রতি আদালতের পক্ষ থেকে কামারহাটি পৌরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তার বহুতল বাড়ি ভেঙে ফেলার ব্যাপারে। এদিকে পৌরসভার পক্ষ থেকেও সঠিক সময় পদক্ষেপ না নেওয়ায় উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। তবে অবশেষে সেই বাড়ির সামনে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়ে বাড়ি ভাঙার কথা জানিয়ে দেয় পৌরসভা। আর এবার তার পাল্টা সেই বাড়ি ভাঙ্গা আটকাতে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করা হলেও, তা নিয়ে বড় ধাক্কা দিলো আদালত।

জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের সিঙ্গল বেঞ্চের পক্ষ থেকে এই জয়ন্ত সিংহের বাড়ি ভাঙ্গার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই নির্দেশের পাল্টা বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের অবসরকালীন বেঞ্চে একটি আবেদন করেন সেই বাড়িতে থাকা প্রকাশ কুমার সিংহ নামে এক ব্যক্তি। তার বক্তব্য, পৌরসভা আইন মেনে এই বাড়ি ভাঙার কাজ করছে না। তবে আবেদনকারীর সেই আবেদন কার্যত খারিজ করে দেন বিচারপতি। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে যদি চ্যালেঞ্জ করতে হয়, তাহলে তিনি ডিভিশন বেঞ্চে যেতে পারেন।

তবে জয়ন্ত সিংহের বাড়ি ভাঙার নোটিশ পৌরসভা দিলেও, সেই বাড়িতে থাকা প্রকাশ কুমার সিংহ পৌরসভার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছেন, তা কি সত্যি? সত্যিই কি পৌরসভা আইন না মেনেই বাড়ি ভাঙার কাজ করছে? এদিন এই ব্যাপারে কামারহাটি পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, “কারা কি উদ্দেশ্যে কোর্টে যাচ্ছেন, জানি না। হাইকোর্টের নির্দেশ মতই বাড়ি ভাঙার প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি। এই ব্যাপারে অনলাইনে দরপত্র জমা করেছে। নিয়ম মেনেই বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা হবে।”

তবে বিরোধীরা অবশ্য এর পেছনে অন্য যুক্তি দিতে শুরু করেছেন। তাদের বক্তব্য, প্রকাশ কুমার সিংহ কে, যে, আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যাতে সেই বাড়ি ভাঙ্গা না হয়, তার জন্য আদালতে ছুটে যাচ্ছেন? আসলে এর পেছনে পৌরসভারই কোনো উস্কানি নেই তো? কারণ আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেও পৌরসভা এই বাড়ি ভাঙার ব্যাপারে টালবাহানা করেছিল। বিভিন্ন যুক্তি সামনে এনেছিল। আসলে তৃণমূলের ভোট লুটের কারবারী হচ্ছে এই জয়ন্ত সিংহ। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। এক্ষেত্রে তার বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়া হয়তো আদালতের নির্দেশ মেনে পৌরসভাকে করতে হচ্ছে। কিন্তু মনে মনে তাদের হয়ত ইচ্ছে নেই। আর সেই কারণেই তলায় তলায় সেই বাড়িতে থাকা একজন বাসিন্দাকে দিয়ে যাতে বাড়ি ভাঙ্গানোর প্রক্রিয়া আটকানো যায়, তার জন্য চেষ্টা হচ্ছে না তো? প্রশ্ন তুলে সোচ্চার হচ্ছে বিরোধীরা।