কৃষক ও ক্ষেতমজুরের পর এবার আদিবাসী আন্দোলন জোরদার করে লোকসভার আগে বড় পরিকল্পনা বামেদের রাজ্য March 2, 2019 ক্ষয়িষ্ণু সংগঠন হলেও ১৯’এর লোকসভা নির্বাচনে ফের মাথা তুলে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে নেমেছে আলিমুদ্দিন কর্তারা। রাজ্যে বিগত ৩৪ বছর ধরে যাঁদের একছত্রাধিপত্য ছিল,তাঁদেরই অস্তিত্ব আজ নিভু নিভু। কালের পট পরিবর্তনে তিন দশকেরও বেশি বাম শাসনের ইতি টেনে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তারপর থেকেই সংগঠনে ঘুন ধরেছে বামেদের। একেরপর এক নির্বাচনে খারাপ পারফরম্যান্স দিয়ে বামেদের মনোবল তলানিতে গিয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে সাংগঠনিক শক্তিতে রাজ্য সবথেকে পিছনের সারিতে রয়েছে বামেরা। তাই দেওয়ালে পিঠ ঠেকা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আবার ১৯’এর যুদ্ধ কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে তাঁরা। বেশ কিছুদিন আগে কেন্দ্র ও রাজ্যসরকার বিরোধী আন্দোলন করে রাজনৈতিক গুরুত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেছে বামেরা। হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল ফসলের ন্যা্য্য দাম এ কৃষিঋণ মকুবের মতো বতর্কিত ইস্যুগুলি। দলের কৃষক এবং ক্ষেতমজুর সংগঠনের ব্যানারেই পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশ জুড়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তবে এবার আদিবাসীদের ভোটব্যাঙ্ক দখলে রাখার নয়া পরিকল্পনা করল বামেরা। বাম সূত্রের খবর,আদিবাসীদের জীবন, জীবিকার এবং আশ্রয়ের স্বার্থে জঙ্গলের অধিকার রক্ষায় কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স জারির দাবীকে সামনে রেখে আসরে নামল বামফ্রন্ট। আদিবাসী ফ্রন্টে সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে তারা দলমত নির্বিশেষে আদিবাসী ও বনবাসীদের সমস্যার সঙ্গে যুক্ত যাবতীয় সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে বামেদের তরফ থেকে। আদিবাসীদের স্বার্থ রক্ষার্থে লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্তের কথা সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন দলের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - মূলত বামদের পরামর্শেই আদিবাসী-বনবাসীদের জমির অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য আইন বলবৎ করেছিল প্রাক্তন ইউপিএ সরকার। সেই আইনের ভিত্তিতেই দেশের কয়েক লক্ষ আদিবাসী জঙ্গলের জমির অধিকার পাওয়ার জন্য পাট্টার আবেদন করে। এদের মধ্যে একাংশ পাট্টা পেলেও অনেকেরই আবেদন ঝুলে রয়েছে। রাজ্যে এঁদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এই অবস্থায় পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে বনজ সম্পদ ধ্বংসের ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা রুজু হয়। সেই মামলায় সম্প্রতি আদিবাসীর ওই অধিকারের বিপক্ষে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই জঙ্গল এলাকায় বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ পাট্টাবিহীন আদিবাসীদের ভিটেমাটি উচ্ছেদের আশঙ্কায় জীবন দুর্বার হয়ে উঠছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সূর্যকান্ত বাবু এক বিবৃতিতে কেন্দ্র বিরোধী সুর চড়া করে জানিয়েছেন,উক্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী তেমন কোনো বক্তব্য পেশ করেনি। এ ব্যাপারে কেন্দ্রের গা ঢিলেমি ছিল। তবে বামেরা আজীবন আদিবাসীদের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁদের স্বার্থে লড়াই করেই ওই আইন তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এখন আবার কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তার জন্যে আদিবাসীরা ফের আশ্রয়হীন হতে চলেছেন। এঁদের জীবনের কথা ভেবেই কেন্দ্রীয় সরকারের অর্ডিন্যান্স জারি করা উচিৎ বলেই মনে করছেন তিনি। আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের নানা প্রান্তে আদিবাসী-বনবাসীদের সংগঠিত করে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনার কথা জানালেন তিনি। আর এক্ষেত্রে দলমত নির্বিশেষে সব সংগঠনকেই আদিবাসীদের স্বার্থরক্ষায় এগিয়ে আসতে আহ্বানও করলেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা। আপনার মতামত জানান -