প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- কিছুদিন আগেই এই রাজ্যে খড়্গপুরে এক তৃণমূল নেত্রীর দিদিগিরি প্রকাশ্যে আসে। যেখানে এক প্রবীণ বিরোধী দলের নেতাকে যেভাবে রাস্তায় ফেলে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল সেই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে, তাতে গোটা রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছিল সমালোচনার ঝড়। সকলের মধ্যে একটাই প্রশ্ন ছিল যে, বিরোধী নেতা বলেই কি তাকে এইভাবে হেনস্থা করলেন তৃণমূলের এই নেত্রী? আর যে বিরোধী নেতাকে হেনস্থা করা হলো, তিনি তো সেই তৃণমূল নেত্রীর পিতার বয়সী। তাহলে এইভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় তাকে মারধর করা কোন সৌজন্যের মধ্যে পড়ে? এর জন্য কি সেই তৃণমূল নেত্রীর কোনো শাস্তি হবে না, নাকি শুধুমাত্র তিনি তৃণমূল করেন বলে অনুব্রত মণ্ডলের মত তাকেও ছাড় দিয়ে রেখে দেবে এই রাজ্যের পুলিশ? তবে এবার পুলিশের আচরণ দেখে গোটা বিষয়টি যে ভালো ঠেকছে না, তা বুঝতে পেরেই সেই তৃণমূল নেত্রীকে শায়েস্তা করতে একেবারে হাইকোর্টে পৌঁছে গেলেন খড়্গপুরে তৃণমূল নেত্রীর হাতে আক্রান্ত হওয়া বাম নেতা অনিল দাস।
বলা বাহুল্য, গত তিন দিন আগে খড়্গপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় এক প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাসকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, কেন পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা নিয়েই উঠতে শুরু করেছিল প্রশ্ন। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র তৃণমূলের নেত্রী বলেই কি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস দেখাচ্ছে না পুলিশ? পুলিশের মেরুদন্ড কি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে গিয়েছে? এই সমস্ত প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিল বিরোধীরা। তবে তার মাঝেই এবার সেই তৃণমূল নেত্রীকে শায়েস্তা করতে এবং এই রাজ্যে যে পুলিশ অপ্রাসঙ্গিক এবং তৃণমূলের কেউ কোনো দোষ করলে যে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয় না, তা বুঝিয়ে দিয়ে সুবিচার পেতে হাইকোর্টে পৌঁছে গেলেন সেই প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাস। জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকেই তার দায়ের করা এই মামলার শুনানি হতে পারে।
কিন্তু শুধুমাত্র পুলিশ অপ্রাসঙ্গিক বলেই কি তিনি আদালতের শরণাপন্ন হলেন? কেন তিনি পুলিশের ওপর ভরসা রাখতে পারলেন না? এদিন এই প্রসঙ্গে আক্রান্ত সেই বাম নেতা অনিল দাস বলেন, “পুলিশের ওপর ভরসা রাখতে পারছি না। তারা চুপ। তাই হাইকোর্টে মামলা করলাম। বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা আছে। ন্যায়বিচার নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে।” যদিও বা যে তৃণমূল নেত্রী এইভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় একজন প্রবীণ বাম নেতাকে মারধর করেছেন, সেই প্রবীন বাম নেতার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। কিন্তু সেই অভিযোগ কতটা সত্যি, তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ তৃণমূলের সেই নেত্রী এখন অত্যন্ত চাপে পড়ে গিয়েছেন। তাই নিজের দোষকে ঢাকার জন্য সেই প্রবীণ বাম নেতাকে বদনাম করতে এই সমস্ত চেষ্টা জারি রেখেছেন বলেই দাবি বিরোধীদের। তবে শেষ পর্যন্ত যেভাবে তৃণমূলের এই দাপুটে নেত্রীর দিদিগিরি বন্ধ করতে আদালতে পৌঁছে গেলেন প্রবীণ বাম নেতা, তাতে আগামী দিনে আদালত কি নির্দেশ দেয় এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কতটা চাপে পড়েন সেই তৃনমূল নেত্রী, সেদিকেই নজর থাকবে রাজ্যবাসীর।