প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কথায় কথায় অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার নাকি বাংলা বিরোধী? ভোটের সময় নাকি বিজেপি নেতারা বাংলায় আসে না। সারা বছর ধরে তারা বাংলাকে বঞ্চনা করেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ যে একেবারেই ভিত্তিহীন, তিনি যে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্র বিরোধী একটা প্রচার এই বাংলার মাটিতে করার চেষ্টা করেন এবং মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেন, তা যত সময় যাচ্ছে, ততই মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন, তার কাছে অনেক সুযোগ ছিল, বাংলার জন্য ভালো কিছু করার। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বাংলাকে কি দিয়েছেন, তা তো রাজ্যের মানুষ নিজেদের জীবন যন্ত্রণা দিয়ে উপভোগ করছেন। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কাজ করতে পারেননি, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলার জন্য সেই কাজ করেই বাংলার মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু কি সেই কাজ?

বলা বাহুল্য, বাংলা ভাষা বাঙালির কাছে গর্বের ভাষা। বহু বছর ধরে বাংলার প্রত্যাশা ছিল যে, বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তবে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে অবশেষে সেই স্বীকৃতি মিলেছে। আর সেই স্বীকৃতি পাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। নিজে ক্রেডিট নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সত্যিই কি তিনি এর জন্য ক্রেডিট নিতে পারেন? এই ক্রেডিট তো একমাত্র দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রাপ্য, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাপ্য। কারণ তারা যে কাজটা করে দেখিয়েছেন, তা বাংলার মানুষের আবেগকে স্বীকৃতি দেওয়ার কাজ। যা বাংলা থেকে নির্বাচিত হয়ে দেশের সংসদে গিয়ে বহুদিন সময় পাওয়ার পরেও করতে পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।

গতকাল নেতাজী ইন্ডোরের সভা থেকে সেই বিষয়ে আলোকপাত করে এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, “মোদিজীর নেতৃত্বে বাংলার বিকাশের জন্য অনেক কাজ হয়েছে। বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার সংস্কৃতিকেও মোদীজি ভোলেননি। বহুবছর ধরে বাংলার মানুষের দাবি ছিল, যাতে বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। মমতা দিদির কাছে আমার প্রশ্ন, আপনি দশ বছর ধরে হয় কেন্দ্রে মন্ত্রী থেকেছেন বা আপনার সমর্থন ছিল। বাংলা ভাষাকে তখন কেন ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি? মোদীজি বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর জন্য ধন্যবাদ জানানোর শিষ্টাচারটুকুও নেই মমতাজির।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ দেবেন, এটা তো আকাশ কুসুম কল্পনা। যিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্নভাবে গালিগালাজ করেন, কুরুচিকর শব্দ বলেন, তিনি বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষা স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ তো অনেক পরের কথা, নিজেই সমস্ত ক্রেডিট নিতে শুরু করবেন। ইতিমধ্যেই সেই রকম কিছু ঘটনাও রাজ্যবাসী দেখেছে। তবে ইনডোরের সভা থেকে অমিত শাহ যে প্রশ্নটা তুলে দিয়েছেন, সেটা কিন্তু অত্যন্ত মারাত্মক। সত্যিই তো তাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো দীর্ঘদিন কেন্দ্রে মন্ত্রী ছিলেন বা তার দল সমর্থন করেছিল, তখন কেন বাংলার জন্য এই কাজটা তিনি করে আনতে পারেননি? নরেন্দ্র মোদীর আমলে তো সেই কাজটা হয়েছে। ফলে নিজে ক্রেডিট না নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত নরেন্দ্র মোদিকে সাধুবাদ জানানো। কিন্তু সেই কাজটাও না করে কেন্দ্র বিরোধী যে সমস্ত প্রচার তিনি বাংলার মাটিতে পড়ে যাচ্ছেন, তাতে মানুষের যে ভরসা তার প্রতি নেই এবং আগামী ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে যে এর প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যাবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা