প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না অনুব্রত মণ্ডলের। জেল থেকে ফিরে আসার পর তিনি ভেবেছিলেন, নিজের মতো করে সংগঠন সাজিয়ে নেবেন। কিন্তু তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেভাবে বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা কাজল শেখের উত্থান হয়েছে, তাতে তিনি ভেতরে ভেতরে কিছুটা হলেও গুমরাতে শুরু করেছিলেন বলেই দাবি করে বিরোধীরা। আর এই পরিস্থিতিতে ভাইরাল অডিও ক্লিপ নিয়ে যখন অনুব্রত মণ্ডল আরও চাপে রয়েছেন, ঠিক তখনই তার চাপ বাড়িয়ে তার অনুগামী বলে পরিচিত বেশ কিছু তৃণমূলের নেতাকর্মী কাজল শেখের সঙ্গে দেখা করে তার সঙ্গেই থাকবেন বলে জানিয়ে দিলেন। আর এর ফলে এই প্রশ্ন উঠছে যে, এবার কি তাহলে বীরভূমের ভরকেন্দ্রের পরিবর্তন হতে চলেছে? অনুব্রত মণ্ডল এতদিন যে দাপট বীরভূম জেলায় তৃণমূলের মুখ হিসেবে দেখিয়েছেন, এবার কি সেখানে দলের নেতাকর্মীরা ভরসা রাখছেন কাজল শেখের ওপরে?
জানা গিয়েছে, এদিন বীরভূমের সাঁইথিয়া বনগ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের উপ প্রধানসহ প্রায় ১০০ জন নেতাকর্মী দেখা করেন কোর কমিটির সদস্য তথা বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের সঙ্গে। আর তারপরেই তারা জানিয়ে দেন যে, এখন থেকে তারা আর অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে থাকবেন না। এরপর থেকে তারা কাজল শেখের নেতৃত্বে দল করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আর এখানেই প্রশ্ন যে, হঠাৎ করে কি হলো? অনুব্রত মণ্ডলের দাপটে যেখানে বাঘে গুরুতে এক ঘাটে জল খেত, সেখানে সেই অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গ ত্যাগ করে কেন রাতারাতি কাজল শেখের শিবিরে যুক্ত হলেন এত নেতাকর্মী! তাহলে কি অনুব্রত মণ্ডলের চ্যাপ্টার ক্লোজ হতে চলেছে বীরভূম জেলা তৃণমূলে?
বিরোধীদের দাবি, অনুব্রত মণ্ডল এখন তৃণমূলের কাছে অস্বস্তিজনক ব্যাপার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, কি করে তাকে ঝেড়ে ফেলা যায়। আর এই পরিস্থিতিতে সমস্ত নেতাকর্মীরা যখন অনুব্রত মণ্ডল অত্যন্ত চাপে রয়েছে, তখন সুযোগ বুঝে তার শিবির পরিবর্তন করে কাজল শেখের শিবিরে নাম লেখাচ্ছেন। আসলে এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। এসব নিয়ে মানুষ ভাবিত নয়। অনুব্রত মণ্ডল থেকে শুরু করে কাজল শেখ, সকলেই একই পথের পথিক। তৃণমূলের ভাষা, রুচি সংস্কৃতি বিরোধী। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে গোটা তৃণমূলকেই বীরভূম থেকে উৎখাত করবে জনতা বলেই দাবি বিরোধীদের।
পর্যবেক্ষকদের মতে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেশে ফিরে আসার পর থেকেই একটা চর্চা শুরু হয়েছে যে, এবার অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে আরও কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। সেদিক থেকে তাকে বহিষ্কার করা হবে কিনা, তা নিয়েও একটা জল্পনা চলছে। এদিকে এখনও পর্যন্ত তিনি পুলিশের নোটিশে সাড়া দিয়ে থানায় যাননি। ফলে সেই দিকেও নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। আর এই সমস্ত কিছুর ওপর ভিত্তি করে অনুব্রত মণ্ডলকে কার্যত ধাক্কা দিয়ে তার অনুগামী যেভাবে তার বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত কাজল শেখের সঙ্গে দেখা করে তার সঙ্গে চলবেন বলে জানিয়ে দিলেন, তাতে কিন্তু এমনিতেই তো বিতর্কের মুখে রয়েছে অনুব্রতবাবু, তার মধ্যে এই দৃশ্য বীরভূম জেলা তৃণমূলের রাজনীতিতে তাকে প্রতিমুহূর্তে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।