প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- অবশেষে আজ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে শমীক ভট্টাচার্যের। গতকাল তিনি মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর আজ কেন্দ্রীয় নির্বাচনী পর্যবেক্ষক রবিশংকর প্রসাদের উপস্থিতিতে সুকান্ত মজুমদারের চেয়ারে শমীক বাবুকেই দায়িত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। আর নয়া সভাপতিকে সংবর্ধনা জানাতে বিজেপির পক্ষ থেকে সায়েন্স সিটিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে সদ্য প্রাক্তন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যে বার্তা দিলেন, তাতে একদিকে যেমন স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠলো যে, বিজেপি ঐক্যবদ্ধ, ঠিক তেমনই রাজ্য সভাপতি পদ থেকে তিনি সরে গেলেও, শমীকবাবুর কাঁধে কাঁধ রেখেই যে গোটা বিজেপি পরিবার লড়াই করে বাংলার মানুষকে সুশাসন দিতে ২৬ এ বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীকেই নবান্নে বসাবে, তাও নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সুনিশ্চিত করে দিলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ।

বলা বাহুল্য, গোটা রাজ্যের বিজেপি কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন ছিল যে, সুকান্তবাবুর নেতৃত্বেই ২৬ এর লড়াই হবে? নাকি নতুন সভাপতির হাতে তুলে দেওয়া হবে দায়িত্ব? অবশেষে আজ শমীক ভট্টাচার্যের নাম বঙ্গ বিজেপির নয়া সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আর সেখানেই সদ্য প্রাক্তন সভাপতি সুকান্তবাবু বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজেদের লক্ষ্য স্থির করে দেন। সাংগঠনিক রীতিনীতি অনুযায়ী আজ কারও পদ থাকবে, কাল সেই পদে বদল হবে। হয়ত ব্যক্তি আলাদা হতে পারে, কিন্তু তাদের লক্ষ্য যে নবান্নে ক্ষমতা দখল করা এবং বিজেপিকে সরকারে আনা, সেই কথা প্রত্যেকটি কর্মীকে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেন সুকান্ত মজুমদার।

নয়া সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে স্বাগত জানিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “২০২১ সালে তৃণমূল একটা ধাক্কা দিয়ে বলেছিল, বিজেপি ফিনিশ। সেই তৃণমূল আজ বুঝতে পারছে, বিজেপি কি জিনিস! এবার দেখানোর সময় এসেছে। ২০২৬ সালের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আমরা উৎখাত করে ফেলব। মমতার জায়গায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী আসনে বসবেন।” আর সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির মুখ থেকে এই কথা শুনে রীতিমত উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে গোটা বিজেপি পরিবার। সকলেই হাততালি দিয়ে বুঝিয়ে দেন যে, তাদের লক্ষ্য একটাই, তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরানো। এক্ষেত্রে সভাপতির চেয়ারে যে কেউ আসতে পারেন। কিন্তু যে ব্যক্তিই চেয়ারে বসুন না কেন, তার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ রেখে নবান্ন থেকে তৃণমূলকে সরানো না গেলে যে বিজেপির অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ হবে না, সেই সুর বেঁধে দিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বার্তার সঙ্গে রীতিমত সহমত প্রকাশ করেন উপস্থিত প্রত্যেক বিজেপি নেতৃত্ব এবং কর্মীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা সত্যিই, বিজেপির কাছে ২৬ এর লড়াই মরণ-বাচন লড়াই। এই ২৬ এর নির্বাচনেও যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসতে না পারে, তাহলে বিজেপির যেমন ক্ষতি হবে, বিজেপি যেমন পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আর কোনোদিন কোনো স্বপ্ন দেখতে পারবে না, ঠিক তেমনই বাংলার হিন্দুদের কি করুণ পরিণতি হবে, তা নিয়েও অনেকে চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। তাই শুধু নিজেদের ক্ষমতা দখলের জন্য নয়, বাংলার মানুষকে বাঁচানোর জন্য এবং এই তৃণমূল সরকারের অরাজকতার হাত থেকে রাজ্যবাসীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সুকান্তবাবুর এদিনের এই বার্তাকে সামনে রেখেই এই মুহূর্ত থেকে লড়াই করা উচিত বিজেপি নেতৃত্বদের। শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে এবার আরও দ্বিগুণ লড়াই এবং উদ্যমী বিজেপিকে দেখতে চাইছে গোটা রাজ্যের মানুষ। যারা চাইছেন, তৃণমূল সরকারের বিসর্জন বলেই মত রাজনৈতিক সমালোচকদের।