প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বর্তমানে দীঘায় রয়েছেন। কারন আগামীকাল রথযাত্রা। আর কিছুদিন আগেই দীঘায় তার উদ্যোগে, বলা ভালো, তার সরকারের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে জগন্নাথ মন্দির। যদিও বা তাকে মন্দির হিসেবে মানতে নারাজ বিজেপি। তাদের বক্তব্য, এটা একটা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। সরকার তাদের টাকায় এরকম কোনো মন্দির তৈরি করতে পারে না। যদিও বা সেটাকে মন্দির হিসেবেই আখ্যা দিয়ে আগামীকাল রথ যাত্রার কারণে প্রথমবার যেহেতু সেখানে রথযাত্রা হচ্ছে, তাই আগেভাগেই প্রস্তুতিতে যাতে কোনো খামতি না থাকে, তার জন্য সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দফায় দফায় তিনি প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আর তার মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন হিন্দু সাজার চেষ্টা করলেও, রথযাত্রা উপলক্ষে তিনি দীঘায় গিয়ে নিজেকে বড় হিন্দু হিসেবে সকলের সামনে প্রতিষ্ঠিত করলেও, তার সরকারের আমলে এই রাজ্যে যে সমস্ত ঘটনা ঘটে গিয়েছে এবং যেভাবে হিন্দুরা বিপন্ন হয়েছে, এবার তা নিয়েই দীঘা সফরে থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

এদিন সুকান্তবাবুকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন হয়ত দীঘার রথযাত্রা নিয়ে মাতামাতি করছেন ঠিকই। তবে সম্প্রতি রাজ্যে ঘটে যাওয়া মালদহ থেকে শুরু করে মুর্শিদাবাদের মত ঘটনা, যেখানে হিন্দুদের মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়েছে, এমনকি সাম্প্রতিককালে মহেশতলার রবীন্দ্রনগরে যেভাবে তুলসী গাছ তুলে ফেলা হয়েছে এবং তাকে অপমান করা হয়েছে, সেই সমস্ত ঘটনা তুলে ধরেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন যে, এখন তো তিনি রথযাত্রা পালন করার জন্য দীঘাতে যাচ্ছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে যে হিন্দুদের আর কোনো মন্দির ভাঙ্গা হবে না, এইরকম গ্যারান্টি কি দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী?

সুকান্তবাবু বলেন, “উনি তো এখন নিজেই রাজনীতির রথে নেমে গেছেন হিন্দু সাজার চেষ্টা করছেন। এখন হিন্দু সেজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়ে যা করছেন, সব তো বুঝলাম, ভালো। কিন্তু বেলডাঙ্গার মন্দির, ব্যান্ডাল বা মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে যে মন্দিরগুলো ভাঙ্গা হলো, তার কি হবে? মহেশতলায় তুলসী গাছ উপড়ে ফেলে দেওয়া হলো, আগামীদিনে যে এসব হবে না, তার জন্য আপনার প্ল্যানিং কি? আগামী দিনে যে মন্দির ভাঙ্গা হবে না, তার জন্য আপনি কি ব্যবস্থা নিয়েছেন?”

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীঘায় গিয়ে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি হিন্দুদের ভালোবাসেন এবং সব ধর্মকে সম্মান করেন। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এই রাজ্যের বুকে মালদহ থেকে মুর্শিদাবাদ, এমনকি মহেশতলার মত জায়গায় যে ঘটনাগুলো ঘটে গিয়েছে, তার ফলে এই রাজ্যের প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে একটা বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে। তাদের মধ্যে একটাই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে যে, একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়, তারা বারবার করে এসে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির থেকে শুরু করে তুলসী গাছে আঘাত করছে, অথচ এই রাজ্যের প্রশাসন সেসব আটকাতে কেন সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে না? এই প্রশ্ন সাধারন মানুষদের মাথায় ঘুরতে শুরু করেছে। আর তার মধ্যেই বিরোধীদের প্রতিবাদ সেই প্রশ্নকে আরও দীর্ঘায়িত করছে। আর এসবের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীঘায় জগন্নাথ মন্দির করার পর আগামীকাল রথ যাত্রার জন্য সেখানে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিলেও এবং নিজেকে কট্টর হিন্দু হিসেবে সকলের সামনে তুলে ধরার প্রচেষ্টা চালালেও, সুকান্ত মজুমদার যে প্রশ্নটা ছুড়ে দিলেন, তা কিন্তু গলার কাঁটার মতো বিঁধছে মুখ্যমন্ত্রী এবং তার দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।