প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
অতীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেশ কিছু বিরোধী দলনেতা দেখেছে বাংলা। কিন্তু ২০২১ সালের পর যেভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে লড়াই করতে দেখছে বাংলার মানুষ, আর যেভাবে সেই লড়াইয়ে ভয় পেয়ে যাচ্ছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাকে প্রতিমুহূর্তে কাবু করে দিচ্ছেন শুভেন্দুবাবু, তাতে ২০২৬ এর আগে যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে, তার ফলে কিন্তু এবার বড় চাপে পড়তে চলেছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। অন্তত তেমনটাই দাবি বিরোধীদের। গোটা রাজ্যবাসী জানে যে, সম্প্রতি কসবা যে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তা কতটা মর্মান্তিক এবং নিন্দা জনক। যে ঘটনার সঙ্গে আবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক প্রাক্তন নেতার যোগ থাকার খবর সামনে এসেছে। আর সেই ঘটনাকে হাতিয়ার করেই যে প্রতিমুহূর্তে শাসককে চাপে তুলে দেওয়া রাজ্যের বিরোধী দলনেতা প্রকট ভাবে ময়দানে নেমে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াবেন, সেই ভাবনা সকলের মধ্যেই ছিল। আর এবার সেই কসবা গণধর্ষন কান্ডের প্রতিবাদ সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বলে দিলেন আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে, তাতে প্রবল চিন্তা বাড়তে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নবান্নের অন্দরে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বলা বাহুল্য, এর আগে আরজিকরের ঘটনা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে বীভৎস প্রতিবাদ হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই প্রতিবাদের আগুন কালের নিয়মে থেমে গিয়েছে। আর এবার কসবায় যে গণধর্ষণের মত ঘটনা ঘটেছে, যেভাবে শাসকদলের ঘনিষ্ঠ ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন নেতার যোগ থাকার কথা সামনে এসেছে, তারপর রাজ্যের মানুষ আর মুখ বুজে থাকতে পারছেন না। তবে রাজ্যের মানুষকে পথে নামাতে এবার মোক্ষম কাজটা করে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শাসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জুলাই মাস জুড়ে ভরপুর আন্দোলনের কথা জানিয়ে দিলেন তিনি। পাশাপাশি যতদিন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করা যায়, ততদিন রাজ্যজুড়ে কন্যা সুরক্ষা অধিকার যাত্রা চলবে বলেও আগামীর পরিকল্পনা বেঁধে দিলেন বিরোধী দলনেতা। শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগেই অভয়ার মত যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তাতে সেই অভয়ার বাবা-মাকে আগামী ৯ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়ারও আবেদন জানালেন শুভেন্দু অধিকারী। গোটা রাজ্যের মানুষের কাছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার আবেদন, পতাকা থাকলে পতাকা এবং পতাকা না থাকলে পতাকা ছাড়া সকলে মিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করার জন্য অন্তত রাস্তায় নামুন। কারণ এই তৃণমূল দল ধর্ষকদের দল বলে গর্জে উঠেছেন তিনি।
বিজেপির দাবি, শুভেন্দু অধিকারীর এই ডাকে সাড়া দিয়ে গোটা রাজ্যের মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। কারণ তৃণমূল সরকার থাকলে কারওর ঘরের মা, বোন, মেয়ে সুরক্ষিত থাকবে না, এটা আজকে দিনের আলোর মত পরিষ্কার। আরজিকরের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও তৃণমূল নেতাদের জন্য যেভাবে কলেজের ভেতরে এক ছাত্রীর মান সম্মান নিয়ে খেলা হলো, তাতে এই তৃণমূলের আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তাই অবিলম্বে রাজ্য জুড়ে আন্দোলন করার পাশাপাশি সকলের প্রধান লক্ষ্য থাকা উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করা। তাই আগামী দিনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই সরকারকে উৎখাতের আগে নবান্ন অভিযান করে রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক দপ্তরকে হেলিয়ে দিতে হবে বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারী এবার যে মুডে ময়দানে নেমেছেন, তাতে আর নিস্তার পাবেন না এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। রাজনৈতিক ভাবে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তাকে কি করে কাবু করতে হয়, ২০২৬ এর আগে এই কসবা গণধর্ষণ কান্ড ঘটে যাওয়ার ফলে সেই ঘটনার প্রতিবাদ করে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে তৃণমূলকে জবাব দেওয়ার রাস্তা তৈরি করে ফেলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন বিরোধী দলনেতার এই ফর্মুলা অনুযায়ী যদি রাজ্যের দল মতের ঊর্ধ্বে উঠে সমস্ত মানুষ একত্রিত হয়ে তৃণমূল সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চান তাহলে তৈরি হবে ভয়ংকর প্রতিবাদ। সেই প্রতিবাদের আগুনে ছারখার হয়ে যাবে শাসক দলের সোনার সংসার বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।