অ্যানসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ৮ অন্যান্য অপরাজিতা গল্পে-আড্ডায় April 3, 2020 অভ্র ভেবেছিলো আজ সারাটা দিন ছুটি দীপশিখার সাথে কথা বলবে কিন্তু না বিকেলেও অফলাইনে ,কি হলটা কি? কল করবে? আর একটু দেখবে না কথা বললে দেন ভাববে। সন্ধ্যেয় অভ্রর ম্যাসেঞ্জারে একটা ম্যাসেজ এলো। দীপশিখা -একটা কথা ছিল অভ্র অনলাইন ছিল লিখলো – বলো দীপশিখা – দেখো তুমি যদি ইয়ার্কি করো দেন ইটস ওকে ,বাট আমার পক্ষে কোনোভাবেই তোমার সাথে জড়ানো সম্ভব নয়। অভ্র – কারণ ? আমাকে পছন্দ নয়? দীপশিখা – পার্সোনাল প্রব্লেম অভ্র – কি সেটা ক্লিয়ার করে না বললে বুঝবো কি করে? দীপশিখা – দরকার নেই বোঝার অভ্র – আছে, আমার জানা দরকার কেন আমাকে ইগনোর করছো , হতে পারে আমাকে পছন্দ নয়, হতেই পারে , তবে সেটাও আমার জানা দরকার দীপশিখা – তুমি খুব ভালো অভ্র , কিন্তু বিশ্বাস করো আমার পক্ষে সত্যি জড়ানো সম্ভব নয়। অভ্র – অরে ইয়ার, প্লিজ ক্লিয়ার করো। দীপশিখা – তোমরা ব্রাম্ভণ? তোমার প্রোফাইল এ কোনো সারনেম নেই, শুধু অভ্রদীপ, তাই জানতে চাইছি। অভ্র – কি? কেন ? কাস্ট নিয়ে কি হবে। আমি হিন্দু ব্যাস। ব্রাম্ভণ হলেই কি না হলেই কি? দীপশিখা – আছে, আমাদের বাড়িতে এসব মানে। ব্রাম্ভন না হলে বিয়ে দেবে না। অভ্র – সত্যি? এসব আজকাল মানে কেউ? দীপশিখা – মানে আমার বাড়ি থেকে মানে, তাই তো বললাম সম্ভব নয়, প্লিজ বন্ধু ছিলে বন্ধু থাকো। আর তাছাড়া হয়তো খুব বেশিদিন কথাও বলতে পারবো না। অভ্র – খুব বেশিদিন কথাও বলতে পারবে না মানে? দীপশিখা – আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে অভ্র অভ্র – হোয়াট ? তুমি কি ইয়ারকি মারছো আমার সাথে। দীপশিখা – আমি সত্যি বলছি। প্রথমে যখন তুমি কথা বলতে মজা ভেবেই কথা বলতাম , তারপর কেমন যেন অভ্যাস হয়ে গেছে। জড়াচ্ছি তোমার সাথে অভ্র – তাহলে প্রব্লেম কি? দীপশিখা – আমার বাড়ির লোক তোমাকে মানবে না , অভ্র – দূর, বাড়ির লোক না মানলে কি হবে? লোকে বাড়ির অমতে বিয়ে করে না। আমার বাড়ি থেকে মানবে, না মানলে না মানবে, আমি তুমি মানলেই হলো। আর পরে সব মেনে নেবে, সবার ক্ষেত্রেই হয়। দীপশিখা – তুমি বুঝবে না , আমি পারবো না বাড়ি ছেড়ে ,সব সম্পর্ক চুকিয়ে এইভাবে আসতে। অভ্র – আরে বাবা আমাকে কি বিশ্বাস হয় না, অরিত্রদা আমাকে খুব ভালো করে চেনে , তুমি বললে অরিত্রদা ,আমাদের মোহনবাগানের গ্রুপ কে সাক্ষী রেখে বিয়ে করবো। দীপশিখা – অনেক হয়েছে , বাদ দাও প্লিজ। অভ্র – ওকে তোমার কার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে বলো , আমি ভ্যাংচি দিচ্ছি। দীপশিখা – আচ্ছা , কি বলবে? অভ্র – ও একটু লোক দিয়ে ধমকে দেব দীপশিখা- তুমি কি বদলাবে না, সব সময় মজা অভ্র – আমি সিরিয়াস, মজা করছি না দীপশিখা- আচ্ছা শোনো। রাখো পরে কথা হবে। অভ্র – যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে তার নাম বলো, ডিটেলস দাও দীপশিখা – রাখো, আমার কাজ আছে আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - রাত্রে