প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজনীতিতে কেউ চায় না, তার বিকল্প হিসেবে কেউ উঠে আসুক। যদি কেউ উঠেও আসে, তাহলে শুরু হয়ে যায় তার সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই। এবার কি সেটাই দেখা যাবে নদীয়া জেলায়? কেননা একসময়ের কর্পোরেট লাইফ থেকে রাজনীতিতে এসে নিজের চিন্তাশক্তি বিস্তার ঘটিয়ে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। আর এবার তার মতই সেই জেলার কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে উঠে আসলেন প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের মেয়ে আলিফা আহমেদ। যাকে অনেকেই মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে তুলনা করছেন। তবে মহুয়াদেবী যেভাবে সাফল্য পেয়েছেন, সেই সাফল্য কি আলিফা আহমেদ পাবেন, তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে জেলা রাজনীতিতে।
বলা বাহুল্য, আগামী ১৯ জুন নদীয়ার কালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন রয়েছে। যেখানে তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রার্থী করা হয়েছে সেখানকার প্রয়াত বিধায়কের মেয়ে আলিফা আহমেদকে। জানা গিয়েছে, তার সঙ্গে মহুয়া মৈত্রের অনেকটা মিল রয়েছে। কেননা একসময় বিদেশী সংস্থার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার ছিলেন এই মহুয়া মৈত্র। আর কালিগঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে যাকে পার্থী করা হয়েছে, সেই আলিফা আহমেদ একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি করেন। তবে মহুয়া মৈত্র রাজনীতিতে আসার পর যেভাবে মাঠঘাট চষে বেরিয়েছেন, আলিফা আহমেদ কি সেটা পারবেন?
যদি সেটা তিনি করতে সমর্থ্য হন, তাহলে তো আগামী দিনে মহুয়া মৈত্রকে টেক্কা দিতে তাকে অনেকটাই পরিশ্রম করতে হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে অনেকেই বলছেন, দুজনেই তো এক দলেরই নেত্রী। মহুয়া মৈত্র অনেক বিচক্ষণ, আর আলিফা আহমেদ এবার বিধানসভা ভোটে লড়ছেন। ফলে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হবে, এমনটা ভাবা অত্যন্ত মুর্খামির পরিচয় বলেই দাবি ঘাসফুলের।তবে রাজনীতিতে যে এর আগে পরীক্ষার মুখে পড়েননি আলিফা আহমেদ, তেমনটা কিন্তু বলা যাবে না।
২০১১ সালে বাবা ভোটে লড়ার সময় থেকেই তিনি নেপথ্যে থেকে বিভিন্ন কাজকর্ম পরিচালনা করতেন। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালে নদিয়ায় জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবেও জয়লাভ করেন এই আলিফা আহমেদ। তাই রাজনীতিতে তিনি একেবারেই আনকোরা, সেটা মানতে নারাজ অনেকেই। এদিন তৃণমূলের কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী আলিফা আহমেদ বলেন, “আমি আমার দায়িত্ব নিয়ে সম্পূর্ণ সচেতন। তাই জয় নিয়েও আত্মবিশ্বাসী। বাবা আমার রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা। হাতে ধরে রাজনীতি শিখিয়েছেন। বাবার দেখানো পথেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে চাই।”
তবে মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে যেভাবে আলিফা আহমেদের তুলনা করা হচ্ছে, মহুয়া মৈত্র যেভাবে কর্পোরেট লাইফ থেকে এসে ভোটের রাজনীতিতে সাফল্য পেয়েছেন এবং উত্তরোত্তর তার রাজনৈতিক গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেক্ষেত্রে আলিফা আহমেদকে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ে এসে মহুয়া মৈত্রকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছেন? বিকল্প ভরকেন্দ্র তৈরি করার চেষ্টা করছেন এই নদীয়া জেলায়? এদিন এই প্রসঙ্গে এক তৃণমূল নেতা বলেন, “আলিফা আহমেদ অবগত যে, গ্রামের মানুষের দুঃখ দুর্দশা, তার কর্পোরেট চাকরির ড্যাশবোর্ডের সংখ্যা নয়, বরং কঠিন বাস্তবতা। কৃষকের সমস্যা থেকে শুরু করে মেয়েদের স্কুল ছুটের হিসাবে, এইসবের সমাধান শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে বসে হয় না। মাঠে দাঁড়িয়ে তাকে করতে হবে। আমার বিশ্বাস, লাল সাহেবের মেয়ে সেটা করে দেখাবেন।” অন্যদিকে জুলফিকর আলির মত তৃণমূল নেতা মহুয়া মৈত্র যেভাবে সাফল্য দেখিয়েছেন, আলিফা আহমেদকে এখন তার সেতু বানাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন। এক্ষেত্রে গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তার প্রধান কর্তব্য হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।