প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভার বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনেই শোকপ্রস্তাবকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কে উত্তাল হল রাজ্য রাজনীতি। সোমবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশনে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন, যেখানে প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা, বিধায়ক তাপস সাহা এবং পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। কিন্তু এই তালিকায় ছিলেন না কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনার গুলিতে নিহত ভারতীয় সেনা জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ। এই বিষয়টি নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপি পরিষদীয় দল। আগে থেকেই শমসেরগঞ্জে নিহত হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাসের নাম না থাকায় বিরোধিতা করেছিল তারা, এবার সেই তালিকায় ঝন্টুর নাম না থাকায় প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়।
বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করতে গিয়ে একপ্রকার দেশবিরোধী অবস্থান নিচ্ছেন। তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে শোকপ্রস্তাবের তালিকায়। যদিও এই তালিকা তৈরিতে মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি ভূমিকা নেই, তবে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত তাঁরই রাজনৈতিক ভাবনার প্রতিফলন।’’ বিজেপি এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক এবং নৈতিক প্রশ্ন তোলে, যেখানে দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া এক সেনার নাম বাদ যাওয়াকে তারা দেশবিরোধী অবস্থান বলেই ব্যাখ্যা করছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য না এলেও, বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেবলমাত্র সম্প্রতি প্রয়াত কৃতি ব্যক্তিদেরই এদিন শোকপ্রস্তাবে স্থান দেওয়া হয়েছে। তবে বিজেপি এই যুক্তি মানতে নারাজ। অধিবেশনের শেষে মুর্শিদাবাদের হিংসাত্মক ঘটনায় নিহত দুই পিতা-পুত্রের স্মরণে আম্বেদকর মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে আলাদা শোকপ্রস্তাব পাঠ ও নীরবতা পালন করে বিজেপি বিধায়করা।
বিজেপি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার অধিবেশনে সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানের প্রশংসা করে একটি প্রস্তাব আনা হবে। সেই প্রস্তাবের মাধ্যমেই নিহত সেনা জওয়ান ঝন্টু আলির নাম শোকপ্রস্তাবে না রাখার বিষয়টি পুনরায় তোলা হবে। দলের একাধিক বিধায়ক এই ইস্যুতে জোরালো বক্তব্য রাখার পরিকল্পনা করছেন। শোকপ্রস্তাবের তালিকায় সেনাদের অবদান অগ্রাহ্য করা হলে তা ভবিষ্যতেও রাজ্য রাজনীতিতে বড় বিতর্কের জন্ম দিতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের।