প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজনীতিতে আদর্শ বলে আর কিছু নেই। বিশেষ করে বঙ্গ রাজনীতিতে তো আদর্শের বালাই নেই। তেমনটাই বলেন সাধারণ মানুষ। যখনই যে স্বার্থ বোঝে, তখনই নিজের দল ত্যাগ করে শাসকের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন রাজনীতিবিদরা। তবে অনেকে আবার আছেন, মূল্যবোধকে বিসর্জন না দিয়ে চোখে চোখ রেখে কেস, কাবারির বিরুদ্ধে লড়াই করে যান। কিন্তু কজনই বা তার সহ্য করতে পারেন? তাই এবার দীর্ঘদিনের কংগ্রেস নেতা দুবারের বিধায়ক শংকর মালাকার যোগদান করলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। আর তৃণমূলের যোগদান করার পরেই তিনি যে খেলো খেলো যুক্তি দিতে শুরু করলেন, তা শুনে হাসছে আমজনতাও।
এদিন তৃণমূল ভবনে মাটিগাড়া নকশালবাড়ির দুবারের কংগ্রেস বিধায়ক শংকর মালাকার দল বদল করেন। যেখানে তার হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। আর দলবদল করার পর এই অন্যান্য যে সমস্ত নেতারা যে কথা বলেন, সেই একই কথা বলতে শুরু করলেন শঙ্করবাবু। তার বক্তব্য, “কংগ্রেস নয়, তৃণমূলই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। আর শাসক দলে না থেকে মানুষের কাজ করা যায় না। উন্নয়নে সামিল হতেই তিনি তৃণমূলে যোগদান করেছেন।” আর তারই বক্তব্যের পরেই তার দিকে পাল্টা কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের বক্তব্য, শংকরবাবুর মত বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ এমন কথা বলতে পারলেন কি করে? হ্যাঁ, এটা তিনি ঠিকই বলেছেন যে, এই রাজ্যে কংগ্রেসের যা অবস্থা, তাতে তারা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে না। কিন্তু প্রথম প্রশ্ন, বিজেপির বিরুদ্ধে কেন লড়াই করতে হবে? বিজেপি কি এমন করেছে, যার জন্য শংকরবাবু মনে করলেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্লাটফর্ম বেছে নেওয়াই সবথেকে ভালো উপায়? নাকি নিজের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে, শাসক দলের সঙ্গে থাকলে সেভ ভাবে খেলা যাবে, সেই তার জন্যই তার মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের এই দলবদল?
বিজেপির দাবি, এরা সবাই সুযোগ সন্ধানী। তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে, উত্তরবঙ্গ থেকে যত বেশি নেতা এনে তাদের দলে যোগদান করাতে। কারণ তৃণমূল খুব ভালো মত জানে, এবারেও তারা উত্তরবঙ্গে ভালো ফলাফল করতে পারবে না। নরেন্দ্র মোদীর সভার পর আরও বেশি করে উত্তরবঙ্গে গেরুয়া ঝড় উঠেছে। বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসবে, ততই উত্তরবঙ্গ গেরুয়াময় হয়ে যাবে। আর সেই কারণেই এই ধরনের রিজেক্টেড নেতাদের নিজেদের দলে যোগদান করিয়ে তাকে দিয়ে বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী কথা বলিয়ে তৃণমূল হাওয়া পাল্টানোর চেষ্টা করছে। তবে মানুষ এই সমস্ত নেতাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই তৃণমূল সেই প্রত্যাখ্যাত নেতাদের দলে যত নেবে, ততই তারা বঙ্গ রাজনীতিতে জনতার প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়বেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।