আবার প্রশ্নের মুখে উন্নয়ন! কোটি কোটি টাকা খরচে বানানো কিষাণ মান্ডি এখন ঝোপে ঢাকা সাপের বাসা মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য December 9, 2019 রাজ্যের উন্নয়ন খাতে ভবন তৈরি বা অর্থ বরাদ্দ করতে কখনও কার্পণ্য করতে দেখা যায়নি রাজ্য সরকারকে। বস্তুত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই বলে এসেছেন, শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও রাজ্যের উন্নতিকে স্তব্ধ হতে দেয়নি তার সরকার। কিন্তু প্রশাসনিক দেখভালের অভাবে যদি কোনো স্থানে রাজ্য সরকারের কোনো উদ্যোগ পড়ে পড়ে নষ্ট হয়, তাহলে স্বাভাবিক কারণেই তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। রাজ্যের সমস্ত স্তরের কৃষকদের কথা চিন্তা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরেই কিষাণ মান্ডি তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। সেই মোতাবেক পুরাতন মালদহের মিশন রোডে তৈরি করা হয়েছিল কিষাণ মান্ডি। এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছিল প্রায় 6 কোটি টাকা। তবে বর্তমানে সেই কিষাণ মান্ডি আগাছার জঙ্গলে ঢাকা পড়ে গেছে বলে খবর। সেখানে বাজার তো বসেই না, উপরন্ত সাপ থেকে শুরু করে বিষাক্ত পোকা-মাকড়ের বাসায় ভর্তি হয়েছে ওল্ড মালদহের কিষাণ মান্ডি। এই বিষয়ে স্থানীয় চাষীরা জানিয়েছেন, ওই কিষাণ মান্ডির পাশে বড় বড় চারটে হাট বসে। উদ্বোধনের প্রথম দিকে জেলা প্রশাসনের কথামতো কয়েকদিন চাষিরা নিজেদের বিক্রয় সামগ্রী নিয়ে কিষাণ মান্ডির মধ্যে বসলেও বর্তমানে সেই কৃষকরা পুনরায় নিজেদের জিনিসপত্র হাটে গিয়ে বিক্রি করছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও কৃষি বিপনন দপ্তরের তরফ থেকে পুনরায় সেই বাজার চালু করা যায় কিনা, সেই বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কারণ দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ইতিমধ্যেই গুদামঘর থেকে শুরু করে দোকানঘর, ধর্মকাটা থেকে শুরু করে বাদ বাকি সমস্ত কৃষি সরঞ্জাম পড়ে নষ্ট হওয়ার মুখে। যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষকরা বিক্রি সামগ্রী নিয়ে সরকারি কিষান মান্ডিতে গেলে সেখানে ক্রেতারা আসে না। ফলে নিয়ে আসা সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। তাই আশেপাশের বড় হাটগুলোতে নির্ভরশীল হওয়া ছাড়া কৃষকদের কাছে অন্য কোনো উপায়ে খোলা নেই। বর্তমানে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা ছাড়া এই কিষান মান্ডি অন্য কোনো কাজেই আসে না। গোটা বিষয়ে জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রফিকুল হোসেন বলেন, “পুরাতন মালদহের কৃষক বাজারে কি পরিস্থিতি রয়েছে, সেটি খতিয়ে দেখব। আগামী দিনে আমরা স্থায়ী সমিতির মিটিং দেখেছি। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।” অপরদিকে মালদহ জেলার রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির সম্পাদক অনুপম মৈত্র বলেন, “পুরাতন মালদহে কৃষক বাজারে আমরা বাজার বসেছিলাম। কিন্তু সেটি জমে ওঠেনি। তবে কৃষক বাজার যাতে এলাকার মানুষের কাজে আসে, সেজন্য আমরা পরিকল্পনা নিচ্ছি।” তবে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও এবং বাজারের গঠন যথেষ্ট পরিমাণে বৈজ্ঞানিক হওয়া সত্বেও, ক্রেতাদের আগ্রহ না থাকার কারণেই মূলত বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে পড়েছে ওল্ড মালদাহ কিষাণ মান্ডি। এক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফ থেকে যদি ক্রেতাদেরকে আকর্ষিত করার কোনো রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, তাহলে হয়ত পুনরায় সরকারের মহতী উদ্যোগ ওল্ড মালদহ কিষাণ মান্ডি গৌরবের সহকারে সচল হতে পারবে। অবশ্য সাপ, পোকা মাকড়ে ঝোপঝাড়ের ভর্তি কিষান মান্ডিতে অন্ততপক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিরোধীরা! তাঁদের বক্তব্য, আসলে এই রাজ্যে উন্নয়ন হয় তো তৃণমূল নেতাদের পকেট ভরানোর জন্য! তাই সব দিক বিবেচনা না করে, যেখানে তৃণমূল নেতাদের পকেটে টাকা ঢোকানো যাবে – সেখানে জোর করে কিষান মান্ডির নামে অর্থ নয়ছয় করা হয়েছে। ফলে, যা হওয়ার তাই হয়েছে! তৃণমূল নেতারা পয়সা পেয়ে গেছে আর কিষান মান্ডি সাপের আড়ৎ হয়ে গেছে! আপনার মতামত জানান -