প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- কালীগঞ্জে উপনির্বাচনের ফলাফলের পরে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তার ফলে এমনিতেই তৃণমূল অস্বস্তিতে। যেভাবে তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে ৯ বছরের নাবালিকার উদ্দেশ্যে বোমা ছোড়া হয়েছে এবং তার মৃত্যু হয়েছে, তাতে শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই সেই নিহত নাবালিকার পরিবার সুবিচারের দাবিতে গর্জে উঠছেন। শুধুমাত্র তারা বিরোধী রাজনীতি করেন বলে তার এই ছোট্ট মেয়েটাকে প্রাণ হারাতে হলো বলে দাবি করছেন। আর তার মধ্যেই দেখা যায় যে, ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর সেই বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন এবং নিহত নাবালিকার মায়ের হাতে একটি হলুদ খাম দিয়ে কিছু অর্থনৈতিক সাহায্য করার কথা বলছেন। আর সাথে সাথেই সেই নিহত নাবালিকার মা গর্জে উঠেছেন এবং তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, এই সমস্ত কিছু তিনি নেবেন না। তারপরে এমনিতেই কালীগঞ্জের ঘটনা নিয়ে তৃণমূল অস্বস্তিতে ছিল, তার মধ্যে দলীয় বিধায়কের এই কীর্তি সামনে আসার পরে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তৃণমূল। আর অবশেষে এবার সেই ঘটনায় নেওয়া হলো পদক্ষেপ।

জানা গিয়েছে, এদিন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে শোকজ করা হয়। যেখানে তাকে একটি শোকজের চিঠি পাঠিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। যেখানে লেখা রয়েছে, “নদীয়ার কালীগঞ্জে সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচন উপলক্ষে একটি নিদারুন ঘটনা ঘটে গিয়েছে। অত্যন্ত সংবেদনশীল এই দুঃখজনক ঘটনায় পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বিশেষভাবে অবগত আছেন এবং প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এই ব্যাপারে গত ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে দলের অনুমতি ছাড়াই আপনার অযাচিত হস্তক্ষেপ আমাদের দলের ভাবমূর্তিকে যারপরনাই আঘাত করেছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের এই আচরণের জন্য আপনাকে আগামী তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।”

তবে তৃণমূল দলীয় বিধায়ককে এইভাবে শোকজ করলেও এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিতে রাজি নয় বিজেপি। তাদের বক্তব্য, তৃণমূলের এই বিধায়ক দলের অনুমতি ছাড়া টাকা নিয়ে সেই বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন, এটা কেউ মানবে না। আসলে তৃণমূলের এটা একটা নাটকের সুন্দর চিত্রনাট্য। তারা নিজেরাই টাকা পাঠিয়ে সেই পরিবারের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এখন বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসার কারণে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে দলীয় বিধায়ককে লোক দেখানো শোকজ করা হয়েছে। এসব করে কোনো লাভ নেই। দলীয় বিধায়কের মাধ্যমে তৃণমূলই সেই বাড়িতে টাকা পাঠানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের আসল উদ্দেশ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাই এখন দলীয় বিধায়ককে এমনি নাম কে ওয়াস্তে শোকজ করে নিজেদের ভাবমূর্তি যাতে স্বচ্ছ রাখা যায়, তার জন্য চেষ্টা শুরু করেছে শাসক দল। আর তৃণমূল হচ্ছে গরুর গাড়ির হেডলাইট। কাজেই এই দলের শোকজ বা সাসপেন্ডের বিন্দুমাত্র গুরুত্ব নেই বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।