প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- আরজিকরের চিকিৎসক তরুণীকে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার পর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য। যেভাবে সেখানকার তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে আড়াল করার চেষ্টা হয়েছিল, তা নিয়েও অনেকে শাসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে রাজপথে নেমেছিলেন। পরবর্তীতে সেই আরজিকর মেডিকেলে দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সেই সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে শাসকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই সন্দীপ ঘোষ এবং তার দুর্নীতি কতটা বড় আকার নিয়েছে, সেই সম্পর্কে এতদিন তথ্য না এলেও, এবার যে তথ্য সামনে এলো এবং যেভাবে তা আদালতে জমা করলো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, তাতে অনেকেরই রাতের ঘুম উড়ে যাবে বলেই মনে করছেন একাংশ।

সূত্রের খবর, এতদিন সিবিআই এই আরজিকর মেডিকেলের ঘটনায় জড়িত থাকা সেখানকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রমাণ জোগাড় করেছে। এক্ষেত্রে একাধিক চিকিৎসকের পাশাপাশি নন মেডিকেল অফিসারদের কাছ থেকেও বয়ান সংগ্রহ করেছে তারা। মোটের ওপর ১৬ জন সাক্ষীর বয়ান নিয়ে এবার তা আদালতের কাছে উপস্থাপিত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থার ঘনিষ্ঠ বৃত্তের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, যারা এই বয়ান দিয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই সন্দীপ ঘোষের দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দুর্নীতি থেকে শুরু করে কাছের লোককে কাজ দেওয়ার বিনিময়ে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে।

স্বাভাবিক ভাবেই এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই এখন সিবিআই সন্দীপ ঘোষকে আরও বেশি করে কাবু করার জন্য আদালতে সেই তথ্য জমা দিয়ে তার বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ নিতে চাইছে। তবে কি সন্দীপ ঘোষের এই দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হওয়ার পর আরও বড় কেউ বিপদে পড়তে চলেছেন? কারণ সন্দীপ ঘোষ এই দুর্নীতি একা নিজের সাহসে করতেন, এমনটা কেউ মানতে নারাজ। তাহলে কি তার পেছনে আরও বড় কোনো মাথা রয়েছে? এবার কি তাদের ধরার কাজ শুরু হবে?

বিরোধীদের দাবি, সন্দীপ ঘোষকে কে আড়াল করেছেন, তা প্রত্যেকেই জানেন। আরজিকর মেডিকেলের মত স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কিভাবে দুর্নীতি হয়েছে, তা সরকারের ওপর মহল জানে না, এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে প্রথম থেকে অভিযোগ ওঠার পর তাকে যেভাবে অন্য এক জায়গায় বদলি করা হয়েছিল, তার ফলে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, তিনি এই শাসকদলের একদম ওপর মহল পর্যন্ত অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বৃত্তে রয়েছেন। তাই তিনি যখন এত বড় দুর্নীতি করেছেন, তখন সেই দুর্নীতি নিয়ে আদালতে রিপোর্ট যেমন জমা পড়েছে, ঠিক তেমনই সেই রিপোর্টের মধ্যে দিয়েই এবার যারা এই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, তাদের জন্য বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আর তার আমলেই যেহেতু এত বড় দুর্নীতি হয়েছে, তাই আদালতে এই রিপোর্ট সন্দীপ ঘোষের দুর্নীতি নিয়ে ১৬ জন সাক্ষীর বয়ানকে হাতিয়ার করে সিবিআইয়ের এই রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কপালে হাত পড়ে যাওয়ার জোগাড় হবে। দিনের শেষে অন্তত তেমনটাই বলছেন বিরোধীরা।