এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > চূড়ান্ত সফল বিজেপির মিছিল, আত্মপ্রত্যয়ী জেপি নাড্ডা

চূড়ান্ত সফল বিজেপির মিছিল, আত্মপ্রত্যয়ী জেপি নাড্ডা


নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে কলকাতার বুকে অনেকগুলি পদযাত্রা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে 23 ডিসেম্বর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিপুল পরিমাণে জনসমাগম করে মিছিল করার কথা ঠিক করা হয়েছিল।

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধিত নাগরিক আইনের সমর্থনে মিছিলে অসংখ্য মানুষের সমাবেশ করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছিল ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে। তবে 23 তারিখ প্রমাণ হয়ে যায় ভারতীয় জনতা পার্টি তাদের উদ্দেশ্যে রীতিমতো সফল হয়েছে।

এদিন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে মিছিল যে রীতিমতো সাড়া জাগিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কার্যত মিছিলের মাথা যখন শ্যামবাজার, তখন মিছিলের শেষ ছিল মহাত্মা গান্ধী রোডে। ভারতীয় জনতা পার্টির বঙ্গ নেতৃত্বের কাছে এটা যে একটা বিশাল বড় জয়, সেই বিষয়ে একমত প্রায় সকল রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই।

বিজেপি নেতাদের পক্ষে তো বলাই মুশকিল হচ্ছে, ভারতীয় জনতা পার্টির এত বড় মিছিল কলকাতার বুকে কোনদিন হয়েছিল কিনা। অবশ্য কেউ কেউ এই মিছিলকে লোকসভা নির্বাচনের সময় অমিত শাহের কলকাতার মিছিলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তা সত্ত্বেও বলাই বাহুল্য, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে ভারতীয় জনতা পার্টির মহানগরী কলকাতার এই মিছিল রীতিমত আশ্চর্য করে দিয়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিনের মিছিল ছিল বর্ণে ছন্দে পরিপূর্ণ। মিছিলের কোথাও থেকে ধামসা মাদলের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল, আবার কোথাও থেকে সিংগার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল। কোথাও আবার চোখে পড়ছিল বাংলা ঢাকের তালে কোমর দোলাচ্ছেন দলীয় কর্মী সমর্থকরা। কোথাও আবার দেখা গিয়েছে সুন্দরভাবে সাজানো ট্যাবলো। আর সবথেকে বেশি নজড় কেড়েছে সাধারণ মানুষের জনসমাগমের আধিক্য।

যা এতই বেশি ছিল যে, সেন্টাল অ্যাভিনিউয়ের কাছে দুই লাইনের রাস্তা দখল করে নিয়েছিল পদ্মফুল শিবিরের কর্মী সমর্থকরা। তবে রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির তিনটে উপনির্বাচনে পরাজয়ের পরে যে রকম জায়গায় পৌছে গিয়েছিল, সেখান থেকে ইউটার্ন নিয়ে কল্লোলিনী তিলোত্তমাতে এত বড় জনসমাগম যুক্ত মিছিল আয়োজন করা রীতিমত আশ্চর্য্যের বিষয় বলে মনে করছেন অনেকে। জানা গেছে, 23 তারিখের মিছিলে সর্বভারতীয় বিজেপির কার্যকারী সভাপতি জেপি নাড্ডা যোগদান করাতে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে এই মিছিল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

তাই মিছিলকে বৃহৎ আকৃতির প্রদান করা বিশাল বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের কাছে। তবে এদিনের মিছিলে উপচে পড়া জনসমাগম রীতিমতো মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী সমর্থকদের বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ওয়েলিংটন থেকে দুপুর দুটোর সময় শুরু হয় ভারতীয় জনতা পার্টির মিছিল। মিছিলের জনসমাগম তখন অবশ্য ছাড়িয়ে গিয়েছিল লেলিন সরণি। ইতিমধ্যেই মিছিলের চাপে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল সেন্টাল অ্যাভিনিউ।

স্বেচ্ছাসেবকদের তরফ থেকে মিছিলের ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য দড়ি দিয়ে চারটি ব্যারিকেট নির্মাণ করা হয়েছিল। যে ব্যারিকেডের প্রথমে খোলা জিপে ছিলেন জেপি নাড্ডা। আর তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। অন্যদিকে মিছিলে পা মিলিয়ে ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা, মুকুল রায়, ভারত সরকারের মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী ও বাবুল সুপ্রিয়। বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, লকেট চট্টোপাধ্যায়, নিশীথ প্রামাণিক, অর্জুন সিং, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত থেকে শুরু করে অন্যান্য হেভিওয়েট বিজেপি নেতৃত্ব।

দ্বিতীয় ব্যারিকেডে ছিলেন দলের বিধায়ক এবং রাজ্য নেতৃত্ব ও সাংসদরা। এদিনের মিছিলে মতুয়া সমাজের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। মতুয়া সমাজের কীর্তনীয়া সম্প্রদায় এদিনের মিছিলকে আরও বেশি সুশোভিত করে তোলে। ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় কার্যকারী সভাপতি রীতিমতো হাত নাড়িয়ে কর্মী-সমর্থকদেরকে অভিবাদন করতে থাকেন। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে থেকে “জয় শ্রীরাম” “মোদি মোদি”, স্লোগান উঠতে থাকে।

মিছিল দেখে রীতিমতো অভিভূত হয়ে পড়েন ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যকারী সভাপতি জেপি নাড্ডা। তিনি বলেন, “অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখলাম। বিশাল মিছিল। মানুষ স্বাগত জানাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে। এই বিশাল স্বতঃস্ফূর্ত জনসমাগম বলছে, সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের পক্ষে বাংলা বাংলার মানুষ নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আছেন।” মিছিলের শেষে ভূপেন্দ্র বোস অ্যাভিনিউতে বিশাল মঞ্চ করা হয়েছিল বঙ্গ বিজেপির পক্ষ থেকে।

সেই মঞ্চে বক্তব্য রেখেছেন সর্বভারতীয় বিজেপির কার্যকারী সভাপতি জেপি নাড্ডা, ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। এদিনের মঞ্চ থেকে দিলীপ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী অনুপ্রবেশকারীদের হয়ে কাজ করছেন। বাংলায় সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের বিরোধিতায় অশান্তি রুখতে পুলিশের গুলি চালানো উচিত ছিল।” আর এই মঞ্চ থেকেই তৃণমূলের উদ্দেশ্যে করা হুঁশিয়ারি বার্তা প্রদান করেন ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় কার্যকারী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা।

তিনি বলেন, “লোকসভায় ট্রেলার হয়েছে। কিন্তু 2021 সালে পুরো সিনেমা দেখবে তৃণমূল। আমি এর আগেও বাংলায় এসেছি। কিন্তু কোনোদিন এই দৃশ্য দেখিনি। অল্প রাস্তা আসতে 3 ঘণ্টার বেশি সময় লাগল। ছাদ থেকেও মানুষ হাত নারছিল। কেউ কেউ জানালা দিয়ে ফুল ছুড়ছিলেন। এটাই হাওয়াবদলের সংকেত।

আশা করি, মমতা দিদি এটা বুঝতে পেরেছেন।” ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, যেহেতু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা শহরের বুকে তিন-তিনবার সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে মিছিল করেছিলেন, সেহেতু নাগরিক আইনের সমর্থনে সেই কলকাতাকেই বেছে নিয়েছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর এদিনের মিছিলে ভারতীয় জনতা পার্টি যে 100% সফল হয়েছেন, সেই বিষয়ে সংশয় নেই বিশেষজ্ঞদের মনে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!