প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এতদিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, ২০২১ এর মত ২০২৬-এ নাকিও তারা খেলা হবে গান চালিয়ে নিশ্চিন্তে রাজ্যের ক্ষমতায় বসবে। কিন্তু আজ বিজেপির নয়া সভাপতি হিসেবে শমীক ভট্টাচার্যের হাতে ব্যাটন যেতেই সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে যে সমস্ত বক্তব্য সদ্য প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সদ্য দায়িত্ব প্রাপ্ত শমীকবাবু রাখলেন, তাতে কিন্তু তৃণমূলের ঘুম উড়তে চলেছে। অন্তত তেমনটাই দাবি করছে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহল। তাদের বক্তব্য, এতদিন তৃণমূল ভেবেছিল, একতরফা খেলবে, তারা আক্রমণ করবে, আর মুখ বুজে সহ্য করবে বিজেপি। কিন্তু তৃণমূলের এই সমস্ত চালাকি আর খাটবে না। এবার তৃণমূল যদি আক্রমণ করতে আসে, তাহলে পাল্টা আক্রমণ করবে বিজেপি। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি প্রত্যাঘাতও করতে শুরু করেছে। তবে নতুন সভাপতি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই প্রত্যাঘাত যে আরও বাড়বে, তার ইঙ্গিত দিয়ে সংবর্ধনা মঞ্চ থেকেই রীতিমত রনংদেহি ভূমিকায় দেখা গেল সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে।
এদিন সায়েন্স সিটিতে বিজেপির নয়া সভাপতিকে সংবর্ধনা জ্ঞাপনের অনুষ্ঠান হয়। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল যেভাবে রাজ্য জুড়ে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়কালে বিজেপি কর্মীদের ওপর আক্রমণ করেছে এবং এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ চলছে, তা নিয়ে শাসক শিবিরকে সমঝে দেওয়ার বার্তা দেন সুকান্তবাবু। পাশাপাশি বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যেও তিনি জানিয়ে দেন, এবার আর শুধু মার খেলে চলবে না, পাল্টা মারার জন্য নিতে হবে প্রস্তুতি। হঠাৎ তৃণমূল যে ভাষা বোঝে, সেই ভাষাতেই এবার তাদেরকে জবাব দিতে হবে। কারণ তা না হলে এই ফ্যাসিস্ট দলকে শিক্ষা দেওয়া যাবে না বলেই দলীয় কর্মীদের বুঝিয়ে দিতে চাইলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
২০২১ এর নির্বাচনের পরবর্তী সময়কালে যে সন্ত্রাস হয়েছে, তার কথা তুলে ধরে এদিনের অনুষ্ঠান থেকে সুকান্তবাবু বলেন, “২০২১ সালের পর লড়াই সহজ ছিল না। বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া, ধর্ষণ এইসবে সাময়িক স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন আমাদের কর্মীরা। কিন্তু কোমর বেঁধে পাল্টা লড়াই শুরু হয়। ২০২৬ সালে পাল্টা লড়াই হবে। একটা ঢিল খেলে পাটকেল মারতে হবে। মার খাবেন না। মারার জন্য তৈরি হয়ে যান।” এখন সুকান্তবাবুর এই বক্তব্য নিয়ে তৃণমূল বলতেই পারে যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে সুকান্ত মজুমদার হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু পাল্টা তৃণমূলের উদ্দেশ্যে বিজেপির প্রশ্ন যে, তৃণমূলই এই অসভ্য রাজনীতির সৃষ্টি করেছে। পশ্চিমবঙ্গের বুকে তারাই প্রথম যারা বিরোধী দলের সঙ্গে যুক্ত, তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। তাই কোনোভাবেই যখন তৃণমূল শান্ত থাকছে না, যখন তারা বদলার রাজনীতি বাংলায় কায়েম করতে চাইছে, তখন তাদেরকে শান্ত করতে হলে তাদের পথেই পা বাড়াতে হবে। কারণ এভাবে আর কত মার খাবে বিজেপি কর্মীরা? তাই এতদিন ধরে রাজ্য সভাপতির দায়িত্বে থাকা সুকান্তবাবু কর্মীদের যন্ত্রণার কথা উপলব্ধি করেই আজকে তৃণমূলের ভাষাতেই তৃণমূলকে পাল্টা জবাব দেওয়ার সুর বেঁধে দিয়েছেন বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।