প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে বারবার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বারবার প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বড় বড় গলায় দাবি করেন যে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিয়ে সমস্ত সুবিধে পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র তো সম্পূর্ণ আলাদা। এক্ষেত্রে তো স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বেশিরভাগ হাসপাতাল গ্রহণ করতে চায় না বলেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এবার সেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়ে এক রোগী যে ভয়ংকর বিপদের মুখে পড়ে গেলেন, তার জন্য একমাত্র দায়ী ডাক্তার থেকে শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? তাদের কারণেই কি এক রোগীর এত বড় সর্বনাশ হয়ে গেল! কি ঘটনা ঘটেছে?

জানা গিয়েছে, সোদপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস নামে এক ব্যক্তি নিজের হার্নিয়ার সমস্যার জন্য পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান। আর সেই হাসপাতাল থেকেই তাকে এক ডাক্তারবাবু নিজের নার্সিংহোমে পাঠিয়ে দেন। তিনি বলেন যে, সেখানে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধে পাওয়া যাবে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ডাক্তারবাবুর সেই নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে হার্নিয়া অপারেশন করার খরচ না থাকলেও, ছিল এপেন্ডিক্স বাদ দেওয়ার খরচ। যার ফলে সেই চিকিৎসক শুধুমাত্র নিজের সুবিধের জন্য নিজের নার্সিংহোমের টাকা বাড়ানোর জন্য সেই রোগীকে নিয়ে এসে হার্নিয়ার বদলে তার অ্যাপেন্ডিক্স কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, সেই চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে যে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ক্ষেত্রে তাহলে প্রশাসনের নজরদারি কোথায়? সরকারি হাসপাতালে কেন তার চিকিৎসা না করিয়ে সেই ডাক্তারবাবু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিয়ে সমস্ত চিকিৎসা করিয়ে দেওয়া হবে বলে তার নিজের নার্সিংহোমে পাঠালেন? এক্ষেত্রে সেই চিকিৎসকের কি শাস্তি হবে না? একজন রোগীর এত বড় ক্ষতি করে দেওয়ার পরেও, কি সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেবে না প্রশাসন?

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উত্তর চব্বিশ পরগনার সিএমএইচ। এদিন সিএমওএইচ ডাক্তার সমুদ্র সেনগুপ্ত বলেন, “এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আগেও অনেক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যদি তদন্তে দোষী প্রমাণিত হয়, তাহলে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” কিন্তু যার ক্ষতি হওয়ার, তার তো ক্ষতি হয়ে গেল! তাহলে সেই ক্ষতি পূরণ হবে কি করে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো অনেক ঘটা করে এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের প্রচলন করেছিলেন! সেই কার্ডের এরকম অপব্যবহার কি তার নজরে আসছে না? শুধুমাত্র টাকা বাঁচানোর নাম করে নিরীহ রোগীদের একটা অপারেশন করার বদলে আর একটা অপারেশন করে তাদের শরীরের যে ক্ষতি করে দিলেন এই চিকিৎসক, তার মাশুল কি দিতে পারবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।