ফের কথা হলো অভ্র – কোথায়? এত কি কাজ করছো ? কিছুক্ষন পর দীপশিখা – ব্যাগ গোছাচ্ছিলাম। অভ্র – কেন? কোথায় যাচ্ছ ? দীপশিখা – বাড়ি, খুব দরকার তাই যেতেই হবে অভ্র – সবাই ভালো আছে তো ? দীপশিখা – হুম অভ্র – তাহলে ? দীপশিখা – জানিনা অভ্র – এই দাড়াও দাড়াও, তোমার বিয়ে টিয়ে নয় তো দীপশিখা – কি? ধরো যদি হয় অভ্র – আমি কিন্তু ঠিক খোঁজ নিয়ে পৌঁছে যাবো। দীপশিখা – আর কিছু? অভ্র – আমি সিরিয়াস, আচ্ছা তুমি আমাকে মিস করবে না ? দীপশিখা – হয়তো হ্যাঁ হয়তো না, জানিনা অভ্র – অরে ইয়ার , হ্যাঁ বলো না, প্লিজ, কালকেই বিয়ে করে নেবো। দীপশিখা – আচ্ছা,কিন্তু তোমার তো বিয়ে হয়ে গেছে। অভ্র – ?? দীপশিখা – তোমার বাড়ির লোক তো তাই ভাবে, অভ্র – ও না তার সঙ্গে নতুন সংযোজন হয়েছে দীপশিখা – কি ? অভ্র – আমি নাকি একটা ছেলেকে ভালোবাসি তাকে বিয়ে করবো আর তাই কান্নাকাটি,বিয়ে করার জন্য চাপ (কোনো মেয়েকে ) এইসব চলছে দীপশিখা -কি? আর কি কি গুন্ আছে তোমার ? অভ্র – অরে আমার বাড়ির লোকজন এমনি , নিজেদের মতো ধারণা করে নেয়। দীপশিখা – হঠাৎ এমন ধারণা হলো কেন? অভ্র – আমাদের কলেজের বন্ধুরা মিলে একটা পিকনিক করেছিলাম সেখানে অভিজিৎ বলে একটা বন্ধু আছে সে আমাকে জড়িয়ে ধরে গালে একটা কিস করেছে সেই পিকচার তা দেখেই এই কান্ড দীপশিখা – আর কি কি করো তুমি, ছিঃ অভ্র – ভগবান , তুমিও বিশ্বাস করছো নাকি ? দীপশিখা – না করার কি আছে ? অভ্র – আমাকে তো দেখেছো অরিত্রদের বাড়িতে আমাকে অমন মনে হয়েছে ? দীপশিখা – না , কিন্তু তুমি সত্যি যেন কেমন একটা। তোমার বাড়ির লোক এইসব কারণেই বিশ্বাস করে না অভ্র – আচ্ছা বাড়ির কথা থাক, তুমি বলো তুমি রাজি আছো কিনা? দীপশিখা – না , আমার বাড়ির লোক তোমাকে মানবে না অভ্র – কদিন পরে ঠিক মানবে , আর তুমি এখানে আমি এখানে বিয়ে করে নিলে কি করবে ? দীপশিখা – তুমি যেন শ্রাবনী আমার কে হয় ? অভ্র – হ্যাঁ তোমার কেউ চেনাজানা দিদি দীপশিখা – আমার নিজের দিদি। জেঠু খুব মানে এইসব, অরিত্রদারা ব্রাম্ভন নয় ,দিদি বাড়ির অমতে অরিত্রদাকে বিয়ে করেছে বলে আমাদের বাড়ি থেকে কোনো সম্পর্ক রাখে নি। আমাকেও প্রতিজ্ঞা করতে হয়েছে বাবা মায়ের দিব্যি দিয়ে যে আমি কারুর সাথে জড়াবো না, দিদি ঝকন চলে যায় আমি দেখেছি বাবা, মাকে কিভাবে অপমান সহ্য করতে হয়েছে,দিনের পর দিন। যেন ইচ্ছা করে বাবা মা দিদিকে চলে যেতে বলেছে। অভ্র – কিন্তু অরিত্রদা তো কিছু বলে নি। দীপশিখা – আমার সাথেও যোগাযোগ ছিল না, একদিন গড়িয়াতে দেখা হয়ে যায় দিদির সাথে , সেই থেকেই আমি কথা বলি , মা জানে শুধু আর কেউ জানে না। সেদিন ওখানে থাকিনি ওই জন্যেই।