প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- একেই তো অনুব্রত মণ্ডলের কুকীর্তিতে জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস। কোনোভাবেই সেই অস্বস্তি ঢাকা দেওয়া যাচ্ছে না। আর তার মধ্যেই এবার আর এক তৃণমূল বিধায়ক যে কান্ড ঘটিয়ে বসলেন, তাতে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে গোটা তৃণমূল পরিবারের। এরপরেও কি করে তৃণমূল মানুষের সামনে মুখ দেখাবে? কি করে তারা বড় বড় কথা বলবে? আর কেনই বা তৃণমূলের দলদাস পুলিশ এইভাবে চুপচাপ থাকবে! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। কিন্তু কি এমন হয়েছে, যার জন্য এমন কথা বলা হচ্ছে! অনুব্রত মণ্ডলের পর আবার তৃণমূলের কোন বিধায়ক কি কান্ড করে বসলেন?

জানা গিয়েছে, বিগত ২০১৬ সালে কালনার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তৃণমূলেরই কর্মী ঋষিকেশ দাসের ছেলে খুন হয়েছিলেন। আর সেই সময়ে বর্তমান তৃণমূলের কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের ছেলে কুনাল বাগের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। আর সেই ঘটনার বেশ এখনও কাটেনি। সম্প্রতি সেই তৃণমূল কর্মী ঋষিকেশ দাসকে ব্যাপক মারধর করেন কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ। তার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কারণে যাতে সেই তৃণমূল কর্মী অবিলম্বে সেই অভিযোগ তুলে নেন, তার জন্য তাকে প্রবল মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ না তুললে তৃণমূল কর্মী ঋষিকেশ দাসকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার পর্যন্ত হুমকি দেন তৃণমূল বিধায়ক। এখানেই ঘটনা থামেনি। এরপর ঘটে গিয়েছে আরও ভয়ংকর ঘটনা।

তৃণমূল বিধায়ক এবং তার লোকজন মিলে ঋষিকেশ বাবুকে মারধর করার পর তিনি অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতেই চায়নি এই রাজ্যের পুলিশ। যেমনটা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলেও, তাকে গ্রেফতার করার সাহস দেখাতে পারছে না পুলিশ, ঠিক তেমনই এক্ষেত্রেও তৃণমূলের বিধায়ক হুমকি দেওয়া মারধর করার পরেও পুলিশ শুধুমাত্র দলদাসের জন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে পারল না বলেই কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। যদিও বা পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে যোগাযোগ করার পর সেখান থেকে অভিযোগ নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। বর্তমানে তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে করা ঋষিকেশ দাসের সেই অভিযোগ গ্রহণ করেছে পুলিশ।

আর এই ঘটনার পরেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন যে, প্রথম কথা, তৃণমূল বিধায়ক এইভাবে একজন তৃণমূল কর্মীকে মারবেন কেন? তার এত বড় সাহস কি করে হলো যে, একজন তৃণমূল কর্মীকে মামলা তোলার জন্য শুধুমাত্র তার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলে তিনি আইন হাতে তুলে নেবেন! বিন্দুমাত্র লজ্জা কি এই সমস্ত তৃণমূলের বিধায়কদের নেই? তারা কি এখন ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছেন? আর দ্বিতীয় কথা, তৃণমূল বিধায়ক একটা ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি নিরীহ তৃণমূল কর্মীকে মেরেছেন। তারপরে সেই তৃণমূল কর্মী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে এলেও, কেন বিধায়কের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ নেবে না পুলিশ?

শুধুমাত্র তৃণমূলের বিধায়ক বলেই পুলিশের এতটুকু মেরুদন্ড নেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার? মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে, তারপরে সেখান থেকে নির্দেশের ব্যবস্থা নেবে পুলিশ? তাহলে এই রাজ্যে পুলিশের তো কোনো মূল্য নেই। শুধু তাই নয়, অনুব্রত মণ্ডলের ঘটনা নিয়ে যখন ব্যাপকভাবে ফেসে রয়েছে তৃণমূল, তখন কালনার বিধায়কের এই কীর্তি সামনে আসার পর ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রীতিমত অস্বস্তিতে জেরবার হচ্ছে ঘাসফুল শিবির বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।