প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ওপরে ওপরে বিজেপি দেখানোর চেষ্টা করে যে, তাদের প্রচুর কর্মী রয়েছে। সংগঠনে এত বেশি কর্মী রয়েছে যে, আগামী ২৬ এ তারা হইহই করে জিতে যাবে। কিন্তু বাস্তব কি সেটাই? নাকি নীচুতলা থেকে যে তথ্য ওপরতলায় পাঠানো হচ্ছে, তার মধ্যে অনেকাংশেই জল মেশানো রয়েছে? প্রথমে এই প্রশ্নটা দলীয় বৈঠকে তুলে দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জেলার সংগঠন ঠিকঠাক থাকলেও, তার নিচুস্তরের যে সমস্ত সংগঠন রয়েছে, সেখান থেকে যে সমস্ত তথ্য আসছে, তার সঙ্গে বাস্তবের মিল কতটা রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন তিনি। আর এবার শুভেন্দু অধিকারীর সেই বক্তব্যকে মান্যতা দিয়েই একেবারে গ্রাসরুটে নামতে চলেছে কেন্দ্রীয় বিজেপি।
বিশেষ সূত্র মারফত পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে যে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক যিনি রয়েছেন, সেই মঙ্গল পান্ডে এবার একেবারে মন্ডল স্তরে এগিয়ে দলের সঠিক খবর নেওয়ার জন্য বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওপরে ওপরে বিজেপির সংগঠন অত্যন্ত শক্তিশালী রয়েছে বলে নীচুতলা থেকে খবর আসলেও বাস্তব কিন্তু অতটা পরিষ্কার নয়, এটা বুঝতে পারছে বিজেপির এই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর সেই কারণে শুভেন্দু অধিকারী যে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, সেই একই সংশয় তৈরি হয়েছে মঙ্গল পান্ডে, সুনীল বনসলদের মধ্যে। ইতিমধ্যেই ৪ জুন থেকে বিভিন্ন জেলায় গিয়ে মন্ডলের সংগঠন কতটা শক্তিশালী রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।
এক্ষেত্রে বিজেপি তিনটি স্তরে নীচুতলায় সংগঠন কেমন রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রথমে তারা জেলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। পরবর্তীতে মন্ডল স্তরে গিয়ে সংগঠনের হাল হকিকত দেখবেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতারা এবং তারপর শক্তি কেন্দ্র এবং বুথের সংগঠনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার টার্গেট নিয়েছেন তারা। তবে ওপর তলায় যে তথ্য পাঠানো হচ্ছে, সেই তথ্যের সঙ্গে যদি এই সংগঠনের হাল-হকিকত খোঁজ নিতে গিয়ে কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে, তাহলে প্রথমেই সেই ঘাটতি মেটানোর ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হবে। আর সবশেষে কি করে আরও সংগঠন বৃদ্ধি করা যায়, আরও শক্তি বাড়ানো যায়, তার ব্যাপারে হোমটাস্ক দেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রাজ্যে এবার হিন্দু ভোটের ওপর সবথেকে বেশি জোর দিচ্ছে বিজেপি। রাজ্যে ৮০ হাজার বুথের মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার বুথের কাছাকাছি জায়গায় মুসলিম ভোটারের আধিক্য বেশি রয়েছে। তাই সেখানে বুথ কমিটি গঠন করলেও, যে ভোট তাদের পক্ষে আসবে না, তা খুব ভালোভাবেই জানে গেরুয়া শিবির। তাই সেই জায়গায় পরিশ্রম দেওয়ার বদলে যেখানে পরিশ্রম দিলে বেশি কাজ হবে, সেই বাকি বুথগুলিতে সংগঠনকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে কোনোরকম ফাঁকি মানতে নারাজ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর এই খবর সামনে আসার পরেই পর্যবেক্ষকরা বলছেন যে, প্রথম সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সাংগঠনিক ব্যক্তি হয়ত একেই বলে। তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, নীচুতলায় কিছুটা হলেও জল মেশানো রয়েছে। তাই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই ঘাটতি পূরণ করতে এবার লক্ষ্য নিয়ে গেরুয়া শিবির পথে নামার পরিকল্পনা করেছে। আর তা যদি সম্পূর্ণ হয়, তাহলে একদিকে সাংগঠনিক কাজকর্ম এবং অন্যদিকে তৃনমূলের বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই, এই দুই বিষয়কে কাজে লাগিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর ফর্মুলায় রাজ্যে পরিবর্তন আসতে বাধ্য বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।