প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক যে খুব একটা ভালো নেই, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। পাকিস্তানকে অপারেশন সিঁদুরের মধ্যে দিয়ে ভারত জবাব দিতেই অনেকেই দাবি করছিলেন যে, এবার বাংলাদেশকেও ট্রিটমেন্ট দেওয়া হোক। কারণ বাংলাদেশে যেভাবে ইউনুস সরকার ভারত বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করছে, তাতে তাদের একটু ট্রিটমেন্ট দিলেই তারা পথে চলে আসবে। কিছুটা হলেও তাদের শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। আর এই সমস্ত দাবি যখন ভারতবাসীর মধ্যে থেকে উঠছে, ঠিক তখনই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুসের কাছে একটি চিঠি পাঠালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু হঠাৎ করে এই চিঠি পাঠানোর কারণ কি? কি রয়েছে সেই চিঠিতে? তবে শুধু নরেন্দ্র মোদীই চিঠি পাঠাননি। পাল্টা ইউনূসের পক্ষ থেকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে চিঠি।

 

জানা গিয়েছে, গত ৪ জুন ঈদ উপলক্ষে ভারতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনুসকে একটি চিঠি পাঠান। যে চিঠিতে লেখা রয়েছে, “ভারত সরকার এবং জনগণ কর্তৃক আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই পবিত্র উৎসব ভারতের সমৃদ্ধ ও বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং দেশ জুড়ে লক্ষ লক্ষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ এটিকে প্রচুর আনন্দ উৎসাহের সঙ্গে উদযাপন করেন। এটি আমাদের ত্যাগ, করুণা ও ভ্রাতৃত্বের চিরন্তন মূল্যবোধের কথা মনে করিয়ে দেয়। যা একটি শান্তিপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গঠনে অপরিহার্য।” ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাঠানো এই চিঠি পোস্ট করেছে বাংলাদেশ সরকার।

 

তবে শুধু নরেন্দ্র মোদী চিঠি পাঠিয়েছেন, তাই নয়। তার চিঠির পাল্টা নরেন্দ্র মোদীকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মহম্মদ ইউনুস। তিনিও চিঠি পাঠিয়ে লিখেছেন, “ঈদ-উল-আযহা হলো প্রতিফলনের একটি সময়, যা সম্প্রদায়গুলিকে একত্রিত করে এবং আমাদের সকলকে বিশ্বজুড়ে মানুষের বৃহত্তর কল্যাণের জন্য একসাথে কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত দেয়। আমি নিশ্চিত যে, পারস্পারিক শ্রদ্ধা এবং বোঝাপড়ার চেতনা আমাদের জাতিগুলিকে আমাদের জনগণের কল্যাণের জন্য একসাথে কাজ করার জন্য পরিচালিত করবে। এই শুভ উপলক্ষে আমি আপনার সুস্বাস্থ্য ও শুভ কামনা করছি এবং ভারতের জনগণের শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি কামনা করছি।”

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমানে কিছুটা হলেও ঠান্ডা লড়াই চলছে। গোটা দেশ দাবি করছে যে, বাংলাদেশকে কিছুটা হলেও শিক্ষা দেওয়া হোক। কিন্তু সেই সময় সৌজন্যতা এবং পারস্পারিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে চললে যে ভালো হয়, সেটা খুব ভালো করেই জানেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রথমেই তিনি যুদ্ধের পক্ষে নন। তাই ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ বাসী এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন। পাল্টা বাংলাদেশের সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এই সৌজন্যতা শুধু চিঠি চাপাটিতে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকলেই হবে না। পারস্পারিক বোঝাপড়া এবং দুই দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রেও যাতে এই মনোভাব বজায় থাকে, সেটাই আশা করছেন সকলে। আর যদি তা না হয়, তাহলে ক্রমশ তিক্ত হয়ে উঠবে সম্পর্ক। তাই চিঠিতে যেমন একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, ঠিক তেমনই বাস্তবেও বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এবং মিলনের বন্ধন অটুট থাকুক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।