প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পশ্চিমবঙ্গে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে তৃণমূলের নেতা কর্মীরাও দলের নেতা মন্ত্রীদের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না। তলায় তলায় জমতে শুরু করেছে ক্ষোভের আবহ। তৃণমূলের ওপর তলায় সেই বার্তা পৌঁছেছে কিনা, তা কারোরই জানা নেই। তবে আজ যে চিত্র সামনে এলো, যেভাবে নিজের বিধানসভায় গিয়ে তৃণমূল কর্মীদেরই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হলো রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, এমনটাই যদি চলতে থাকে তাহলে কি করে ২৬ এর নির্বাচনী বৈতরণী পার হবে তৃণমূল কংগ্রেস? কি ঘটনা ঘটেছে?

বলা বাহুল্য, এতদিন বিরোধীদের ধমক চমক দেওয়া থেকে শুরু করে হিন্দু সনাতনীদের অপমান করার মত একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল এই সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর বিরুদ্ধে। কিন্তু এবার তিনি নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই রীতিমত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেলেন। যদি বিরোধীরা তাকে বিক্ষোভ দেখাতেন, তাহলে না হয় মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু বিরোধীরা নয়, একেবারে তৃণমূলের নেতা কর্মীদেরই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হলো মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রীকে। যার ফলে সিদ্দিকুল্লা সাহেব তো বটেই, এমনকি তার দলকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিরোধীরা।

জানা গিয়েছে, একুশে জুলাইয়ের প্রচার উপলক্ষে এদিন নিজের বিধানসভা মন্তেশ্বরে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা সেখানকার বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। কিন্তু রাস্তাতে বেশ কয়েক জায়গায় তাকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। যেখানে ঝাঁটা হাতে “সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী গো ব্যাক” স্লোগান দেন কিছু মানুষ। তবে এরা কিন্তু সাধারণ মানুষ বা বিরোধী দলের নেতা কর্মী নন। যারা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তারা তৃণমূলের কর্মী বলেই পরিচিত। আর মন্ত্রীকে যখন দলেরই কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখন সেই মন্ত্রীকে সুরক্ষা দিতে মরিয়া চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। যদিও বা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী দাবি, দলেরই ব্লক সভাপতি এবং তার অনুগামীরা এই ধরনের বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের একজন মন্ত্রীকে দলেরই কর্মীরা যদি এইভাবে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন, তাহলে সাধারণ মানুষের যে তৃণমূলের এই মন্ত্রী থেকে শুরু করে গোটা দলের ওপর ভরসা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না বলেই মনে করছেন একাংশ।

বিজেপির দাবি, একেই বলে ঠেলার নাম বাবাজি। এতদিন মানুষের ওপর অত্যাচার করেছেন তৃণমূলের নেতারা। এই সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর মত মন্ত্রীরা ক্ষমতায় থেকে যা ইচ্ছে তাই বলে হুমকি দিয়েছেন সাধারণ মানুষকে। কিন্তু এবার নিজের দলের কর্মীদের বিক্ষোভের মুখেই তাকে পড়তে হচ্ছে। আগামী দিনে সাধারণ মানুষ যেমন গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে তৃণমূলকে উৎখাত করবে, ঠিক তেমনই তৃণমূলের যারা বঞ্চিত কর্মী, তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্যে দিয়েই নবান্ন থেকে উৎখাত হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।