প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে যারা তৃণমূল করেন, তারা এমন একটা ভাব দেখান, যেন রাজ্যটা তাদের সম্পত্তি। আইনকে হাতে তুলে নিয়ে যারা বিরোধী দল করেন, যারা প্রতিবাদী মানুষ, তাদের কন্ঠনোধ করতে হুমকি, হুঁশিয়ারি দেওয়া যেন তৃণমূল নেতাদের কাছে জলভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি বয়সে অনেক প্রবীণ হওয়ার পরেও অনেক মানুষকে কন্যা সম তৃণমূলের নেত্রীর কাছে এই রাজ্যের বুকে হেনস্থা পর্যন্ত হতে হয়েছে। এইরকমই ঘটনা ঘটেছে খড়্গপুরে। আর সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই যখন বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে, তখনই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে গিয়ে এবার শেষ পর্যন্ত দলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে কড়া সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? কি ঘটনা ঘটেছে?
বলা বাহুল্য, গতকালই একটি খবর সামনে আসে। যেখানে দেখা যায় যে, খড়্গপুরে বামেদের এক প্রবীণ নেতা যিনি এলাকায় ভীম দা নামে পরিচিত, তিনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। আর সেই সময় তৃণমূলের নেত্রী বেবি কোলে এবং তার অনুগামীরা সেই বাম নেতাকে রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর করেন। পরবর্তীতে সেই বৃদ্ধ বাম নেতা প্রাণে বাঁচতে একটি রঙের দোকানে আশ্রয় নেন। ইতীমধ্যেই সেই ছবি এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরে শুধু বিরোধী দল বা সাধারণ মানুষ নন, তৃণমূলের পক্ষ থেকেও অনেকে একজন বয়স্ক মানুষকে এইভাবে কেন হেনস্থা করা হলো? কেন এই রকম কাজ করলেন একজন নেত্রী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। ক্রমেই গোটা পরিস্থিতি তৃণমূলের বিরুদ্ধে যেতে শুরু করে। লাজ-লজ্জা ভুলে, বয়সের জ্ঞানের তোয়াক্কা না করে কন্যা সম একজন নেত্রী একজন বয়স্ক মানুষকে যেভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় জুতোপেটা করলেন এবং মারধর করলেন, তা কি এই সংস্কৃতির বাংলার পরিচয় বহন করে? এই প্রশ্নের মাঝেই এবার সেই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হলো কড়া পদক্ষেপ।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই ধরনের ঘটনার কারণে সেই তৃণমূল নেত্রীকে দলের পক্ষ থেকে শোকজ করা হয়েছে। যদিও বা তৃণমূলের এই শোকজের গুরুত্ব দিচ্ছে না বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, তৃণমূলের শোকজ হচ্ছে, গরুর গাড়ির হেডলাইটের মত। গোটা রাজ্য তো এইভাবে ভয় হুমকিতেই চলছে। যারাই তৃণমূল করবে না, যারাই তৃণমূলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন, তাদেরকেই তৃণমূলের চুনোপুটি নেতা, নেত্রীরা এভাবেই হেনস্থা করবে। বয়সে কত বড় একজন বৃদ্ধ মানুষ, তাকে যেভাবে রাস্তায় মারধর করলেন একজন তৃণমূল নেত্রী, তাতে শুধুমাত্র শোকজ করেই থেমে থাকবে দল! কেন তাকে সাসপেন্ড করে এই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা প্রধান ব্যক্তি অর্থাৎ তৃণমূল দলের প্রধান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের দলের মহিলা নেত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন না? কেন তাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেবেন না? দলর ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করার চেষ্টাই যদি তিনি করবেন, তাহলে শুধু শোকজের মধ্যেই কেন আটকে থাকবেন? কেন রাজধর্ম পালন করে বিরোধী দলের একজন প্রবীন মানুষকে প্রকাশ্য রাস্তায় মারধর করার কারণে নিজের দলের নেত্রীকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা দেখাতে পারবেন না রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।