প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
তিনি দলের অনেক পুরনো কর্মী। একসময় জেলা স্তরে যুব সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক থেকে দীর্ঘদিন আরএসএস করা সুবক্তা বলে পরিচিত শমীক ভট্টাচার্যের হাতেই এখন বঙ্গ বিজেপির দায়িত্ব। তাই নাম ঘোষণার পরে সুকান্ত মজুমদারের চেয়ারে বসেই এতদিন ধরে বঙ্গ বিজেপির মধ্যে সবথেকে বেশি যে প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করেছে, যে আদি নাকি নব্য, কাদের জন্য ধীরে ধীরে বাংলায় উত্থান হচ্ছে বিজেপির! এর পেছনে মূল কৃতিত্ব কাদের? এই প্রশ্ন নিয়ে কর্মীদের মধ্যে যখন দড়ি টানাটানি হচ্ছে, ঠিক তখনই প্রথম সংবর্ধনা সভা থেকে সভাপতি হিসেবে নিজের অনুভূতি এবং মনোভাবের কথা ব্যক্ত করলেন শমীক ভট্টাচার্য। পুরোনো এবং নতুনের মিশেলের মধ্যে দিয়েই যে বিজেপি এগিয়ে যাবে, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন তিনি। অর্থাৎ কোনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, কোনো আদি, নব্যের লড়াই নয়, যার হাতে পতাকা, সেই মন থেকে বিজেপি বলেই দাবি নয়া সভাপতির।

গতকাল বিজেপির নয়া রাজ্য সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষণা হয় শমীক ভট্টাচার্যের। আর সায়েন্স সিটিতে এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন শমীকবাবু। কর্মীদের মধ্যে চলা প্রশ্নের উত্তর নিজেই সভা মঞ্চ থেকে দিয়ে দেন তিনি। একদিকে পুরোনো মানুষদের পরিশ্রমের কথা যেমন উল্লেখ করেন, ঠিক তেমনই নতুন কর্মীরা দলে এসেছে জন্যেই যে দলের শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে, সেই কথাও বলতে বাকি রাখেননি রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ।

গতকালের সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “যারা পুরনো, তারা মনে রাখবেন, নতুন মানুষ পার্টিতে না এলে পার্টি বাড়বে না। আমরা তো আর কুমোরটুলি থেকে কর্মী বানিয়ে আনব না। দলে সমস্ত স্তরের মানুষ দরকার। মনে রাখবেন, পুরোনো মানুষগুলো পরাজয় হবে জেনেও, জামানত বাজেয়াপ্ত হবে জেনেও পতাকা ধরে রেখেছিলেন। তাদের জন্যই বিজেপি আজ এই জায়গায়। এখন যার হাতে পতাকা, সেই বিজেপি। যে সক্রিয়, সেই বিজেপি। আপনি পাড়ায় প্রাসঙ্গিক কিনা, মানুষ আপনাকে চেনে কিনা, মানুষ আপনাকে বিজেপি বলে পরিচয় দেয় কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একেই বলে, পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে। শমীক ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত আছেন। শাসকের পক্ষ থেকে বহু প্রলোভন থাকা সত্ত্বেও, তিনি দলবদলের মত সিদ্ধান্ত নেননি। দল তাকে যখন যে কাজে লাগিয়েছে, তিনি সেই কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। যার পুরস্কার আজকে তিনি বিজেপির মত দলে একটি প্রদেশের সভাপতি হিসেবে পেলেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে দল করার সুবাদে তিনি কর্মীদের মনে চলা কৌতুহল এবং যন্ত্রণার কথা জানেন। তাই নতুন এবং পুরোনোর যে দ্বন্দ্বের কথা বিজেপিতে বলা হচ্ছে এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই দ্বন্দ্বকে সামনে এনে বিজেপিকে বিরম্বনার মুখে ফেলা হচ্ছে, সেই সম্পর্কিত যাবতীয় জল্পনার উত্তর দিয়ে নতুন-পুরোনোর দ্বন্দ্ব নয়, বরঞ্চ যার হাতে বিজেপির পতাকা, যাকে মানুষ চেনে, সেই বিজেপি বলে জানিয়ে দিলেন নয়া সভাপতি।