এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > অদ্ভুত শক্তি পেতে মমতার ছবির সামনে ২ মিনিট দাঁড়ানোর নিদান বিডিওর! শোরগোল রাজ্যজুড়ে

অদ্ভুত শক্তি পেতে মমতার ছবির সামনে ২ মিনিট দাঁড়ানোর নিদান বিডিওর! শোরগোল রাজ্যজুড়ে


ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে তছনছ হয়ে গিয়েছে উত্তর 24 পরগনার একাধিক ব্লক। নষ্ট হয়েছে জমির ধান থেকে শীতের সবজি। ঋণের টাকায় চাষ করে ঝড়ের ধাক্কায় এখন কুপোকাত চাষিরা। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা সর্বহারা হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। ইতিমধ্যে, বহু সরকারি আধিকারিকরা এলাকায় গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে ইতিমধ্যে ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ক্ষতিপূরণের কথা। এর সাথে দুর্ঘটনাগ্রস্ত অধিবাসীরা যাতে নিজেদের জীবনকে আবার পুনর্নির্মাণ করতে পারেন, তার জন্য সরকারি তরফ থেকে একটি ডিগনিটি কিট দেওয়ার বন্দোবস্ত হয়েছে। আর এই কিট দিতে গিয়ে হাসনাবাদ এলাকার বিডিও এক অদ্ভুত নিদান দিলেন জনগণকে। যা নিয়ে এলাকাবাসী থেকে রাজনৈতিক মহল- শোরগোল পড়েছে সব জায়গায়।

এদিন হাসনাবাদ এর ঘূর্ণিঝড়ে বুলবুল বিধ্বস্ত এলাকা ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়েছিলেন এলাকার বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। সেখানেই বিতরণ মঞ্চে উঠে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আবেগ তাড়িত ভাষণ দিলেন। মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘আপনারা সকালবেলা মুখ্যমন্ত্রীর ছবির সামনে দাঁড়ান। মুখ্যমন্ত্রীর ছবির সামনে 2 মিনিট দাঁড়ালে একটা অদ্ভুত শক্তি পাবেন।’ এ ধরনের কথা শুনে দর্শকাসনে বসে থাকা প্রত্যেকেই অবাক হয়ে যান। একজন শিক্ষিত বিডিও কিভাবে একথা বলেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন সবাই। তিনি প্রশাসনিক স্তরে আছেন নাকি তৃণমূলের হয়ে রাজনৈতিক প্রচারে এসেছেন – উঠে যায় সেই প্রশ্নও!

প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে উত্তর 24 পরগনা হাসনাবাদ এর ছটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে কিট দেবার পরিকল্পনা সম্পন্ন করতে এলাকায় হাজির হন বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় সহ জেলা পরিষদের কর্মদক্ষ ফিরোজ কামাল গাজী ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন ভেবিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যখন ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়, তখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। আর এই বক্তব্যের মাঝেই তিনি আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘সকালবেলা যদি মুখ্যমন্ত্রীর ছবির সামনে দাঁড়ান, একটা অদ্ভুত শক্তি পাবেন। আমি নিজে দুটো ছবির সামনে দাঁড়াই। একটা স্বামী বিবেকানন্দর ছবির সামনে, আর একটা মাননীয়ার ছবির সামনে। এক অদ্ভুত জীবনীশক্তিতে নিজেকে পুনর্জীবিত করি। উনি কর্মবীর। ওনার ছবির সামনে দাঁড়ালে আপনিও কর্মের অনুপ্রেরণা পাবেন।’ এই কথায় অবাক হয়ে যান দর্শকাসনে বসা দর্শক থেকে শুরু করে মঞ্চে থাকা সবাই।

প্রসঙ্গত, বুলবুল বিপর্যস্ত এলাকার মানুষেরা যাতে নতুন করে আবার নিজেদের সংসার পুনর্নির্মাণ করতে পারেন, তার জন্য সরকারের তরফ থেকে একটি ‘ডিগনিটি কিট’ দেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে থাকছে একটা ত্রিপল, দুটো শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, বাচ্চাদের পোশাক, চাদর, শুকনো খাবার, স্টোভ, বাসন সহ দৈনন্দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। এই ডিগনিটি কিটটির ওজন হচ্ছে আড়াই মণ। আর এই কিট দিতে গিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বিরোধী দলের দাবি, একজন বিডিও কিভাবে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে এভাবে ভগবানের আসনে বসিয়ে জনগণের সামনে তা মেনে চলার নিদান দিতে পারেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এ ধরনের অনেক নীতি অনেকেই মেনে চলতে পারেন। কিন্তু সে সম্পর্কে সর্বসমক্ষে বলে তা মেনে চলার কথা বলা, তাও আবার সরকারি পদে থেকে সরকারি কর্মসূচিতে গিয়ে, নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়। তা একজন বিডিওর পক্ষে করায় আরো দৃষ্টিকটু জায়গায় গেছে। আপাতত এ প্রসঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। সমগ্র বিষয়টির ওপর নজর রেখেছে রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!