রাতের অন্ধকারে পুলিশি পাহারায় লুকিয়ে পোড়ানো হচ্ছে করোনা মৃতদেহ! অভিযোগ ঘিরে অর্জুন গড়ে হুলুস্থুল! কলকাতা রাজ্য May 2, 2020 করোনা পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে যাচ্ছে বাংলায়। প্রথম দিকে সারা ভারতবর্ষে যখন করোনা ভয়াবহতা শীর্ষে ছিল, ঠিক তখনই বাংলার পরিস্থিতি দেখে আশা তৈরি হয়েছিল সকলের মনে। সকলেই অনুভব করেছিলেন, হয়ত বাংলা নিজেদের করোনা মুক্ত রাজ্য বলে দ্রুত ঘোষণা করতে সক্ষম হবে। কিন্তু এখন গোটা ভারতবর্ষ যখন সেই করোনা পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করে ধীরে ধীরে সুস্থতার পক্ষে, ঠিক তখনই বাংলার পরিস্থিতি চলে যাচ্ছে আয়ত্তের বাইরে। একদিকে যেমন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, ঠিক তেমনই রাতের অন্ধকারে চুপিসারে করোনায় মৃত রোগীদের সৎকার করা হচ্ছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল ব্যারাকপুরে। জানা গেছে, ব্যারাকপুর পৌরসভার কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গার ধারে রানী রাসমণি শ্মশান ঘাটে বেশ কয়েকদিন ধরেই গভীর রাতে পুলিশ দেহ নিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা। আর রাত্রিবেলা চুপিসারে পিপিই পড়ে দেহ সৎকার করতে আসায় রীতিমত চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। অনেকেরই আশঙ্কা, আসলে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের প্রকৃত তথ্য চাপানোর জন্য রাত্রিবেলাকে বেছে নিয়ে তার সৎকার করা হচ্ছে। এদিন এই প্রসঙ্গে পীযূষ মিশ্র নামে এক বাসিন্দা বলেন, “রাত দেড়টা নাগাদ বাইরের কোনো থানার পুলিশ একটি শববাহী গাড়ি এস্কর্ট করে আনে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন পিপিই পড়া চালক। বাকি সবাই পিপিই পড়া। গাড়ি থেকে সাদা বডি ব্যাগে একটি দেহ নামানো হয়।” অভিযোগ, কেন এই মৃতদেহ আনা হয়েছে, কিভাবে তার মৃত্যু হল, তার ব্যাপারে গাড়িচালককে জানালে তিনি অসংলগ্ন উত্তর দিতে শুরু করেন। যার ফলে সন্দেহ বৃদ্ধি পায় বাসিন্দাদের। তাহলে কি এটা করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর শবদেহ! কিন্তু চুপিসারে রাত্রিবেলায় তা কেন শ্মশানে নিয়ে আসা হল! তাহলে কি বিরোধীদের অভিযোগ সত্যি? সত্যিই কি তাহলে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের শবদেহ চুপিসারে রাত্রিবেলা পুড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন? জানা গেছে, এদিন ব্যারাকপুরের শশান ঘাটে এই মৃতদেহ আসার সাথে সাথেই তার কোনো সদুত্তর না পাওয়ায় তাকে আটকে দিয়েছে বাসিন্দারা। যার পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে শেষ পর্যন্ত সেই মৃতদেহ নিয়ে চলে যেতে হয় প্রশাসনকে। এদিন এই প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর রমেশ সাউ বলেন, “এলাকার কিছু মানুষ বাধা দেওয়ায় দেহ নিয়ে চলে যায় পুলিশ। বাসিন্দারা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পুরপ্রধান আমাকে জানিয়েছিলেন যে, করোনা রোগীর দেহ সৎকার করা হবে। শ্মশানে পুলিশ নিয়ে যাবে। প্রশাসনের নির্দেশেই শ্মশানে সৎকার করা হবে। এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ। তাই আতঙ্ক ছড়িয়েছে।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একই কথা শোনা গেছে ব্যারাকপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাসের গলায়। তবে সাধারণ বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা কি সত্যি! সত্যিই কি তাহলে চুপিসারে রাত্রিবেলা প্রতিনিয়ত এরকম মৃতদেহ সৎকার করা হচ্ছে? এদিন এই প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তপন সাহা বলেন, “সরকারের বিষয়টি জেলা প্রশাসন দেখে। কলকাতা পুলিশ এলাকায় কোভিড পজেটিভ রোগীর মৃত্যু হলে ধর্মভেদে ধাপায় সৎকার করা হচ্ছে। নয়ত বাগমারি কবরস্থানে কবর দেওয়া হচ্ছে। জেলায় এরকম নির্দিষ্ট কোভিড শ্মশান আছে কিনা, আমার জানা নেই।” এদিকে এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। ইতিমধ্যেই তাদের পক্ষ থেকে টুইট করে সরকার এবং প্রশাসন করোনা রোগীর দেহ পোড়ানো চেষ্টায় চুপিসারে কাজ করছে। আর তাই এবার সাধারণ মানুষের বাধার মুখে পড়তে হল তাদের বলে সরব হয়েছে তারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতদিন বিরোধীদের এই দাবিকে সরকারপক্ষ নস্যাৎ করে দিলেও, ব্যারাকপুরের ঘটনায় যেভাবে সাধারণ মানুষ হাতেনাতে স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রশাসনকে ধরলেন, তাতে সত্যিই চিন্তা বাড়ছে সকলের মনে। তাহলে কি সত্যিই চুপিসারে করো নাতে মৃত ব্যক্তিদের দেহ রাত্রিবেলা সৎকার করা হচ্ছে, প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের অন্দরে। তবে গোটা ঘটনায় সরকারপক্ষ যে প্রবল চাপে পড়েছে, তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে সকলের কাছেই। আপনার মতামত জানান -