ছোট বৌদি রোজ সন্ধেবেলায় আমাদের মেসের মালকিনকে কল করে জানতে আমি কোথাও বেড়িয়েছি কিনা? মেসে ছিলাম কিনা? মেসের মালকিন কে জানো? ছোট বৌদির মাসি। সে সব সময় নজরে রাখে। তাই কল করতে মানা করলাম। শনিবার আমার পড়তে যাবার থাকে, আমার মেসের একজন আমার সঙ্গেই পড়তে যায়, সুদিপা ও অনেক হেল্প করে আমাকে। মেসে বলেছিলাম পরে একটু শপিং এজাব, সুদিপার কিছু কেনার আছে, বাইরে খেয়ে এসব। ওর সাথে বেরিয়ে আমি চলে গিয়েছিলাম দিদির বাড়ি আর ও ওর বয়ফ্রেন্ডের সাথে শপিংএ। তারপর আবার ঠিক সময়মতো মেসে। অভ্র – ওই জন্যই তোমাকে বাধ্য মেয়ে বলছিলো শ্রাবণীদি। দীপশিখা – দিদি চাইনা , বাড়ি থেকে যার সাথে বিয়ে দেবে আমি তাকে বিয়ে করি। আমার পিসির মেয়ে অঙ্কিতা, যে দিদির কথা বলেছিলাম তোমাকে, অভ্র – হুম দীপশিখা – ওই দিদি আমাদের খানকার একটা দাদাকে ভালোবাসতো , সেও ব্রাম্ভন নয়, অব্রি থেকে জানতে পেরেই তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেয়। কিন্তু ওর শশুড়বাড়ির লোক খুব খারাপ ছিল, দিদিকে মারধর করতো, টাকা চাইতো খালি ,এখন ডিভোর্স হয়ে গেছে। দিদি বাড়িতে আছে, কিন্তু জেঠুর ধারণা দিদিও মানিয়ে নেয়নি। অভ্র – তোমার জ্যেঠু তো পিস্ একটা, পিসির মেয়ে এখানে কেন? পিসির বাড়িতেও সেম? দীপশিখা – পিসি মারা গেছে ,পিসেমশাই আবার বিয়ে করেছে ,দিদিকে ওর নতুন মা পছন্দ করতো না তাই এখন থেকেই মানুষ হয়েছে। অভ্র – শ্রাবণীদি একেবারে ঠিক বলেছে। তাহলে প্রব্লেম কিসের ? শ্রাবণীদি আমাকে খুব ভালোভাবে চেনে, অরিত্রদা চেনে, ওরা আমাদের সাথে থাকবে ,ভয় কি? না করছো কেন? দীপশিখা – দিদির মতো আমিও যদি কিছু করি তাহলে মা,বাবা সুইসাইড করবে। অভ্র – দীপশিখা ,এসব কিছু হবে না দীপশিখা – তুমি আমার জ্যেঠুকে চেনোনা, মা বাবা জ্যাঠুর মুখের উপর কথা বলতে পারবে না। অভ্র – তোমার বাবা, মা এত ভয় পায় কেন? দীপশিখা – অনেকে ছোটবেলায় আমার দাদু,ঠাকুমা মারা গেছে , জ্যাঠুই বাবা, পিসিদের মানুষ করেছে। তাছাড়া বাবা খুব শান্ত , কোনোদিন জ্যাঠুর মুখের উপরে কথা বলতে শুনিনি। অভ্র – আছে আমি একটা কথা বলি, তাড়াহুড়োর দরকার নেই, কার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে তার ডিটেলস দাও।দেখছি দীপশিখা – তুমি যদি আমাকে ভালোবাসো সত্যি, এইসব কথা কাউকে বলবে না , আর আঁকে বন্ধু ভাববে , শুধু বন্ধু। এসন কথা যদি জানাজানি হয় আমাকে সত্যিই সুইসাইড করতে হবে। অভ্র – তুমি কিপাগল হয়ে গেছো? আমি কাউকে বলবো না, নট ইভেন অরিত্রদা। দীপশিখা – থাঙ্কস , আচ্ছা শোনো আমি বুধবার ব্যাক করবো। রাত্রে কথা বলবো তুমি প্লিজ এর মধ্যে না ফোন, না ফেসবুকে চ্যাট করবে প্লিজ। অভ্র -ওকে দীপশিখা – বাই দীপশিখাও জড়িয়ে পড়ছে অভ্রর সাথে, সেদিন যখন অভ্র ম্যাসেজ করতে দেরি করেছিল খুব কান্না পাচ্ছিলো দীপশিখার। কেননা যতটা না জড়িয়েছে তার থেকে বেশি আঁকড়ে ধরেছে মনের মধ্যেই। সেদিন খবর এসেছিলো বাড়ি থেকে ছেলে বলেছে পছন্দ ,ওখানেই বিয়ে হবে। থাকতে পারেনি কেঁদেছিলো অজানা ভয়ে, দিদিকে ফোন করেছিল বার বার মানা করেছিল দিদি, ভয় পেয়েছিলো দীপশিখা , সেই অন্ধকারে কোথায় যেন আলোর মতো ভেসে উঠেছিল অভ্র। অ্যানসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ৭ অ্যানসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ৯ আপনার মতামত জানান -