বাংলায় দুমাস ধরে স্কুল ছুটির পিছনে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ দেখছে বিজেপি টিচার্স সেল কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য May 4, 2019 নির্বাচনের আবহের মধ্যেই ওড়িশা হয়ে বাংলার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। যদিও যতটা ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে মনে করা হচ্ছিল, সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিয়ে বাস্তবে তা হয় নি। কিন্তু, সাবধানতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে এই ঘূর্ণিঝড় বাংলার বুকে আছড়ে পড়ার আগেই রাজ্য সরকারের তরফে রাজ্যের সমস্ত স্কুলে দুমাসের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়। আর এই ঘোষণার মাধ্যমে আসলে রাজ্য সরকারের ‘অন্যরকম’ মানসিকতা প্রকাশ পাচ্ছে বলে দাবি বিজেপি টিচার্স সেলের। বিজেপি টিচার্স সেলের তরফে বিস্ফোরকভাবে দাবি করা হয়েছে, বাংলার শিক্ষাব্যবস্থাকে শিকেয় তুলে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর দুই মাস ধরে ছুটি ঘোষণায় শিক্ষা মহল স্তম্ভিত। অভিভাবক এবং শিক্ষকদের মনে একটাই প্রশ্ন লোকসভা ভোটের সময় এই ছুটি ঘোষণার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের ভোট রাজনীতির শিকার হতে হলো না তো? আমরা, ভারতীয় জনতা পার্টির শিক্ষক সংগঠন বিজেপি শিক্ষক সেল শিক্ষার্থীদের দুই মাস ধরে ছুটি ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই প্রসঙ্গে বিজেপি শিক্ষক সেলের রাজ্য কনভেনার দীপল বিশ্বাস শিক্ষামন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মৌসুমী বায়ু ৮ ই জুন প্রবেশ করে, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু কীভাবে জানলেন যে এই বছর মৌসুমী বায়ু ৩০শে জুন প্রবেশ করবে? তিনি জানান, গরমের জন্য ৩০ শে জুন পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা অযৌক্তিক। বর্তমানে অতিরিক্ত গরমের জন্য আগাম ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন এই যুক্তিও খাটে না। ঘূর্ণিঝড় ফনীর কারণে এমনিতেই তাপমাত্রা অনেক কমে গেছে। স্বাভাবিক নিয়মে গ্রীষ্মকালীন ছুটি পড়ার কথা মে মাসের ১৮ তারিখ থেকে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এরপরেই দীপলবাবুর বিস্ফোরক অভিযোগ, রমজান মাসের শুরুতেই ছুটি ঘোষণা করে লোকসভা ভোটের সময় সংখ্যালঘুদের ভোটকে প্রভাবিত করার জন্য তৃনমলের এই প্রচেষ্টা। আমরা বিজেপি শিক্ষক সেলের পক্ষ থেকে তৃণমূলের এই তোষণ নীতির প্রচেষ্টাকে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংখ্যালঘুদের তোষণ করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ছে। কারণ স্বরূপ দীপলবাবু বলেন, শিক্ষার্থীরা টানা দুই মাস ধরে বিদ্যালয় যাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকলে RTE অ্যাক্ট অনুসারে ছাত্র-ছাত্রীদের যতদিন ক্লাস করা উচিত সেটা সম্ভব হবে না এবং সিলেবাসও অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এরপরেই তাঁর দাবি, এর ফলে অভিভাবকদের মনে সরকারী বিদ্যালয় সম্বন্ধে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। এতে বেসরকারী বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির প্রবণতা বাড়বে। এছাড়াও দুই মাস ধরে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় যাওয়া বন্ধ থাকলে তারা মিড-ডে মিল থেকেও বঞ্চিত থাকবে। ফলে অভাবী ছাত্র-ছাত্রীদের খুবই সমস্যায় পড়তে হবে। আমরা বিজেপি শিক্ষক সেলের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দপ্তরকে আবেদন জানাচ্ছি শিক্ষার্থীদের দুই মাস ধরে যে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে তা যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়। বিজেপি শিক্ষক সেলের প্রাথমিক শাখার রাজ্য কো-ইনচার্জ সব্যসাচী ঘোষ, বুদ্ধদেব মন্ডল এবং শান্তনু মন্ডল জানান, ইতিমধ্যেই প্রকাশিত নির্দেশিকায় এই দুই মাস ছুটির সময় শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে কী করনীয় তা জানতে গেলে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের সম্বন্ধে যে ভাষায় কথা বলেছেন তাতে শিক্ষক সমাজ অপমানিত বোধ করেছেন। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সবমিলিয়ে নির্বাচনের আবহে রাজ্য সরকারের দুই মাসের স্কুল বন্ধের নির্দেশিকার মধ্যে একদিকে যেমন শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছে বিজেপি টিচার্স সেল, অন্যদিকে একইসঙ্গে সংখ্যালঘু তোষণের মত বিস্ফোরক অভিযোগও সামনে আনছেন দীপলবাবুরা। আপনার মতামত জানান -