প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বিরোধীরা ঠিকই বলেছিলেন যে, এই রাজ্যের পুলিশের মেরুদন্ড নেই, অনুব্রত মণ্ডলের মত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কিছু করার। যে অনুব্রত মণ্ডল পুলিশের একজন আধিকারিককে ফোন করে গালিগালাজ দিলেন, তার মা-বউ তুলে কটুক্তি করলেন, তারপরেও তাকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারলো না পুলিশ। অথচ সেই বোলপুরের আইসি লিটন হালদারের বিরুদ্ধে এবার নেওয়া হলো পদক্ষেপ? যে ঘটনায় রীতিমত পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

বিশেষ সূত্র পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, বীরভূম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বোলপুরের আইসি লিটন হালদারের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন যে, তদন্তের স্বার্থে পুলিশ লিটন হালদারের ফোন বাজেয়াপ্ত করতেই পারে। এই ব্যাপারে কারওর কিছু বলার নেই। কিন্তু কেন এতদিন অনুব্রত মণ্ডলের মত নেতাকে ছাড় দিয়ে রাখা হয়েছে? তিনি গালিগালাজ করেছেন, সেটা বকলমে তো স্বীকার করে নিয়েছে তৃণমূল। তারা অনুব্রত মণ্ডলকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশও তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে। তাহলে আইসির ফোন তদন্তের জন্য যদি বাজেয়াপ্ত করা হয়, সেদিক থেকে কেন অনুব্রত মণ্ডলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে জেরা করতে পারবে না পুলিশ? কত বড় নেতা অনুব্রত মণ্ডল যে, তাকে এইভাবে ছাড় দিতে হবে?

বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্যের পুলিশের লজ্জা বলতে কিছু নেই। এত কিছুর পরেও তারা অনুব্রত মণ্ডলকে প্রশ্রয় দিয়েই যাচ্ছে। আসলে এদের কাছ থেকে সুশাসনের আশা করাই বৃথা। এরা তৃণমূল নেতাদের গালিগালাজ খাবে, আবার সেই তৃণমূল নেতাদের তোষামোদ করবে। এটাই এই রাজ্যের পুলিশের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার পুলিশের মেরুদন্ডকে ভেঙে দিয়েছেন। ২০২৬ এ এই পুলিশের নৈরাজ্য এবং তৃণমূলের নেতাদের দাদাগিরির বিরুদ্ধেই রায় দেবেন সাধারন মানুষ বলেই আশা বিরোধীদের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তদন্তের স্বার্থে যদি বোলপুরের আইসির ফোন বাজেয়াপ্ত করতেই হয় পুলিশকে, তাহলে সত্যিই সেই ব্যাপারে কারওর কিছু বলার নেই। পুলিশ দেখতেই পারে, কোনটা ঠিক কোনটা ভুল। কিন্তু তাহলে কেন এক যাত্রায় পৃথক ফল হচ্ছে? অনুব্রত মণ্ডলকে তাহলে কেন ছাড় দেওয়া হচ্ছে? ঘটনার পর সাত দিন পেরিয়ে গেলেও কেন এখনও তাকে জেরা পর্যন্ত করতে পারল না পুলিশ? পুলিশের কি এটুকু ক্ষমতা নেই যে, অনুব্রত মণ্ডলকে ধমক দিয়ে থানায় নিয়ে আসার! আসলে পুলিশ সব পারে। কিন্তু ওপরতলার নির্দেশ নেই জন্যেই আজকে যে পুলিশ আধিকারিককে অনুব্রত মণ্ডল গালিগালাজ করলেন, তার মা-বউ তুলে কটুক্তি করলেন, সেই পুলিশ আধিকারিকের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়ে গেল, কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। আর এতেই স্পষ্ট, এই রাজ্যের পুলিশ পুরোপুরি তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে বলেই দাবি রাজনৈতিক সমালোচকদের।